দিল্লিতে এ ভাবেই আটকে পড়েছিলেন অনেকে। প্রতীকী ছবি। —এএফপি
এক পাশে খেত থেকে সদ্য তুলে আনা বেথুয়া শাক, শিম আর একটি বাঁধাকপি। আর এক দিকে ভাত ফুটছে। এক গাল হেসে ইমামুল শেখের মা মাহেলা বিবি বললেন, ‘‘তিন দিন পরে ছেলেরা খেয়েছে। এ বার আমরাও খাব। শুক্রবার ওরা গ্রামে ফিরলে মাংস-ভাত হবে।’’
মুর্শিদাবাদের নওদার ত্রিমোহিনী গ্রামের ইমামুল-সহ তেরো জন দিল্লির হিংসায় আটকে পড়েছিলেন। তাঁদের এগারো জন ছিলেন জাফরাবাদ সংলগ্ন মৌজাপুর, নুরিনা, গন্ডাচক এলাকায়। ভয়ে ঘর থেকে না বেরোনোয় তিন দিন এক রকম কিছুই খেতে পাননি তাঁরা। কোনওক্রমে কারখানা মালিকের একটি ঘরে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেই খবর গ্রামে পৌঁছতে আঁতকে ওঠেন তাঁদের পরিবারের লোকজন। চিন্তায় এই তিন দিন এক রকম নাওয়া-খাওয়া ভুলে ছিলেন ত্রিমোহিনীর মানুষও। তবে বুধবার রাতেই ওই শ্রমিকদের উদ্ধার করে দিল্লি পুলিশের একটি বিশেষ দল। এ দিন রাতেই জাফরাবাদ থানার পুলিশ নিজেদের গাড়িতে তাঁদের পৌঁছে দেয় পুরনো দিল্লি স্টেশনে। পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যেই তাঁদের তুলে দেওয়া হয় কালকা মেলে। তাঁদের সাহায্য করেছেন বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীও। বৃহস্পতিবার সকাল সাতটায় ট্রেনে চেপেছেন মহম্মদ কালাম, ইমামুল, জব্বার, আওলাদরা। অধীর বলেন, ‘‘দিল্লির হিংসায় আটকে পড়া নওদার যুবকদের উদ্ধার করে কলকাতার ট্রেনে উঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। আতঙ্কিত পরিবারের সকলকে বলব, আপনাদের লোকেরা বাড়ি ফিরছে, চিন্তা নেই।’’
তার পরেই ত্রিমোহিনীতে খুশির হাওয়া। শুরু হয় রান্না। মহম্মদ কালাম ট্রেন থেকে মোবাইলে বলেন, ‘‘কাল বিকেলের মধ্যেই ঘরে ফিরব।’’
কিন্তু ত্রিমোহিনী এখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি, দিল্লি শান্ত হলে ঘরের ছেলেদের ফের সেখানে পাঠাবে কি না!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy