হাওড়া ও সংলগ্ন এলাকায় গঙ্গা-দূষণ রোধের জন্য রাজ্য সরকারকে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা আর্থিক সাহায্য করা হচ্ছে। নিকাশি পরিশোধন প্লান্ট (সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বা এসটিপি) তৈরির জন্য করা হচ্ছে ওই সাহায্য। হাওড়ায় গঙ্গাপাড়ের হোটেলের মাধ্যমে দূষণ প্রসঙ্গে জাতীয় পরিবেশ আদালতকে এমনটাই জানিয়েছে ‘ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গা’ (এনএমসিজি)। হাওড়ার আরুপাড়ায় দৈনিক ৬.৫ কোটি লিটার, বালিতে দৈনিক ৪ কোটি লিটার এবং কামারহাটি-বরাহনগরে দৈনিক ৬ কোটি লিটার ক্ষমতাসম্পন্ন এসটিপি তৈরির জন্য মোট ৫৯৫.৭২ কোটি টাকার আর্থিক সাহায্য করা হয়েছে। এনএমসিজি জানাচ্ছে, ওই প্রকল্প আগামী মার্চের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা।
প্রসঙ্গত, গঙ্গাপাড়ের বেআইনি হোটেলের কঠিন-তরল বর্জ্যের কারণে যে ভাবে এই নদী দূষিত হচ্ছে, তার জন্য গত বছর পরিবেশ আদালতের পূর্বাঞ্চলীয় বেঞ্চে মামলা দায়ের হয়েছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এনএমসিজি-কে নিজেদের অবস্থান জানাতে বলেছিল পরিবেশ আদালত। এসটিপি তৈরির জন্য আর্থিক সাহায্যের পাশাপাশি এনএমসিজি আরও জানিয়েছে, গঙ্গার দূষণ রোধ ও পুনরুজ্জীবনের বিষয়টি আগেই পরিবেশ আদালতের ‘প্রিন্সিপাল বেঞ্চ’-এ দায়ের হয়েছিল। সেখানে যে ক’টি রাজ্যের উপর দিয়ে গঙ্গা প্রবাহিত হয়েছে, সেই উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে গঙ্গার দূষণের মাত্রা কতটা এবং তার পুনরুজ্জীবনে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে— তার রাজ্যভিত্তিক রিপোর্ট তলব করেছে আদালতের ‘প্রিন্সিপাল বেঞ্চ’।
পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে বিষয়টি গত সেপ্টেম্বরে সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে উঠেছিল। সেখানে আদালতের তরফে রাজ্যের ‘ডিস্ট্রিক্ট গঙ্গা প্রোটেকশন কমিটি’-র কাছ থেকে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট চাওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট রিপোর্টে দেখা যায়, হাওড়া এলাকায় ১০টি নিকাশি নালা থেকে তরল বর্জ্য গিয়ে গঙ্গায় মিশছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলছেন, ‘‘ওটা তো সরকারি হিসাব। একটু ঘুরলে দেখা যাবে, আসলে কত বেশি সংখ্যক নিকাশি নালা থেকে দূষিত তরল বর্জ্য সরাসরি গঙ্গায় গিয়ে মিশছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)