Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Kolkata news

বিদেশবাসের উচ্চাকাঙ্ক্ষা! আত্মীয় ডাক্তার পরিবারের সকলকে খুন করে লুঠের ছক কষেছিল টিয়া

তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই প্রাথমিক ভাবে এই তথ্য জেনেছে পুলিশ।

ধৃত পবিত্র দেবনাথ, ঐন্দ্রিলা রায় এবং রূপম সমাদ্দার (বাঁ দিক থেকে)।

ধৃত পবিত্র দেবনাথ, ঐন্দ্রিলা রায় এবং রূপম সমাদ্দার (বাঁ দিক থেকে)।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৯ ১২:৪৪
Share: Save:

বিদেশে পাকাপাকিভাবে থাকার জন্য১৯ লাখ টাকা চেয়েছিল, সেই টাকা না পেয়েই খুনের ছক কষে হরিদেবপুরে চিকিত্সকের বাড়িতে বন্ধুকে নিয়ে হামলা চালিয়েছিল ঐন্দ্রিলা ওরফে টিয়া। বৃহস্পতিবার সকালে এই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে টিয়া-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই প্রাথমিক ভাবে এই তথ্য জেনেছে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতেরা হল, ৩৪ বছরের টিয়া, ৩৯ বছরের রূপম সমাদ্দার এবং ২০ বছর বয়সী পবিত্র দেবনাথ ওরফে ভোলা। ঐন্দ্রিলা প্রথমে তার বন্ধু রূপমের সঙ্গে এই হামলার ছক কষেছিল। পরে রূপম আবার তার পরিচিত ভোলাকে তাদের এই পরিকল্পনায় সামিল করে। ঐন্দ্রিলা এবং রূপমের বাড়ি সোনারপুরে। পবিত্র দক্ষিণ ২৪ পরগনার রামনগরের বাসিন্দা।

ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, কয়েক দিন আগে হরিদেবপুরে চিকিৎসক অরূপকুমার দাসের বাড়িতে গিয়েছিল টিয়া। সে চেয়েছিল পাকাপাকিভাবে বিদেশে থাকতে। সে জন্যই ওই চিকিত্সক আত্মীয়ের কাছে ১৯ লাখ টাকা চেয়েছিল। অরূপবাবু তাকে এত টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এরপরই টিয়া তার বন্ধু রূপমের সঙ্গে মিলে খুনের ছক কষে। তাদের পরিকল্পনা ছিল, বাড়ির সকলকে খুন করে আলমারি থেকে টাকা লুঠ করে চম্পট দেবে।

আরও পড়ুন: পিসতুতো দিদিকে বঁটির কোপ মেরে লুট

সেই মতো বুধবার দুপুরে তারা তিনজন একটা হাতুড়ি নিয়ে অরূপবাবুর বাড়িতে পৌঁছয়। সে সময় চিকিত্সক অরূপবাবু বাড়িতে ছিলেন না। তাঁর মেয়ে শাল্মলী দাস এবং পরিচারিকা কল্পনা ছিলেন। মেয়ে শাল্মলী আবার সে সময় স্নান করছিলেন। পরিচিত হওয়ায় পরিচারিকা কোনওরকম সন্দেহ করেননি। দরজা খুলে তাঁদের ঘরে বসিয়ে জল খেতে দেন। তারপর রান্নাঘরে কাজ সারতে চলে যান।

আরও পড়ুন: কলকাতা ও শহরতলিতে ফের তিন প্রাণ নিয়ে দৌরাত্ম্য ডেঙ্গির, ভরা হেমন্তেও ছড়াচ্ছে আতঙ্ক

সেই সুযোগেই তাঁরা তিনজন ওই হাতুড়ি নিয়ে পরিচারিকার উপর চড়াও হয়। পরিচারিকার চিত্কারে শাল্মলীও বাইরে বেরিয়ে এলে, তাঁকে হাতুড়ি দিয়ে এলোপাথাড়ি মারতে শুরু করে তারা। রক্তাক্ত অবস্থায় শাল্মলী এবং কল্পনা দুজনেই অচৈতন্য হয়ে যান।

পুলিশ জানিয়েছে, শাল্মলী এবং কল্পনা দুজনে জ্ঞান হারিয়েছিলেন, কিন্তু তারা তিনজন ভেবেছিলেন যে শাল্মলী এবং কল্পনা মারা গিয়েছেন। তারপর রক্তমাখা পোশাক বদলে বাড়ির কাছেই একটা ভ্যাটে সেগুলো ফেলে দিয়ে চম্পট দেয় তারা। যাওয়ার আগে আলমারি থেকে নগদ প্রায় দেড় লক্ষ টাকা এবং লক্ষাধিক টাকার গয়না নিয়ে যায়।

পরে শাল্মলীর জ্ঞান ফিরে এলে নিজেই তিনি বাবাকে ফোন করে সবটা জানান। বাবার কাছ থেকে শুনেই প্রতিবেশীরা তাঁদের দুজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান। পরিচারিকা কল্পনার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

পুলিশ ভ্যাট থেকে খুনের পোশাকগুলো এবং হাতুড়ি উদ্ধার করেছে। এই ঘটনার পিছনে আর কোনও রহস্য রয়েছে কি না, তা জানার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Haridevpur Robbery Crime
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE