দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর সুশান্ত মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র।
প্রেমিকা তাঁকে ছেড়ে আবার স্বামীর কাছে ফিরে গিয়েছিলেন। মেনে নিতে পারেননি যুবক। দিনের ব্যস্ত সময়ে জেলাশাসকের দফতরের সামনে ছুরি দিয়ে গলা কেটে খুন করেন প্রেমিকাকে। ২০২০ সালের সেই চাঞ্চল্যকর ঘটনার সাজা ঘোষণা হল চুঁচুড়া আদালতে। অভিযুক্ত সুশান্ত মণ্ডলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিলেন বিচারক।
মামলার সহকারী সরকারি আইনজীবী সুব্রত ভট্টাচার্য জানান, ঘটনাটি ২০২০ সালের ৮ মে-র। সে দিন সকাল ১১টা নাগাদ হুগলি জেলাশাসকের দফতরের সামনে ছুরি দিয়ে ছবি দে নামে ৩৫ বছরের এক মহিলাকে ছুরি দিয়ে বুকে এবং পেটে আঘাত করে ক্ষতবিক্ষত করেন সুশান্ত ওরফে তারক নামে এক যুবক। ছবির স্বামী দীপঙ্কর দে স্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে তিনিও ছুরির আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হন। মহিলাকে গলা কেটে খুন করে পালিয়ে যান অভিযুক্ত। খবর পেয়ে চুঁচুড়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরে চুঁচুড়ার অন্নপূর্ণা ঘাট সংলগ্ন নির্মীয়মাণ ইন্ডোর স্টেডিয়াম থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। যুবকের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় মামলা রুজু হয়। সরকারি আইনজীবীর কথায়, ‘‘ঘটনার তদন্তকারী অফিসার পুলক মণ্ডল ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট জমা দেন। প্রায় সাড়ে তিন বছর পর সেই মামলার সাজা ঘোষণা হল শুক্রবার।’’
খুনের কারণ ছিল বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক। সরকারি আইনজীবী বলেন, ‘‘দীপঙ্করের স্ত্রী ছবির সঙ্গে সম্পর্ক ছিল সুশান্তের। স্বামীকে ছেড়ে এক বার প্রেমিকের কাছে চলেও গিয়েছিলেন ছবি। পরে করোনার সময় আবার স্বামীর কাছে ফিরে আসেন। খুনের দিন স্বামীর সঙ্গে জুতো কিনতে বেরিয়েছিলেন ছবি। একটা দোকানে পরোটা খেয়ে জুতো কিনে জেলাশাসকের দফতরের সামনে দিয়ে হেঁটে ফিরছিলেন স্বামী-স্ত্রী। সে সময় সুশান্ত তাঁর উপর ছুরি নিয়ে হামলা করেন।’’
ওই মামলায় চুঁচুড়ার অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক ফার্স্ট কোর্ট সঞ্জয়কুমার শর্মা অভিযুক্তকে গত মঙ্গলবার দোষী সাব্যস্ত করেছেন। শুক্রবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনান। পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ছ’মাস কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। আদালতের এই নির্দেশের পর মৃতার স্বামী দীপঙ্কর দে বলেন, ‘‘স্ত্রীকে ফুসলিয়ে নিয়ে গিয়েছিল সুশান্ত। ভুল বুঝতে পেরে ছবি ফিরে এসেছিল। সেই রাগে পাশবিক ভাবে ওকে খুন করে সুশান্ত। ওর এই সাজায় আমি খুশি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy