শোকজ়ের পর এ বার সরাসরি তলব!
তফসিলি জাতি-উপজাতি এবং ওবিসি পড়ুয়াদের বৃত্তিতে হুগলি জেলার অন্তত ৭৮টি স্কুল থেকে প্রচুর ভুয়ো এবং বেআইনি অনুমোদনের অভিযোগ রয়েছে। ওই খাতে গত দু’টি অর্থবর্ষে (২০১৯-’২০ এবং ২০২০-’২১) ১ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকারও বেশি তুলে নিয়েছে ‘ভুয়ো’ পড়ুয়ারা। তদন্তে নেমে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা দফতর গত ৫ সেপ্টেম্বর সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে একদফা শোকজ় করেছিল। আজ, সোম এবং কাল মঙ্গলবার ওই সব স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষিকাদের উপযুক্ত নথি-সহ সশরীরে তলব করা হয়েছে ওই দফতর।
জেলা স্কুল পরিদর্শকের পাঠানো ওই তলবি চিঠিতে বলা হয়েছে, বৃত্তি-তালিকায় দেখা যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানের পাঠক্রমের সঙ্গে অমিল প্রচুর শিক্ষার্থী ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি কোর্সের বৃত্তি পাচ্ছেন। যা আদৌও প্রতিষ্ঠানে পড়ানোই হয় না বা পড়ানোর অনুমোদনও নেই। এ ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি থেকে বৃত্তি অনুমোদনের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ বেআইনি, অন্যায় পদ্ধতি নেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “আগের শোকজ়ের উত্তর সন্তোষজনক না হওয়াতে প্রধান শিক্ষকদের সশরীরে হাজির হয়ে উপযুক্ত প্রমাণ দাখিল করতে বলা হয়েছে।”
জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দফতরের অভ্যন্তরীণ হিসেবে (ইন্টারনাল অডিট) মোট ৩২৩ জন ভুয়ো বৃত্তি-প্রাপক চিহ্নিত হয়েছে। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিষয় অনুযায়ী তাদের কেউ বৃত্তি পেয়ে গিয়েছে ৪৫ হাজার টাকা, কেউ ৪৪ হাজার ৭০০ টাকা, কেউ আবার ৩৭ হাজার টাকারও বেশি। ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের বিষয় হলেও ওই সব বৃত্তি-প্রাপকেরা স্কুলের ছাত্রছাত্রী বলেদেখা গিয়েছে।
ভুয়ো বৃত্তি-প্রাপকদের নামের সঙ্গে যে সব স্কুলের নাম জড়িয়েছে, সেগুলির কর্তৃপক্ষের দাবি তাঁদের কোনও ত্রুটি নেই। কোন স্তরে দুর্নীতি হয়েছে, সেই তদন্তের দাবিতুলেছেন তাঁরাও।
জেলার প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সংগঠনের (অ্যাডভান্স সোসাইটি ফর হেড মাস্টার্স অ্যান্ড হেড মিস্ট্রেস) সভাপতি তথা আরামবাগের ডহরকুন্ডু শ্রীরামকৃষ্ণ হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রণবকুমার নায়েক বলেন, “আমরা যাব। আগে শোকজ়ে যা উত্তর দিয়েছি, এ বারও তাই বলব। আমরা ওইসব নাম পাঠায়নি। বৃত্তি-প্রাপক যে আমাদের স্কুলের ছাত্র নয়, সেটা ছাড়া আমরা কোন নথিও দিতে পারব না। কাজটি করতে ডেস্কটপ, ল্যাপটপ, ট্যাব, মোবাইল ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়েছিল। সেইসব প্রতিটি যন্ত্রের আইপি ঠিকানা আলাদা। কোনগুলিতে সেইসব কাজ হয়েছে তদন্ত করলেই ধরা পড়ে যাবে।”