E-Paper

রায়ে কেউ নিরুদ্বিগ্ন, কারও লোকলজ্জার ভয়

তারকেশ্বর মহাবিদ্যালয় (উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগ) স্কুলের বাংলার শিক্ষক বিভাস মালিক ২০১৬ সালের প্যানেলে চাকরি পেয়েছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:৪২
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

কলকাতা হাই কোর্টে নির্দেশে চাকরি গিয়েছে। রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে রাজ্য সরকার। চাকরিহারা শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীদের অনেকেই সামাজিক সম্মান হারানোর ভয় পাচ্ছেন। কেউ কেউ অবশ্য বলছেন, সমাজের চর্চা নিয়ে আদৌ তাঁরা উদ্বিগ্ন নন। তাঁদের বক্তব্য, প্রতিবেশীদের ফিসফাস, চায়ের দোকানে চর্চা ইত্যাদি বিষয়গুলি তাঁদের সয়ে গিয়েছে।

তারকেশ্বর মহাবিদ্যালয় (উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগ) স্কুলের বাংলার শিক্ষক বিভাস মালিক ২০১৬ সালের প্যানেলে চাকরি পেয়েছিলেন। ফলে, চাকরিহারাদের তালিকায় তিনিও আছেন। বিভাস তৃণমূলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার যুব সহ-সভাপতি। আদালতের রায় প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘এটা তো প্রথম বার নয়, যে ভেঙে পড়ব বা মুখ লুকোব। প্রায়
আড়াই-তিন বছর ধরে আমদের ছোটানো হচ্ছে। এরপর নতুন করে সামাজিক মানসম্মান হারানোর জায়গা কোথায়! দিব্যি ঘোরাফেরা বা ঘরে-বাইরের সব কাজকর্মই করছি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এই রায় পক্ষপাতদুষ্ট। সুপ্রিম কোর্টে নিশ্চিত ভাবেই
সুবিচার মিলবে।’’

চাকরি বাতিলের তালিকায় রয়েছেন খানাকুলের রামনগর অতুল বিদ্যালয়ের করণিক মিরাজ ইমারন আলি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কিছু চর্চা হচ্ছে। কিন্তু লোকে কী বলছেন না বলছেন, তাতে কিছু এসে যায় না। কিসের মান-সম্মান? যোগ্যাতা অনুযায়ী কাজ পেয়েছি। তা ছাড়া লোকও বুঝে গিয়েছেন এ সব রায় কার্যকর হবে না। প্রাথমিকে নিয়োগ নিয়ে অত হুলস্থুলের পরেও কিছুই হয়নি।’’ দুর্নীতির বিষয়টি উবে গিয়ে এখন আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে রাজনীতির গন্ধ নিয়েই মানুষ বেশি চর্চা করছে বলে তাঁর অভিমত।

চাকরিহারাদের অনেকেই অবশ্য লোকলজ্জার ভয়ে কার্যত গুটিয়ে গিয়েছেন। হাই কোর্টের রায় সুপ্রিম কোর্টেও বহাল থাকলে কী পরিস্থিতি হবে, তা নিয়েও তাঁরা ভাবিত। পান্ডুয়ার বাসিন্দা তথা এই ব্লকেরই একটি বিদ্যালয়ের জীবনবিজ্ঞানের শিক্ষক ২০১৬ সালের প্যানেল থেকে ’১৯ সালে চাকরি পান। তাঁর বক্তব্য, ‘‘পড়াশোনা শিখে পরীক্ষায় পাশ করে চাকরি পেয়েছি। হাই কোর্টের রায় আমাকে মর্মাহত করেছে। ঘরে মা-বাবা স্ত্রী-সন্তান। সত্যিই চাকরি গেলে এবং টাকা ফেরাতে হলে সংসার কী করে চলবে! আশা করছি, সুপ্রিম কোর্টে সুরাহা মিলবে।’’ তিনি জানান, পাছে চাকরি হারানো নিয়ে জিজ্ঞাসা করেন, এ জন্য লজ্জায় পরিচিত-অপরিচিত অনেকের ফোন তিনি ধরছেন না। তাঁর কথায়, ‘‘জিজ্ঞাসা করলে কী উত্তর দেব! নিজেরই খারাপ লাগছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Calcutta High Court Supreme Court of India

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy