মারা গেলেন প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ কৃষ্ণা বসু। ফাইল চিত্র।
শিক্ষাবিদ ও রাজনীতিবিদ কৃষ্ণা বসু (৮৯) প্রয়াত। শনিবার সকালে বাইপাস সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। বসু পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছু দিন ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছিলেন কৃষ্ণাদেবী। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি অসুস্থতা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন ওই হাসপাতালে। এ দিন সকাল ১০টা ২০ নাগাদ তিনি সেখানেই মারা যান। সন্ধ্যায় কেওড়াতলা মহাশ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। গান স্যালুটে বিদায় জানানো হল কৃষ্ণা বসুকে ।
বসু পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছু দিন ধরে অসুস্থ থাকলেও কৃষ্ণাদেবী শয্যাশায়ী ছিলেন না তিনি। সম্প্রতি হৃদযন্ত্রের সমস্যার জন্য তাঁকে বাইপাস সংলগ্ন ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। শুক্রবার রাতে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। সকালে হাসপাতালে মা-কে দেখতে গিয়েছিলেন তাঁর দুই ছেলে সুমন্ত্র ও সুগত বসু। তাঁরা হাসপাতালে থাকাকালীনই মারা যান কৃষ্ণাদেবী। তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ দিন দুপুর একটা নাগাদ হাসপাতাল থেকে তাঁর দেহ এলগিন রোডের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। শ্রদ্ধাজ্ঞাপণের জন্য তাঁর দেহ বিকেল তিনটে থেকে রাত সাড়ে ৭টা পর্যন্ত রাখা থাকবে এলগিন রোডের নেতাজি ভবনে। এ দিন বিকেলে কৃষ্ণাদেবীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে যান রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। সেখানে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সিপিএম-এর তরফে কৃ্ষ্ণা বসুর মরদেহে মাল্যদান করেন শ্রীদীপ ভট্টাচার্য, সুখেন্দু পানিগ্রাহী এবং কৌস্তব চট্টোপাধ্যায়।
১৯৩০-এর ২৬ ডিসেম্বর পূর্ববঙ্গে জন্ম হয় তাঁর। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের পর শুরু করেন শিক্ষকতা। প্রায় ৪০ বছর সিটি কলেজে অধ্যাপনা করেছেন তিনি। ওই কলেজে অধ্যক্ষও ছিলেন কৃষ্ণা। যাদবপুর কেন্দ্র থেকে লড়ে টানা তিন বার লোকসভার সাংসদ হয়েছিলেন কৃষ্ণা বসু। ১৯৯৬-এ কংগ্রেসের হয়ে লড়ে প্রথম বারের জন্য সাংসদ হন। ১৯৯৮ ও ১৯৯৯-এ তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ হন তিনি। বিদেশ মন্ত্রকের সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যানও হয়েছিলেন তিনি। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ভাইপো চিকিৎসক শিশির বসুর স্ত্রী ছিলেন কৃষ্ণা। তাঁর পুত্র সুগত বসুও ২০১৪-য় তৃণমূলের টিকিটে যাদবপুর থেকে জিতে লোকসভায় গিয়েছিলেন। রাজনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত কৃষ্ণা বসু শিক্ষাবিদও ছিলেন। কৃষ্ণা বসু ‘অ্যান আউটসাইডার ইন পলিটিক্স’, ‘এমিলি অ্যান্ড সুভাষ’, ‘লস্ট অ্যাড্রেসেস’, ‘চরণরেখা তব’, ‘প্রসঙ্গ সুভাষচন্দ্র’, ‘ইতিহাসের সন্ধানে’ ইত্যাদি গ্রন্থের লেখিকা ছিলেন।
আরও পড়ুন: সিএএ-লড়াইয়ে এককাট্টা যাদবপুর
কৃষ্ণা বসুর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটারে লিখেছেন, ‘‘প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ কৃষ্ণা বসুর মৃত্যুর খবরে আমি শোকাহত ও মর্মাহত। নেতাজির পরিবারের সদস্য হয়ে তিনি ছিলেন, শ্রদ্ধেয় সমাজ সংস্কারক, প্রখ্যাত কবি ও সাহসী শিক্ষাবিদ। ভারতীয় সমাজ ও বাংলার সংস্কৃতিতে তাঁর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’’
আরও পড়ুন: বিশ্বভারতী সোনার ডিম দেয়, আমরা সেই হাঁসের যত্ন নিচ্ছি না: উপাচার্য
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy