বাঁশবেড়িয়ার মা ক্যান্টিনে দুপুরে খাওয়ার ভিড়। নিজস্ব চিত্র।
এমনিতে প্রতিদিনই বরাদ্দ ভাত আর আলু দিয়ে ডিমের ঝোল। তবে, বাঁশবেড়িয়া পুরসভার ‘মা ক্যান্টিনে’ মাঝেমধ্যে ভালমন্দ মিলছে। পারিবারিক অনুষ্ঠানে কেউ কেউ মাছ-মাংস-মিষ্টির ব্যবস্থা করছেন এখানে। তাতেই হচ্ছে স্বাদবদল।
পুরপ্রধান আদিত্য নিয়োগী বলেন, ‘‘পুরসভায় কাউন্সিল বৈঠকে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কেউ মা ক্যান্টিনে খাবার দিতে চাইলে আমরা গ্রহণ করি। পারিবারিক নানা অনুষ্ঠানে মাছ, মাংস বা মিষ্টি দেন অনেকে। ডিমের ঝোলের সঙ্গে সেই অতিরিক্ত মেনুও ওই দিন যোগ হয়ে যায়।’’
বাঁশবেড়িয়ার পঞ্চাননতলায় পুরসভার তত্ত্বাবধানে ওই ক্যান্টিন চালু হয় গত বছরের ১৬ নভেম্বর। পুর-কর্তৃপক্ষ জানান, প্রতিদিন গড়ে তিনশো মানুষের রান্না হয়। আগে রান্না করা খাবার অনেকেই নিয়ে যেতেন। এখন তা হয় না। ক্যান্টিনে বসে খেতে হয়। পাঁচ টাকার কুপন সংগ্রহ করতে হয়। তার বিনিময়ে খাবার মেলে দুপুর ১টা থেকে। ভিক্ষাজীবী থেকে প্রতিবন্ধী, জুটমিলের কর্মী, হকারদের মতো স্বল্প আয়ের মানুষজন দুপুরে এখানে খেতে আসেন।
বুধবার দুপুরে ওই ক্যান্টিনে গিয়ে দেখা গেল, কয়েক জন খাচ্ছেন। স্বপন সামন্ত নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘বাঁশবেড়িয়ায় থাকি। ট্রেনে হকারি করি। ব্যবসা ভাল যাচ্ছে না। দুপুরে এখানে খেতে চলে আসি। অল্প টাকায় পেট ভরে যায়।’’ সবিতা পাসোয়ান নামে এক বৃদ্ধ ভিক্ষুক বলেন, ‘‘করোনার সময় প্রতিদিন দুপুরে খাবার জুটছিল না। এখন ভিক্ষা কম পেলেও চিন্তা হয় না। পাঁচ টাকা দিয়ে এখানে খেতে চলে আসি।’’
তবে, শুধু যে গরিব মানুষই এখানে খেতে আসেন, তেমনটা নয়। মাঝেমধ্যেই অন্যথা ঘটে। পুরসভারই একটি সূত্রের খবর, ক্যান্টিন চালুর প্রথম দিন শ’চারেক লোক খেয়েছিলেন। তাঁদের অনেকেই পুরসভার চাকুরে। সম্প্রতি পুরবোর্ড গঠনের দিনেও অনুষ্ঠানে আসা শাসক দলের বহু কর্মীর পাত পড়েছে ক্যান্টিনে। ৫ টাকার বিনিময়ে। মাঝে একটি সরকারি নির্মাণকাজের সরকারি ঠিকাকর্মীরা এখানে এসে দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন। অনেকে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলেন ওই খাবার। এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
পুরসভা সূত্রে খবর, রাজ্য সরকার মা ক্যান্টিনের জন্যে মাথাপিছু ১০ টাকা বরাদ্দ করেছে। সরকারের তরফে বিনামূল্যে চাল দেওয়া হয়। পুরপ্রধান আদিত্য নিয়োগী বলেন, ‘‘সরকার যে টাকা বরাদ্দ করেছে, তার চেয়ে বেশি খরচ হয়। ঘাটতি পূরণ করতে পুরসভার পার্কের আয় মা ক্যান্টিনে দেওয়া হয়।’’ পুরপ্রধান আরও জানান, খাবারের গুণমান পরখ করার জন্য মাসে চার-পাঁচ বার তিনি ওই খাবার খান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy