Advertisement
E-Paper

বিধানসভায় তৃণমূল-বিজেপি বিধায়কদের ধর্না পাল্টা ধর্না, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঢুকল পুলিশবাহিনী

বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে কলকাতা পুলিশের বিধানসভা নজরদারি করার ঘটনা নজিরবিহীন। কারণ, স্পিকারের অনুমতি ছাড়া তারা কোনও ভাবেই বিধানসভায় প্রবেশ করতে পারে না।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২৩ ২১:৩০
বিধানসভায় তৃণমূল-বিজেপির ধর্না কর্মসূচি নিয়ে সক্রিয় কলকাতা পুলিশ।

বিধানসভায় তৃণমূল-বিজেপির ধর্না কর্মসূচি নিয়ে সক্রিয় কলকাতা পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।

পরপর দু’দিন বিধানসভায় ধর্না পাল্টা ধর্না নিয়ে জোর টক্কর হয়েছে তৃণমূল বিজেপির। উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে যাতে আইন শৃঙ্খলাজনিত কোনও সমস্যা না দেখা দেয়, সেই কারণে প্রথমবার বিধানসভায় প্রবেশ করল পুলিশবাহিনী। বুধবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তৃণমূল বিধায়করা কালো জামাকাপড় পড়ে ধর্না দেওয়া শুরু করেন। পরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিধানসভার গাড়ি বারান্দায় ধর্না শুরু করেন। যুযুধান দুই পরিষদীয় দলকে ঠকাতে এবং মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করে বিধানসভায় ছিল পর্যাপ্ত পুলিশবাহিনী।

কিন্তু বৃহস্পতিবার বিধানসভার অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী না থাকলেও, দুপুর তিনটে থেকে শুরু হয় তৃণমূল বিধায়কদের ধর্না। তাঁরা স্লোগান দিতে থাকেন, ‘ওয়ান, টু, থ্রি, ফোর বিজেপির সবাই চোর’। ‘বাপ চোর। বেটা চোর’। বিধানসভার অধিবেশন শেষে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী নিজের দফতরের কাজ সেরে সেই সময় বিধানসভা থেকে বেরোচ্ছিলেন। তখনই ধর্নাস্থল থেকে স্লোগান ওঠে ‘বাপ চোর বেটা চোর, বিজেপির সবাই চোর’। এই স্লোগান শুনেই দাঁড়িয়ে যান বিরোধী দলনেতা। তিনি তখন বিজেপি বিধায়কদেরও পাল্টা ধর্নায় বসার নির্দেশ দেন। তার পরই তাঁরা থালা, হাতা নিয়ে শুভেন্দুর নেতৃত্বে পাল্টা বিক্ষোভে বসে পড়েন বিজেপি বিধায়কেরা। বিধানসভার গা়ড়িবারান্দায় থালা, কাঁসর বাজিয়ে পাল্টা স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা।

এরপরেই বিধানসভায় যাতে কোনও রকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি না ঘটে সে জন্য আসেন ডিসি সেন্ট্রাল দীনেশ কুমার, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (এস্টাব্লিশমেন্ট) মীরাজ খালিদ এবং ডিসি (এনফোর্সমেন্ট) রাহুল দে এবং পুলিশের একটি দল।আনা হয় সেট্রাল ডিভিশনের বিশেষ জওয়ান ও মহিলাদের। বিধানসভার সচিবালয় সূত্রে খবর, স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ পেয়েই কলকাতা পুলিশের বাহিনী বিধানসভায় আসে। আসার সঙ্গে সঙ্গে তৃণমূল ও বিজেপির বিধায়কদের মধ্যে একটি মানব প্রাচীরও তৈরি করা হয়। যদিও শেষ পর্যন্ত কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক জানান, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতেই তাঁরা বিধানসভায় এসেছিলেন।

বুধবার বিধানসভা চত্বরে দাঁড়িয়ে জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা করেছেন বিজেপি বিধায়কেরা। এই মর্মে ১২ জন বিজেপি বিধায়কদের বিরুদ্ধে স্পিকারের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন বিধানসভার পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, তৃণমূলের উপমুখ্যসচেতক তাপস রায়। সেই বিষয়ে কথা বলেই ওইদিন ডিসি সেন্ট্রাল বিধানসভায় এসে কথা বলে গিয়েছিলেন স্পিকারের সঙ্গে। আবার বৃহস্পতিবার তৃণমূল পরিষদীয় দল আবারও বিজেপি বিধায়কদের বিরুদ্ধে জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননার অভিযোগ করেছেন। তাই সন্ধ্যায় আবারও ডিসি সেন্ট্রালের সঙ্গে নিজের ঘরে বৈঠক করেছেন স্পিকার।

তবে বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে কলকাতা পুলিশ বিধানসভার নজরদারি করার ঘটনা নজিরবিহীন। কারণ, স্পিকারের অনুমতি ছাড়া তাঁরা কোনওভাবেই বিধানসভায় প্রবেশ করতে পারেন না। তবে মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় উপস্থিত থাকলে কলকাতা পুলিশের তৎপরতা থাকে বিধানসভাতে। বিধানসভার এক আধিকারিকের কথায়, আমি বাম জমানা থেকে পরিবর্তনের জমানায় কাজ করেছি। কিন্তু কখনও বিধানসভায় পুলিশ এসে কাজ করে গিয়েছে দেখিনি। তবে বৃহস্পতিবার যেভাবে স্লোগান প্লাটা স্লোগানে উত্তপ্ত হয়েছিল বিধানসভা তাতে পুলিশের উপস্থিতি জরুরী ছিল।

Kolkata Police TMC BJP MLAs
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy