Advertisement
E-Paper

প্রয়াত প্রাক্তন বাম সাংসদ অনিল বসু

অনিলবাবুর মৃত্যুসংবাদ পেয়ে হাসপাতালে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলেন সিপিএম নেতা শ্যামল চক্রবর্তী, শমীক লাহিড়ী, সুধাংশু শীল প্রমূখ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৮ ১৭:১১
চলে গেলেন অনিল বসু।— নিজস্ব চিত্র।

চলে গেলেন অনিল বসু।— নিজস্ব চিত্র।

প্রয়াত হলেন আরামবাগের প্রাক্তন সাংসদ তথা সিপিএমের বহিষ্কৃত নেতা অনিল বসু। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭২। কিছু দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন অনিলবাবু। তার উপরে গত কয়েক দিনে তিন বার হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে মঙ্গলবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।এ দিন অনিলবাবুর মৃত্যুসংবাদ পেয়ে হাসপাতালে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলেন সিপিএম নেতা শ্যামল চক্রবর্তী, শমীক লাহিড়ী, সুধাংশু শীল প্রমূখ।

১৯৮৪ সালে ইন্দিরা গাঁধীর মৃত্যুর পর সহানুভূতির হাওয়ায় পশ্চিমবঙ্গে সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মতো নেতাও যখন পরাস্ত হয়েছিলেন, সে বারই প্রথম সিপিএমের প্রতীকে আরামবাগ আসন থেকে লোকসভায় নির্বাচিত হন অনিলবাবু। তার পর থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত টানা সাংসদ ছিলেন। আরামবাগ আসনটি ২০০৯ সালে তফসিলি সংরক্ষিত হয়ে যাওয়ায় আর ভোটে দাঁড়াননি অনিলবাবু। সংসদে যাওয়ার আগে হুগলি জেলা পরিষদের সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি।

সাংসদ থাকাকালীন অনিলবাবুর রাজনৈতিক জীবন বহু বিতর্কিত। চাঁছাছোলা মন্তব্য করতেন। যা অনেক সময়েই বিতর্ক ডেকে আনত। বাম জমানার শেষ দিকে তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তাঁর ‘রুচিহীন’ মন্তব্যের জেরে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছিল সিপিএমকে। তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বিবৃতি দিয়ে কড়া ভর্ৎসনা করেছিলেন অনিলবাবুকে। তারও পরে সাংবাদিক সম্মেলন করে সিপিএমের তৎকালীন রাজ্য সম্পাদক বিমান বসুর বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেন হুগলির এই নেতা। তার জেরেই তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

আরও পড়ুন: বাহিনী প্রত্যাহার ও জেলা বাদের প্রশ্নে রাজনাথকে জোড়া আবেদন মমতার​

আরও পড়ুন: রান্নার গ্যাস এবং যৌন হেনস্থা, জোড়া ‘কেলেঙ্কারি’ নিয়ে দলীয় তদন্তে বিজেপি​

বহিষ্কৃত হলেও আমৃত্যু মনেপ্রাণে তিনি ছিলেন সিপিএমেরই। হুগলি এবং কলকাতায় দলের বেশ কিছু কর্মসূচিতে তাঁকে দেখা যেত দূরে দাঁড়িয়ে থাকতে। বাম জমানায় বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, আরামবাগে সকলের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়েছেন অনিলবাবু। লোকসভায় ৬ লক্ষ ভোটে জিতে তাঁর যে রেকর্ড, সেটাও তাঁর ওই ‘বিরোধীশূন্য’ রাজনীতিরই ফল। অনিলবাবু অবশ্য সে সবকে উড়িয়ে দিতেন। কয়েক মাস আগে পঞ্চায়েত ভোটের সময় তৃণমূলের বিরুদ্ধে যখন দিকে দিকে হিংসার অভিযোগ আসছে, তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তাঁর দেখানো পথেই তো এই গোলমাল, এমনই তো বলছেন অনেকে। অনিলবাবু হেসে জবাব দিয়েছিলেন, ‘‘হ্যাঁ আমি তো মুন্ডু চিবিয়ে বেঁচে আছি।’’

কৃষকসভার নেতা বিনয় কোঙার জীবিত থাকাকালীন চেষ্টা করেছিলেন অনিলবাবুকে দলে ফিরিয়ে আনার। কিন্তু, প্রাক্তন সাংসদ তাঁর কৃতকর্মের জন্য ‘ক্ষমা প্রার্থনায়’ রাজি হননি। যদিও চলতি বছর হায়দরাবাদে পার্টি কংগ্রেসের আগে সিপিএমের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাটের দলিলকে চ্যালেঞ্জ করে পাল্টা নোট লিখেছিলেন। আনুষ্ঠানিক ভাবে দলের সঙ্গে সম্পর্ক চুকে যাওয়ার পরেও তৃণমূল বা অন্য কোনও দলে পা বাড়াননি। বরং তৃণমূলের সঙ্গে আপোস করে চলার অভিযোগে সিপিএমের বেশ কিছু নেতাকে কাঠগড়ায় তুলতেন তাঁর পরিচিত কাঠখোট্টা ভঙ্গিতে। সেই মুখর রাজনৈতিক জীবনই নীরব হয়ে গেল গাঁধী জয়ন্তীতে।

CPM Anil Basu Parliament MP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy