মাস আটেক আগে বাড়ির একমাত্র যুবক ছেলের ঝুলন্ত দেহ মিলেছিল তাঁর ঘরে। বৃহস্পতিবার সকালে গোঘাট ২ ব্লকের বেঙ্গাই পঞ্চায়েতের শিবতলা গ্রামের লায়েকপাড়ার ওই যুবকের মা-বাবা ও ঠাকুমারও ঝুলন্ত দেহ মিলল বাড়িতে। পুলিশের অনুমান, অবসাদে তাঁরাও আত্মঘাতী হয়েছেন।
পুলিশ জানায়, মৃতেরা হলেন কাশীনাথ নন্দী (৫৫), তাঁর স্ত্রী মমতা (৪৭) এবং কাশীনাথের মা অনিমা (৭১)। দেহগুলি ময়না-তদন্তের জন্য আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আপাতত অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাশীনাথ চাষাবাদ করতেন। তাঁর দুই ছেলেমেয়ে। মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ছেলে শান্তনু (২৫) দুর্গাপুরে থেকে ফিজ়িয়োথেরাপি শিখছিলেন। মাস আটেক আগে তিনি বাড়ি ফেরেন। তার পরে একদিন অবসাদে তিনিও আত্মঘাতী হন বলে পুলিশের অনুমান। তার পর থেকেই অবসাদে ভুগছিলেন কাশীনাথরা। কারণ, শান্তনুই ছিলেন তাঁদের ভবিষ্যতের ভরসা।
পড়শিরা জানান, শান্তনুর মৃত্যুর পর থেকে কাশীনাথরা চুপচাপ হয়ে গিয়েছিলেন। কারও সঙ্গে বিশেষ মিশতেন না। এ দিন সকালে তাঁদের বাড়ির মূল গেট দীর্ঘ ক্ষণ বন্ধ থাকায় পড়শিদের সন্দেহ হয়। ডাকাডাকি করেও সাড়া না পেয়ে তাঁরা জানলা দিয়ে উঁকি মেরে গোয়ালে কাশীনাথ ও তাঁর স্ত্রীর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। পরে বাড়ির রান্নাঘরে বৃদ্ধা অনিমার ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। খবর দেওয়া হয় গোঘাট থানায়।
কাশীনাথের জামাই শ্রীকান্ত নন্দী বলেন, ‘‘প্রেমঘটিত কারণে শান্তনু গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়েছিল। তার পর থেকেই ওই বাড়ির তিন জনেই অবসাদে ভুগছিলেন। শেষমেষ এই পরিণতি!’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)