Advertisement
০৭ মে ২০২৪
West Bengal Panchayat Election 2023

বাহিনী নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য তরজা হাই কোর্টে, সমস্যা মিটল না, আবার শুনানি ভোটের পাঁচ দিন আগে

রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পাঠানো মোতায়েন পরিকল্পনায় কেন্দ্র ছাড়পত্র দেওয়ায় ৩১৫ কোম্পানি বাহিনী রাজ্যের জেলায় জেলায় পৌঁছতে আর কোনও বাধা সেই অর্থে নেই।

An image of Calcutta High Court

কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২৩ ০১:২৬
Share: Save:

গত কয়েক দিনের টানাপড়েন শেষে রাজ্যে আরও কেন্দ্রীয় বাহিনী আসার পথ প্রশস্ত হয়েছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পাঠানো মোতায়েন-পরিকল্পনায় কেন্দ্র ছাড়পত্র দেওয়ায় ৩১৫ কোম্পানি বাহিনী রাজ্যের জেলায় জেলায় পৌঁছতে সেই অর্থে আর কোনও বাধা নেই। কিন্তু কিন্তু তারা কোথায় থাকবে, কোথায় তাদের দু’বেলা খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা হবে— সেই সব পরিকল্পনার কথা এখনও জানায়নি কমিশন। এমনকি, কোন বুথে কত বাহিনী রাখা হবে, তা-ও এখনও স্পষ্ট নয়। এই সব প্রশ্ন নিয়ে বুধবার কলকাতা হাই কোর্টে তরজায় জড়াল কেন্দ্র এবং রাজ্য ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন। শুধু তা-ই নয়, জট কাটল না বাকি ৪৮৫ কোম্পানি বাহিনী নিয়েও।

আদালতের নির্দেশে প্রথমে ২২ কোম্পানি এবং পরে ৩১৫ কোম্পানি বাহিনী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে চেয়েছিল কমিশন। এক একটি জেলায় এক কোম্পানি করে মোট ২২ কোম্পানি বাহিনী মোতায়েনে পরিকল্পনাগত কোনও সমস্যা ছিল না। কিন্তু ৩১৫ কোম্পানি বাহিনী কোথায় কত পরিমাণ পাঠাতে হবে, তা চূড়ান্ত না হওয়ার কারণে মন্ত্রকের মঞ্জুরের পরেও বাহিনী পৌঁছচ্ছিল না রাজ্যে। পরে বিএসএফ এবং সিআরপি কর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন কমিশন-কর্তারা। তার পরেই কোন জেলায় কত কোম্পানি বাহিনী যাবে, তা জানানো হয় কমিশনের তরফে। কিন্তু বুধবার উচ্চ আদালতে কেন্দ্র জানাল, মোতায়েন পরিকল্পনায় এইটুকু তথ্য যথেষ্ট নয়। বাহিনী কোথায় গিয়ে থাকবে, কোন বুথে কত জন সংখ্যায় থাকবে— এই সমস্ত সিদ্ধান্তের কথা কিছু জানায়নি কমিশন। এই অভিযোগ শুনে কিছুটা বিরক্তির সুরেই কমিশনকে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম বলেন, ‘‘আপনারা কিছু তো করুন। সময় নষ্ট করবেন না। আমরা তো আর সব কিছুতে নজরদারি করতে পারব না। কেন্দ্রীয় বাহিনী কোথায় যাবে, কী ভাবে যাবে, কোথায় খাবে, কোথায় থাকবে এগুলো তো কমিশনকেই ব্যবস্থা করতে হবে।’’ কমিশনও হাই কোর্টে জানিয়েছে, তাদের সব পরিকল্পনা হয়ে গিয়েছে। রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট ৮ জুলাই। তার ঠিক পাঁচ দিন আগে ৩ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। সেই দিন কমিশনকে আদালতের নির্দেশ কার্যকর করার রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। এখন দেখার, পরের শুনানিতে এই জট কাটে কি না।

প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে বকেয়া কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়েও। ইতিমধ্যেই একাধিক বার কমিশন কেন্দ্রকে বাকি ৪৮৫ কোম্পানি বাহিনী নিয়ে চিঠি পাঠালেও তার এখনও কোনও উত্তর মেলেনি বলেই রাজ্য প্রশাসন সূত্রের দাবি। এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনার সূত্রেই ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটের পরিকল্পনার বিষয়টি উঠে এসেছে। ইতিমধ্যেই আসন্ন পঞ্চায়েতের দফা বাড়ানোর দাবিও তুলেছে বিরোধীদের একাংশ। উচ্চ আদালতে তা নিয়ে আবেদনও করা হয়েছে। আগামী শুক্রবার তার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে। তার মধ্যেই বুধবার পঞ্চায়েত সংক্রান্ত একটি মামলায় হলফনামা দাখিল করতে হাই কোর্টে যান রাজ্য নির্বাচন কমিশনার। বেরোনোর সময় তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, ভোটের দফা বাড়ানো হবে কি না। জবাবে কমিশনার জানিয়েছেন, দফা নিয়ে কোনও কথা হয়নি।

অন্য দিকে, পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে রাজনৈতিক লড়াইয়ের উত্তাপও ক্রমশ বাড়ছে। অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ ঘিরে লাগাতার তরজায় জড়াচ্ছে শাসক এবং বিরোধী শিবির। বুধবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী দাবি করেছেন, পঞ্চায়েতে ভোট লুট করতে নকল ব্যালট পেপার ছাপা হচ্ছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও নকল ব্যালট পেপারের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন। বিরোধীদের এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে শাসক তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণালের বক্তব্য, নিজের ব্যর্থতা ঢাকতেই এই সব অভিযোগ করছেন অধীর। ভোটযুদ্ধের পাশাপাশি হিংসা-হানাহানিও অব্যাহত রাজ্যে। মঙ্গলবার কোচবিহারের দিনহাটায় তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে সংঘর্ষে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তৃণমূল কর্মীদের উপর গুলি চালিয়েছে। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে গেরুয়া শিবির। বুধবার সাংবাদিক সম্মেলন করে এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক দাবি করেছেন, নিহত ‘আন্তর্জাতিক অপরাধী’। তিনি বাংলাদেশের নাগরিক। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে পাল্টা বিঁধেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। নিশীথের পদত্যাগ দাবি করেছেন তিনি। এ নিয়ে বিতর্কের মধ্যে কোচবিহারের শীতলখুচিতেও শাসক-বিরোধী সংঘর্ষ ঘটেছে বুধবার।

বাহিনী জট প্রসঙ্গে কেন্দ্র

কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা নিয়ে বুধবার আদালত অবমাননা মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাই কোর্টে। মামলাটি করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী। হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়। সেখানেই কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে ব্যবস্থাপনার অভাবের কথা আদালতকে জানান কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল (এএসজি) অশোককুমার চক্রবর্তী। তা নিয়েই প্রধান বিচারপতি, কমিশনের আইনজীবী কিশোর দত্ত এবং এএসজির কথোপকথন চলে কিছু ক্ষণ। অশোককুমার আদালতে জানান, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পাঠানো বাহিনীর ব্যবহার নিয়ে কমিশনের কাছে পরিকল্পনার কথা জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা তা জানায়নি। শুধু জেলাভিত্তিক কত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে, তা জানিয়েছে কমিশন। কিন্তু নির্দিষ্ট করে কোথায় কত বাহিনী মোতায়েন করা হবে, কোন বুথে কত বাহিনী ব্যবহার করা হবে, তারা কোথায় গিয়ে থাকবে— এ নিয়ে কমিশন কোনও পরিকল্পনা জানায়নি।

বাহিনী জট প্রসঙ্গে কোর্ট

কেন্দ্রের অভিযোগের প্রেক্ষিতে শুনানিতে কমিশনের বক্তব্য জানতে চান প্রধান বিচারপতি। সেই সঙ্গে তিনি জানান, বাহিনীর ব্যবহার সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত তো কমিশনেরই নেওয়ার কথা। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা সব কিছুতে নজরদারি করতে পারব না। কমিশনকে তো কিছু পদক্ষেপ দ্রুততার সঙ্গে করতে হবে। অথচ কমিশন কী করছে, তা দেখতেই পাচ্ছি না। কিছু তো করুন। সময় নষ্ট করবেন না।’’ সামান্য থেমে প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দেন, বাহিনী কোথায় যাবে, কী ভাবে যাবে, কোথায় খাবে, কোথায় থাকবে— এগুলির ব্যবস্থা করতে হবে। পরিকল্পনার কথা জানানো উচিত ছিল কমিশনের। তিনি বলেন, ‘‘সেনার নোডাল অফিসারের সঙ্গে একটি বৈঠক করলেই তো মিটে যায়। জেলা প্রশাসনকেও বিষয়টি নিয়ে বলা উচিত।’’ প্রধান বিচারপতির মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কমিশনের আইনজীবী পাল্টা জানান, বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনকে বলা আছে। জবাবে প্রধান বিচারপতিও বলেন, ‘‘শুধু বলছেন, সব কিছু করে ফেলেছেন। কিন্তু কী করেছেন, তা বলছেন না। পর পর কী কী করেছেন তা বলছেন না কেন? আপনারা যাই করুন, কমিশনের উপর যেন সাধারণ মানুষের আস্থা থাকে, সেটা মাথায় রাখবেন। সুষ্ঠু এবং অবাধ ভোটের পক্ষে কমিশনের ভূমিকা যেন ভোটারদের আস্থা অর্জন করে।’’ রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কেও প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘আপনারা কমিশনকে ২০০ শতাংশ সাহায্য করবেন। না হলে সমস্যা তৈরি হবে।’’

অধীরের বিস্ফোরক অভিযোগ

বুধবার বহরমপুরে সাংবাদিক বৈঠকে অধীর দাবি করেছেন, পুলিশের সাহায্যে তৃণমূল নকল ব্যালট পেপার ছাপছে। যা মানুষের রায়কে বদলে দিতে ব্যবহার করা হবে। তৃণমূল ভয়ঙ্কর কারচুপির খেলা খেলছে। কংগ্রেস সাংসদের কথায়, ‘‘নকল ব্যালট পেপার ছাপা হচ্ছে। সেই ব্যালট বুথ থেকে স্ট্রংরুমে যাওয়ার পথে পরিবর্তিত হবে। ব্যালট পেপার যাঁরা ছাপেন, যাঁদের কাছে কম্পিউটারের চাবি থাকে, সেই চাবি পুলিশ চাইছে। সেই চাবি দিতে অস্বীকার করায় পুরুলিয়ায় তিন অফিসারকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মানুষের ভোটকে পরিবর্তন করে, নিজেদের জয় নিশ্চিত করতে চাইছে শাসক দল।’’ সুকান্তও দাবি করেছেন, বিভিন্ন এলাকা থেকে নকল ব্যালট পেপার ছাপার অভিযোগ আসছে। একই অভিযোগ করেছেন বিজেপির সৌমিত্র খাঁ-ও। পাল্টা কুণাল বলেন, ‘‘জেলাভিত্তিক কংগ্রেসের প্রার্থীর সংখ্যাটা দেখেছেন? লোক নেই, প্রার্থী দিতে পারেনি। গোহারা হারবে অর্ধেক জায়গায়। বিধানসভা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী, কেন্দ্রের নির্বাচন কমিশন, সিপিএমের সঙ্গে জোট, আইএসএফের সঙ্গে জোট, আট দফায় নির্বাচন, এত সব করেও তো শূন্য পেয়েছিলেন। তার পর এই সব কথা বলতে লজ্জা করছে না! অধীর ব্যর্থতম প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে আগাম অজুহাত খুঁজছেন উনি।’’

শীতলখুচিতে সংঘর্ষ

মঙ্গলের পর বুধবারও উত্তেজনা ছড়াল কোচবিহারে। মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগেই গুলি চলেছিল দিনহাটায়। এ বার ঘটনাস্থল শীতলখুচি। গত বিধানসভা ভোটে এই শীতলখুচিতেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে চার গ্রামবাসীর মৃত্যুর ঘটনা সাড়া রাজ্যে তোলপাড় ফেলেছিল। পঞ্চায়েত ভোটের মুখেও সেখানে গুলি চলার অভিযোগ উঠল। যদিও পুলিশের দাবি, গুলি চলেনি। স্থানীয় সূত্রে খবর, বুধবার বিকেলে শীতলখুচির ডাকঘরা বাজারে তৃণমূলের দলীয় পতাকা ছিঁড়ে ফেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ বাধে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে। বিজেপির অভিযোগ, তাদের মণ্ডল সভাপতি মানস দাসকে মারধর করে নাক ফাটিয়ে দিয়েছে তৃণমূল। অন্য দিকে, তৃণমূলের দাবি, বিজেপির বাইক বাহিনী তাদের পার্টি অফিসে চড়াও হয়। দু’পক্ষেরই দাবি, তাদের পার্টি অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে। আর এই নিয়েই দু’পক্ষের অশান্তিকে কেন্দ্র করে ডাকঘরা বাজার চত্বরে দু’রাউন্ড গুলি চলে বলে অভিযোগ। পরে দুষ্কৃতীরা আগুনও ধরিয়ে দেন একটি বাইকে। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করলেও তারা জানিয়েছে, এলাকায় কোনও গুলি চলেনি। যদিও দু’দলের মধ্যে অশান্তির ঘটনা নিয়ে উত্তেজনা পুরোমাত্রায় বজায় রয়েছে শীতলখুচিতে।

দিনহাটাকাণ্ড নিয়ে নিশীথ

মঙ্গলবার ভোর ৫টা নাগাদ কোচবিহারেরই গীতালদহের জারি ধরলায় গুলি চলার ঘটনা ঘটেছে। এক জনের মৃত্যুও হয় সেই ঘটনায়। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন আরও ৪ জন। পুলিশ মঙ্গলবারই জানিয়েছিল, নিহতের নাম বাবু হক। তার প্রেক্ষিতে বুধবার নিশীথের দাবি, নিহতের ভারত এবং বাংলাদেশ দুই দেশেরই নাগরিকত্ব রয়েছে। তাঁর ভারতের আধার কার্ড এবং বাংলাদেশের ভোটার কার্ডের ছবি দেখিয়ে নিশীথ বলেন, ‘‘ভারতের আধার কার্ডে ওর নাম রয়েছে বাবু রহমান। আর বাংলাদেশের ভোটার কার্ডে রয়েছে আব্দুর রহমান।’’ নিশীথের দাবি, নিহত ‘আন্তর্জাতিক অপরাধী’। তাঁর দেওয়া একটি জবানবন্দির ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তিকে বাংলাদেশের বিজিবি-ও গ্রেফতার করেছিল। শুধু তা-ই নয়, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশও ওকে গ্রেফতার করে। ওঁকে তৃণমূল নিজেদের কর্মী বলে দাবি করছে। আর বিজেপির ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে।’’ এই ঘটনার প্রেক্ষিতে এনআরসি-র প্রসঙ্গ টেনে তার পক্ষেও সওয়াল করেছেন নিশীথ। পাশাপাশিই, পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ‘‘পুলিশ প্রথমে বয়ান দিয়েছিল, বাংলাদেশ থেকে দুষ্কৃতীরা এসে এই হামলা চালিয়েছে। আবার পরে বলা হচ্ছে, বিজেপি হামলা চালিয়েছে।’’ পাল্টা উদয়ন বলেন, ‘‘আমাদের দুর্ভাগ্য যে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী পদে এই রকম মূর্খ এক জন বসেছেন। যদি আন্তর্জাতিক দুষ্কৃতীই হয়ে থাকে এবং সে যদি ভারতে বাস করে, তা হলে তাকে ধরবার দায়িত্ব কার? তাকে ধরার কথা তো কেন্দ্রীয় সরকারের। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের। নিজে ওই মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হয়ে এ কথা কোন মুখে বলছেন! তা-ও আবার নিজের জেলায়। ওঁর (নিশীথের) তো এখনই পদত্যাগ করা উচিত।’’ উল্লেখ্য, মঙ্গলবারই কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সানি রাজ বলেছিলেন, ‘‘মঙ্গলবার সকালে গীতালদহের জারি ধরলা এলাকায় স্থানীয় দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে গুলি চালানোর খবর আসে। প্রাথমিক খবর অনুযায়ী, ৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। যার মধ্যে বাবু হক নামে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। এর পরেই পুলিশ ওই এলাকায় পৌঁছে তদন্ত শুরু করে। এই জায়গাটি আন্তর্জাতিক সীমান্তের খুব কাছে। যেখানে নৌকাই যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। স্থানীয় নেতারাও বাংলাদেশের অপরাধীদের নিয়ে এসে এই কাণ্ড ঘটাতে পারেন। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE