স্কুলপড়ুয়া ছেলের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর খুনের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন মা। গত ৪ অগস্ট গার্ডেনরিচের আলিফনগরে ওই কিশোরের ‘খুন’কে কেন্দ্র করে এলাকা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। রাস্তা অবরোধ, ভাঙচুর তো হয়েছিলই, আগুন লাগানো হয়েছিল অভিযুক্তের বাড়িতেও। অভিযুক্ত ব্যবসায়ী সাহাব হোসেনকে গ্রেফতারও করেছিল পুলিশ।
এক মাস যেতে না যেতেই ঘুরে গিয়েছে গোটা ঘটনার মোড়। মৃত কিশোর মহম্মদ জিশানের মা সাবিয়া খাতুন চলতি মাসের গোড়ায় আদালতকে জানিয়েছেন, ছেলের মৃত্যু নিয়ে তিনি ভুল অভিযোগ করেছিলেন। তার পরেই অভিযুক্ত সাহাবকে জামিনে মুক্তি দিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা আদালত। সেই সঙ্গে মিথ্যা অভিযোগ করার জন্য সাবিয়ার বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতকে ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশ দিয়েছে জেলা আদালত।
পুলিশ জানায়, ৩ অগস্ট থেকে নিখোঁজ ছিল জিশান। ৪ অগস্ট আলিফনগরে একটি তিন তলা বাড়ির সামনের নর্দমা থেকে তার দেহ উদ্ধার করা হয়। সাবিয়া পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, জিশানকে নিজের ঘুড়ির কারখানায় কাজ করাত সাহাব। টাকাপয়সা নিয়ে গোলমালের জেরে জিশানকে খুন করে তিন তলা থেকে নিচে ফেলে দেয় সাহাব। এর পরেই সাহাবের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেন এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ। তা হলে সাবিয়া এখন অভিযোগ তুলে নিতে চাইছেন কেন?
এ ব্যাপারে সাবিয়া বা তাঁর পরিজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে হয়েছিল। তাঁদের বাড়িতে পাওয়া যায় নি। ফোনও বন্ধ ছিল। সাবিয়া বা তাঁর পরিজনেরা কোথায় গেছেন, তা জানাতে পারেননি প্রতিবেশীরাও। খুনের অভিযোগ করার সময় সাবিয়ার সঙ্গে থাকা এক প্রতিবেশীকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘‘তখন সঙ্গে ছিলাম। পরে ও কেন অভিযোগ তুলে নিল তা জানি না।’’ স্থানীয়দের একাংশের দাবি, এই অভিযোগ তুলে নেওয়ার পিছনে এলাকার প্রভাবশালীদের ভূমিকা রয়েছে। পুলিশ সূত্রে একই ইঙ্গিত দেওয়া হলেও সঙ্গে তদন্তকারীদের দাবি, এই ঘটনায় খুনের কোনও প্রমাণ মেলেনি। সে দিন জিশানের সঙ্গে থাকা এক কিশোর জানিয়েছে, ঘুড়ির কাঠি চুরি করতে গিয়ে উপর থেকে পড়ে গিয়েছিল জিশান। এ ব্যাপারে বিচারকের কাছে গোপন জবানবন্দি দিয়েছে সে। জিশানের দেহের ফরেন্সিক রিপোর্ট তদন্তকারীদের হাতে রয়েছে। তবে ভিসেরা রিপোর্ট এখনও মেলেনি। তা এলে আদালতে তদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy