E-Paper

হাওড়ায় রমরমিয়ে চলছে নিষিদ্ধ লটারি

বেশ কিছু দিন ধরে এমনই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে হাওড়ার জগাছা এলাকায় রেল কলোনির ছোট বাজারে বা কোনা এক্সপ্রেসওয়ে সংলগ্ন গরফার উনসানি রোডের পাশে, কালী মন্দিরের পিছনে।

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:৫৪
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

রাস্তার পাশেই ফুটপাত দখল করে তোলা হয়েছে দরমার বেড়া আর টালির চালের ছোট ছোট ঘর। প্রতিদিনই দেখা যায়, সকাল থেকে সেই ঘরগুলির সামনে মোটরবাইক আর সাইকেলের লম্বা লাইন। কেউ বাজার করতে বেরিয়ে, কেউ বা দিনমজুর হিসাবে কাজে যাওয়ার পথে এক বার করে ঢুকে পড়ছেন ওই সমস্ত ঝুপড়িতে। কিছু ক্ষণ পরে সেই সব ঘর থেকে কেউ বেরোচ্ছেন বিজয়ীর হাসি নিয়ে, কেউ আবার হতাশ মুখে। পকেটের সমস্ত টাকা খুইয়ে।

বেশ কিছু দিন ধরে এমনই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে হাওড়ার জগাছা এলাকায় রেল কলোনির ছোট বাজারে বা কোনা এক্সপ্রেসওয়ে সংলগ্ন গরফার উনসানি রোডের পাশে, কালী মন্দিরের পিছনে। কিন্তু কী ঘটছে ওই ঝুপড়িগুলিতে? অভিযোগ, ভোটের আগে রীতিমতো কম্পিউটার বসিয়ে হাওড়ার বিভিন্ন জায়গায় ফের শুরু হয়েছে নিষিদ্ধ লোটো লটারির জুয়া খেলা। আর ওই লটারি খেলতে এসে নিঃস্ব হচ্ছেন বহু মানুষ। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশ এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতার মদতেই ভোটের আগে টাকা তুলতে এই নিষিদ্ধ জুয়া আবার শুরু করা হয়েছে। আট থেকে আশি, সকলেই অর্থের লোভে ছুটে আসছেন এই লোটো লটারি খেলতে।

জগাছার বাসিন্দা, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্কুলশিক্ষক বললেন, ‘‘টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে পড়ুয়ারাও এই নিষিদ্ধ লটারি খেলতে আসছে। স্কুলে যাচ্ছে না। এই প্রবণতা সমাজের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকর। অবিলম্বে এই লটারি বন্ধ করা উচিত।’’ জান‌া গিয়েছে, এই লটারি খেলা হয় একটি সংস্থার অ্যাপের মাধ্যমে। খেলার নাম ‘জিতো জোকার’। এই গেম খেলার জন্য ১০ টাকার টিকিট কিনতে হয়। লটারির প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কম্পিউটারে থাকা বিশেষ অ্যাপ। ফলাফল বেরোতে লাগে কয়েক মিনিট। জিতলে ১০ টাকায় মেলে ১০০ টাকা। ১০০ টাকায় মেলে হাজার টাকা। আর হারলে খালি হাতে ফিরে আসতে হয়, অথবা ফের টাকা লাগিয়ে টিকিট কিনতে হয়।

এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, লটারির নেশায় সেখানকার বহু মানুষ কাজ ছেড়ে দিয়েছেন। পড়ুয়াদের স্কুলছুটের সংখ্যা বাড়ছে। অন্য দিকে, এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী ঝুপড়িতে বিদ্যুতের বেআইনি সংযোগ নিয়ে কয়েকটি কম্পিউটার বসিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা আয় করছেন। আর মাসের শেষে মোটা নজরানা পৌঁছে যাওয়ায় ঠুঁটো হয়ে থাকছে পুলিশ-প্রশাসনের একাংশ।

প্রশ্ন উঠেছে, লোকসভা নির্বাচনের আগে গোটা রাজ্যই যখন নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে, তখন প্রকাশ্যে জুয়া খেলা চলে কী করে? হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা জানান, কয়েক মাস আগেই দফায় দফায় তল্লাশি চালিয়ে ওই নিষিদ্ধ জুয়া পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ বন্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু তা যে ফের শুরু হয়েছে, সে ব্যাপারে কোনও অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে, খোঁজ নিয়ে দেখে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Howrah

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy