স্বামী বিনয় শ্রীবাস্তবের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ তাঁর স্ত্রী বীণা শ্রীবাস্তব। — নিজস্ব চিত্র।
থানা থেকে কিছুটা দূরেই চলত চোলাই মদের কারবার। হাওড়ার মালিপাঁচঘড়ায় সাত জনের মৃত্যুর ঘটনায় উঠছে এমনই অভিযোগ। মৃতদের আত্মীয়ের বক্তব্য, চোলাই মদ খেয়েই মৃত্যু হয়েছে। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের দেহের ময়নাতদন্তের পর বিষয়টি স্পষ্ট হবে। ওই ঘটনায় এক জনকে আটক করেছে পুলিশ।
মালিপাঁচঘড়ার গজানন বস্তিতে দীর্ঘ দিন ধরেই চোলাই মদের ঠেক চলছিল রমরমিয়ে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, থানার কাছে নিয়মিত চোলাই মদের ঠেক বসলেও তা নিয়ে মাথা ঘামায়নি পুলিশ। ওই বস্তির বাসিন্দা সুনীল সিংহ বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরেই ওখানে চোলাই মদের ঠেক চলত। পুলিশের মদতেই ঠেক চলত।’’ এ ছাড়া ওই এলাকায় আরও অনেক জায়গায় মদের ঠেক চলে বলেও অভিযোগ করেছেন সুনীল।
এখনও পর্যন্ত সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে পাঁচ জনের পরিচয় জানা গিয়েছে। তাঁরা হলেন, বিনয় শ্রীবাস্তব (৩৭), সঞ্জয় রায় (৪৫), সুকুমার চৌধুরী (৫০), রাজেশ্বর রাও (৫৩) এবং অমিত বর্মা (৪৮)। বাকি দু’জনের পরিচয় এখনও জানা যায়নি। ছয় জন ভর্তি রয়েছেন হাওড়া জেলা হাসপাতালে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, যাঁরা মদ খান তাঁদের অনেকের শরীর গত ২-৩ দিন ধরেই খারাপ হয়েছিল। মৃত বিনয় শ্রীবাস্তবের স্ত্রী বীণা শ্রীবাস্তবের বক্তব্য, ‘‘ও একটি মলে কাজ করত। রোজই মদ খেত। তবে এমন কোনও দিন হয়নি। কিন্তু কালকে হঠাৎ করে বমি-পায়খানা হল। হাসপাতালে ভর্তি করলাম। আচমকা ওর মৃত্যু হল। আমার দুটো সন্তান রয়েছে। এ বার ওদের কে দেখবে?’’
মঙ্গলবার রাত থেকে ওই ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। ওই ঘটনায় প্রকাশ কর্মকার নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। প্রকাশ ওই বস্তিরই বাসিন্দা। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তিনি চোলাই মদের ব্যবসা করতেন বলে অভিযোগ। হাওড়া (শহর)-র পুলিশ কমিশনার প্রবীণ ত্রিপাঠী জানিয়েছেন, পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। কী কারণে মৃত্যু হয়েছে তা ময়নাতদন্ত করে বোঝা যাবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে আবগারি দফতর। পাশাপাশি ঘটনাস্থলে যাবে ফরেনসিক বিভাগও।
এই ঘটনা নিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতর। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য উমেশ রায়ের অভিযোগ, ‘‘এ জন্য পুলিশই দায়ী। পুলিশ আগে থেকেই বিষয়টি জানত। তারা প্রথম থেকে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছিল।’’
এ নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায়ের বক্তব্য, ‘‘দোষ প্রমাণিত হলে দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এই ঘটনা নিঃসন্দেহে দুর্ভাগ্যজনক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy