সাগরমেলার মতো এ বার ত্রিবেণীর আসন্ন কুম্ভমেলাতেও সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে রাজ্য সরকার। সেই মতো বৃহস্পতিবার থেকে মাঠে নামল জেলা প্রশাসন। শুরু হল সপ্তর্ষি ঘাটের ড্রেজ়িং।
এ দিন ওই ঘাট (এখানেই শাহি স্নান হবে) ও সংলগ্ন এলাকা পরিদর্শন করেন মহকুমাশাসক (সদর) স্মিতা সান্যাল শুক্ল। সঙ্গে ছিলেন ডিএসপি (ক্রাইম) অভিজিৎ সিনহা মহাপাত্র, বাঁশবেড়িয়ার পুরপ্রধান আদিত্য নিয়োগী এবং সেচ, দমকল, বিদ্যুৎ প্রভৃতি দফতরের প্রতিনিধিরা। দুর্ঘটনা এড়াতে গঙ্গাবক্ষে কত দূর পর্যন্ত ব্যারিকেড দেওয়া হবে সে সব খতিয়ে দেখেন তাঁরা। এরপর ঘাট সংলগ্ন ত্রিবেণী স্পোর্টিং ক্লাবের মাঠ (সেখানেও সাধুরা থাকবেন) পরিদর্শন করেন। এরপর ওই ক্লাবের আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন মহকুমাশাসক।
বৈঠক শেষে সকলে পৌঁছন প্রায় ৩০০ মিটার দূরের উদ্বাস্তু শিবিরে। শিবিরের পরিত্যক্ত আবাসনগুলির ঘরে হত বার বেশ কিছু নাগা সন্ন্যাসী ছিলেন। কিন্তু ঘরগুলির ভগ্নদশা দেখে এ দিন মহকুমাশাসক জানিয়ে দেন, এখানে কোনও নাগা সন্ন্য়াসীকে থাকতে দেওয়া যাবে না। সাধুদের এক প্রতিনিধিকে ডেকে সে বিষয়ে নজর রাখতেও বলেন তিনি। স্থানীয় বিধায়ক তপন দাশগুপ্ত আগেই জানিয়েছিলেন, প্রয়াগরাজের মতো দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে তাঁরা বদ্ধপরিকর। মহকুমাশাসক এ দিন বলেন, ‘‘কোনও রকম ঝুঁকি নেওয়া যাবে না। সপ্তর্ষি ঘাটের পাশে থাকা উদ্ধাস্তু শিবিরের পরিত্যক্ত আবাসনে নাগা সন্ন্য়াসীদের থাকতে দেওয়া যাবে না। সেখানে তাঁদের জন্য অস্থায়ী তাঁবু খাটানো হবে।’’
আগামী ১১, ১২ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি ত্রিবেণীতে কুম্ভমেলার আয়োজন হয়েছে। সপ্তর্ষি ঘাটে ১২ তারিখ সকাল ১১টায় শাহি স্নান হবে। তিন দিন ধরেই সেখানে মেলাও বসবে। জনসমাগম হবে। এর মধ্যে মাধ্যমিক পরীক্ষা পড়ে যাওয়ায় কেউ কেউ অবশ্য পরীক্ষার্থীদের কথা ভেবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তবে, ত্রিবেণী কুম্ভ পরিচালনা সমিতির কো-অর্ডিনেটর অভিনব বসু বলেন, ‘‘প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। সব রকম সাহায্যের আশ্বাস মিলেছে। পরীক্ষার্থীরা আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাদের কোনও সমস্যা যাতে না হয়, সে দিকে প্রশাসনের সঙ্গে আমাদেরও নজর থাকবে।’’
এ দিন গঙ্গাসাগর থেকে আসা মণ্ডল শ্রীমান নাগাবাবা নয়নগিরি বলেন, ‘‘শ’দুয়েক নাগা সন্ন্যাসী আসবেন। থাকবেন অন্যান্য মঠের কয়েকশো সাধু-সন্তেরাও। প্রশাসন এ ভাবে এগিয়ে আসায় আমরা খুশি।’’ আয়োজকদের দাবি, ৭০০ বছর আগে ত্রিবেণীতে কুম্ভমেলা হত। কালক্রমে যা বন্ধ হয়ে যায়। ২০২২ সাল থেকে ফের সেই মেলা শুরু হয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)