Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Cyber Crime

কেওয়াইসি তথ্য আপডেটের ফাঁদে আড়াই লক্ষ লোপাট

অনলাইনে প্রতারণা চক্রের ফাঁদে পা দিয়ে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা খোয়ালেন পূর্ব রেলের এক অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

ফিরোজ ইসলাম 
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:৫৩
Share: Save:

অনলাইনে প্রতারণা চক্রের ফাঁদে পা দিয়ে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা খোয়ালেন পূর্ব রেলের এক অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক। একটি মোবাইল সংস্থার নাম করে ওই আধিকারিককে ফোন করে বলা হয়, কেওয়াইসি সংক্রান্ত তথ্য আপডেট না করলে প্রিপেড মোবাইলে রিচার্জ করা যাবে না। নাম, ঠিকানা, পরিচিতি আপডেট করার জন্য একটি বিশেষ অ্যাপও তাঁকে ডাউনলোড করতে বলা হয়। তার পরে ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে অনলাইনে রিচার্জ করতে বলা হয়। সেই মতো করে ওই ব্যক্তি দেখেন, তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলার এসএমএস অ্যালার্ট আসছে। কয়েক মিনিটের মধ্যে মোট পাঁচ বার তাঁর দু’টি অ্যাকাউন্ট থেকে ২ লক্ষ ৪৮ হাজার ৮৮৯ টাকা তুলে নেওয়া হয়।

এক সময়ে ফেয়ারলিতে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে কর্মরত পূর্ব রেলের অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক সুশান্ত দে ওই ঘটনার পরে বরাহনগর থানায এবং লালবাজারে কলকাতা পুলিশের ব্যাঙ্ক জালিয়াতি দমন শাখায় অভিযোগ জানিয়েছেন।

সুশান্তবাবুর অভিযোগ, ১১ ফেব্রুয়ারি দুপুর ২টো নাগাদ তাঁর কাছে ৯৩৩৯২১৪২৭২ নম্বর থেকে একটি ফোন আসে। ট্রু কলারে নম্বরটি একটি মোবাইল সংস্থার কাস্টমার কেয়ার সার্ভিসের নম্বর হিসেবে দেখিয়েছিল। সুশান্তবাবুকে বলা হয়, তাঁর নম্বরে কেওয়াইসি সংক্রান্ত তথ্য আপডেটের প্রয়োজন রয়েছে। তাঁকে প্লে স্টোর থেকে একটি কুইক সাপোর্ট অ্যাপ ডাউলোড করতে বলা হয়।

তিনি ওই অ্যাপ ডাউনলোড করলে তাঁকে নিজের মোবাইলের একটি অ্যাপ ব্যবহার করে ১০ টাকা রিচার্জ করতে বলা হয়। সুশান্তবাবু ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে ১০ টাকা রিচার্জ করতেই শুরু হয় সমস্যা। অপরিচিত ওই কণ্ঠের সঙ্গে কথোপকথন চলাকালীন সুশান্তবাবু লক্ষ করেন, তাঁর মোবাইলে ওটিপির বার্তা আসছে। সেই সঙ্গে প্রতি বারে ৪৯ হাজারের কিছু বেশি টাকা অ্যাকাউন্ট থেকে বেরিয়ে অন্য কারও মোবাইল ওয়ালেটে চলে যাচ্ছে। বিপদ বুঝে ফোন ছেড়ে দ্রুত নতুন অ্যাপটিকে মুছে দেন সুশান্তবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘কিছু বোঝার আগেই দেখি, প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা অন্য কোথাও চলে গিয়েছে।’’

লালবাজারের ব্যাঙ্ক জালিয়াতি দমন শাখার এক আধিকারিক জানান, ইদানীং অ্যাপের মাধ্যমে তথ্য হাতিয়ে প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। এ ক্ষেত্রেও প্রতারকদের নির্দেশিত অ্যাপ ডাউনলোড করতেই নির্দিষ্ট স্মার্টফোনে সেটি ‘মিররিং’ হয়ে থাকতে পারে। ওই প্রক্রিয়ায় প্রতারকেরা নির্দিষ্ট অ্যাপের মাধ্যমে যে কোনও স্মার্টফোনকে নিজেদের ফোনের মতো ব্যবহার করতে পারে।

গোয়েন্দারা মনে করছেন, সুশান্তবাবু ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে সিম কার্ড রিচার্জ করা মাত্র তাঁর কার্ডের তথ্য প্রতারকেরা পেয়ে গিয়েছে। পুলিশ আধিকারিকদের দাবি, ওই সব অ্যাপ চিহ্নিত করে তা সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্লে স্টোর কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। কিন্তু প্রতারকেরা নতুন অ্যাপ বানিয়ে ফেলে। অভিযুক্তদের হদিস পেতে পুলিশ ইতিমধ্যেই দু’টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিভিন্ন তথ্য খতিয়ে দেখছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cyber Crime
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE