শহরে প্লাস্টিকের ব্যবহার না কমালে বাতিল হতে পারে হকারদের ব্যবসা করার অনুমোদন। এমনই কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে কলকাতা পুরসভা। সম্প্রতি কলকাতা পুরসভার অধিবেশনে ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মীনাক্ষী গঙ্গোপাধ্যায় শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে হকারদের দৌরাত্ম্য নিয়ে একটি প্রস্তাবনা তোলেন। যেখানে তিনি বলেন, “শ্যামবাজারের বাজার এলাকায়, বিশেষ করে পাঁচ মাথার মোড় আবার প্লাস্টিকে ভরে গিয়েছে। ওই এলাকা প্লাস্টিকমুক্ত ও দোকানগুলিকে সতর্ক না করলে রাস্তায় যাতায়াত করা অসম্ভব হয়ে পড়ছে।”
কাউন্সিলর মীনাক্ষী আরও বলেন, “দৃশ্যদূষণ ছাড়াও গাড়ি চলাচল, ট্রাফিক সিগন্যাল দেখা যাচ্ছে না। পাশাপাশি আর এক সমস্যা রাস্তার ধারে ডিভাইডার দেওয়ায় শ্যামবাজার মোড়ের দিকে রাস্তা ছোট হয়ে আছে।” উত্তর কলকাতায় নিজের এলাকা প্রসঙ্গে কাউন্সিলর এমন অভিযোগ করলেও, পুরসভার আধিকারিকদের মতে, কলকাতা শহরের সব প্রান্তেই হকারেরা এই ধরনের প্লাস্টিক ব্যবহার করে যাচ্ছেন, যা সরকারি ভাবে নিষিদ্ধ। তাই এই বিষয়ে কলকাতা পুরসভার কড়া পদক্ষেপ জরুরি বলেই মনে করছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন:
দলীয় কাউন্সিলরের এমন অভিযোগের জবাবে মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বলেছেন, “গত ১৪ নভেম্বর একটি যৌথ পর্যবেক্ষকদল পরিদর্শন করে। উপস্থিত হকারদের প্লাস্টিক দূষণ প্রসঙ্গে অবগত করে, ঘেরা ও ছাউনির জন্য লাগানো প্লাস্টিক খুলে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। পরিদর্শনের সময়েই অনেক হকার তা খুলেও ফেলেন।” তিনি আরও বলেন, “কলকাতা পুরসভা হকারদের সিওভি (সার্টিফিকেট অফ ভেন্টিং) দিচ্ছে। সেই সিওভি দেওয়ার ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিধিনিষেধ রয়েছে। যদি তাঁরা প্লাস্টিক লাগান, তা হলে আমরা সিওভি বাতিল করে দেব।” প্রসঙ্গত, এই সিওভি বা শংসাপত্র কলকাতায় হকারদের ব্যবসার জন্য পুরসভার তরফে দেওয়া শুরু হয়েছে।
কলকাতা পুরসভার এমন নিয়ম তথা মেয়র পারিষদের বক্তব্য প্রসঙ্গে হকার জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির নেতা অসিত সাহা বলেন, “আমরা কলকাতা পুরসভার সব নিয়ম মানতে রাজি। এ ক্ষেত্রে প্লাস্টিকের বদলে পুরসভা যদি আমাদের কোনও বড় ধরনের ছাতা বা বিকল্প কোনও ব্যবস্থা করে দেয়, তা হলেই হকারেরা আর প্লাস্টিকের ব্যবহার করবেন না। এই ব্যবস্থা করার জন্য রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের একটি তহবিলও রয়েছে। সেখান থেকে আমাদের জন্য বন্দোবস্ত করে দেওয়া হলেই সমস্যা মিটে যাবে।”