বার্নপুরে ইস্কোয় সেই ফার্নেস। নিজস্ব চিত্র।
রাষ্ট্রায়ত্ত ইস্পাত সংস্থা ইস্কো স্টিল প্ল্যান্টের আধুনিকীকরণ প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষের মুখে। এরই মধ্যে রবিবার গভীর রাতে সংস্থার নতুন লোহা গলানোর চুল্লিটি পরীক্ষামূলক ভাবে চালু করা হয়েছে। সেই সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন দেশের নবরত্ন সংস্থা সেলের চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর ভার্মা। এই চুল্লিটির নির্মাণ পুরোপুরি সফল হয়েছে বলে দাবি করেন ইস্কো কর্তৃপক্ষ।
সোমবার ইস্কো কর্তৃপক্ষের তরফে দাবি করা হয়েছে, সংস্থার এই নতুন লোহা গলানোর চুল্লিটি দেশে সব চেয়ে বড়। সেটি একবারে ৪১৬০ ঘন মিটার লোহার পাত বানাতে পারবে। বছরে আড়াই মিলিয়ন টন লোহা তৈরি করতে পারবে। এর আগে ২০১৩ সালে ওরিশার রৌরকেল্লায় দেশের সর্ববৃহত্ লোহা গলানোর চুল্লি বানানো হয়েছিল। ইস্কোর একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় মাসখানেক আগে এই চুল্লি পরীক্ষামূলক ভাবে চালু করার জন্য তৈরি করা হয়েছ। প্রথমে ঠিক ছিল প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সেটি পরীক্ষামূলক ভাবে চালানো হবে। কিন্তু পরে সিদ্ধান্ত বদলে রবিবার মধরাতে সেলের চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে সেটি চালু করা হয়।
আশির দশকের গোড়া থেকে রুগ্ণ হতে শুরু করে ইস্কোর দু’টি ইউনিট, কুলটি ও বার্নপুর। সংস্থার অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন ও শ্রমিক সংগঠনগুলি দাবি তোলেন কারখানার আধুনিকীকরণ করতে হবে। সংস্থার ক্ষতি কমাতে কুলটি ইউনিটের সাড়ে তিন হাজার শ্রমিক-কর্মীকে স্বেচ্ছাবসর দিয়ে ঝাঁপ বন্ধ করা হয়। এর পরে সেল সিদ্ধান্ত নেয়, কারখানার আধুনিকীকরণ করা হবে। ২০০৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। প্রায় সাড়ে তিনশো একর জায়গায় ইস্কো স্টিল প্ল্যান্টের এই নতুন প্রকল্প রূপায়ণের কাজ শুরু হয়।
ইস্কো সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে সংস্থার কোকওভেন ব্যাটারি, স্নিটার প্ল্যান্ট, বেসিক অক্সিজেন চুল্লি, কন্টিনিউয়াস কাস্টার্স ও ওয়ার রড মিল ইতিমধ্যে চালু হয়ে গিয়েছে। ইস্কোর জনসংযোগ আধিকারিক ভাস্কর কুমার জানান, এই নতুন প্রকল্পটি একটি সুসংহত লোহা গলানোর চুল্লি। তাই এটি পরিবেশ সহায়ক। দেশের অন্য ইস্পাত কেন্দ্রগুলির চুল্লির থেকে এই চুল্লিটিতে অপেক্ষাকৃত কম ধোঁয়া বেরোবে ও দূষণ কম হবে। তিনি আরও জানান, সংস্থার সামাজিক দায়িত্ব পালনের অঙ্গ হিসেবে আশপাশের গ্রামগুলির বেকার যুবকদের একাধিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে ভবিষ্যতে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। একই সঙ্গে আসানসোল শিল্পাঞ্চলের একাধিক ইস্পাত সহায়ক ক্ষুদ্র ও অনুসারী শিল্প সংস্থাকে কাজের বরাতও দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy