Advertisement
E-Paper

কাঁচা রাস্তার ধারে বাড়ি তুলতে দিতে হবে উন্নয়ন ফি, নতুন নিয়ম আনল কলকাতা পুরসভা

সম্প্রতি একটি নতুন নিয়ম চালু করে পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কাঁচা রাস্তা বা ‘কমন প্যাসেজে’র ধারে বাড়ি তৈরির সময় বিল্ডিং প্ল্যান অনুমোদনের সঙ্গেই দিতে হবে ‘ডেভেলপমেন্ট ফি’।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৫:৪৩
KMC introduces new rules for payment development fee for building houses on unpaved roads

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

কলকাতার বিস্তৃত এলাকায় এখনও বহু কাঁচা রাস্তা এবং ‘কমন প্যাসেজ’ রয়েছে, যেগুলির বেশিরভাগেরই কোনও উল্লেখ নেই কলকাতা পুরসভার নথিতে। দীর্ঘদিন ধরেই এই ধরনের রাস্তার পাশে একের পর এক বাড়ি তৈরি হলেও নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে পুরসভার আইনি জটিলতায় পড়তে হয়েছে। এ বার সেই সমস্যার সমাধান করতে এবং পরিষেবার খরচ সামাল দিতে বিশেষ উদ্যোগী হল কলকাতা পুরসভা। সম্প্রতি একটি নতুন নিয়ম চালু করে পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, কাঁচা রাস্তা বা ‘কমন প্যাসেজে’র ধারে বাড়ি তৈরির সময় বিল্ডিং প্ল্যান অনুমোদনের সঙ্গেই দিতে হবে উন্নয়ন ফি বা ‘ডেভেলপমেন্ট ফি’।

নিয়ম অনুযায়ী, এক কাঠা পর্যন্ত জমিতে বাড়ি করতে হলে প্রতি বর্গফুটে ৫ টাকা, এক থেকে তিন কাঠা জমিতে ৮ টাকা এবং তিন কাঠার বেশি জমিতে ১০ টাকা হারে উন্নয়ন ফি ধার্য করা হবে। এই ফি এককালীন, অর্থাৎ একবারই জমা দিতে হবে। পুরসভা জানাচ্ছে, সমগ্র কলকাতা পুরসভার আওতায় এই নিয়ম প্রযোজ্য হলেও মূলত সংযুক্ত এলাকাগুলি— যেমন যাদবপুর, কসবা, গরফা, মুকুন্দপুর, ই এম বাইপাস লাগোয়া অঞ্চল, বেহালা, জোকা, ঠাকুরপুকুর, গড়িয়া ইত্যাদি— এই নিয়মের আওতায় বেশি আসবে। কারণ, পুরসভার রেকর্ডে না থাকা রাস্তা বা কমন প্যাসেজ এ সব অঞ্চলে তুলনামূলক বেশি।

কারণ, ১-১০০ নম্বর ওয়ার্ড পর্যন্ত কলকাতা পুরসভা এলাকায় এই ধরনের সমস্যা প্রায় নেই বললেই চলে। কারণ, দীর্ঘদিন ধরে এই সব এলাকায় কলকাতা পুরসভার অংশ। কিন্তু যাদবপুর, বেহালা, গরফা, মুকুন্দপুরের মতো এলাকাগুলি কলকাতা পুরসভার আওতায় এসেছে ১৯৮৫ সালের পরে। আবার ঠাকুরপুকুর এবং জোকার দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা আবার ২০১৫ সালেই কলকাতা পুরসভার অংশ হয়েছে। তাই এই সব এলাকায় পুরসভার পরিকাঠামো গড়ে উঠেছে ধীরে ধীরে বা এখনও তৈরি হওয়ার সুযোগ রয়েছে। তাই এই নতুন নিয়ম মেনে কলকাতা শহরের পরিকাঠামো সাজানোর সঙ্গে রাজস্ব বৃদ্ধি করতে চায় পুরসভা।

পুরসভার এক শীর্ষকর্তা জানান, প্রায়ই দেখা যায় বড় জমি ভাগ করে একাধিক প্লট বিক্রি করা হয়েছে। কোথাও আবার জলাশয় বা পুকুর ভরাট করে রাস্তা তৈরি হয়েছে। অনেক সময় দু’দিকের বাড়ির মাঝে বেরিয়েছে সরু কমন প্যাসেজ, যেগুলি পুর-নথিতে নেই। কিন্তু স্থানীয়রা এ সব কাঁচা রাস্তা পাকা করার আবেদন জানিয়ে থাকেন। পাশাপাশি, সেখানে নিকাশি ব্যবস্থা, পানীয় জল ও আলোর খুঁটি বসানোর দাবিও ওঠে। কিন্তু পুরসভার নথিতে অস্তিত্ব না থাকায় প্রায়ই আইনি জটিলতায় পড়তে হয়। তবু এত দিন পুরসভা নাগরিক স্বার্থে সেই রাস্তা পাকা করত, পরিষেবা দিত এবং পরে সেটিকে নিজেদের রেকর্ডে অন্তর্ভুক্ত করত।

এই প্রেক্ষিতেই নতুন নিয়ম চালু হয়েছে। ওই কর্তা বলেন, “এসব ক্ষেত্রে রাস্তা পাকা করা, নিকাশি তৈরি, পানীয় জল ও বিদ্যুতের খরচ বহন করতে হয় পুরসভাকে। অথচ সেই জায়গার কোনও আইনি স্বীকৃতি ছিল না। তাই এককালীন উন্নয়ন ফি ধার্য করা হয়েছে, যাতে পরিষেবার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংস্থান হয়।” অফিসাররা আরও জানাচ্ছেন, অনেক ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট জমির মালিকপক্ষ রাস্তার জন্য প্রয়োজনীয় অংশ পুরসভাকে দান করে দেন। এ বার থেকে এমন প্রক্রিয়ার পাশাপাশি উন্নয়ন ফি জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, এতে নাগরিক পরিষেবা নিশ্চিত করা সহজ হবে। সব মিলিয়ে, কলকাতার বিস্তৃত সংযুক্ত অঞ্চলে কাঁচা রাস্তার ধারে বাড়ি তুলতে এখন থেকে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হবে। তবে পুরসভার দাবি, এই উদ্যোগের ফলে দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত বহু এলাকা অবশেষে পাবে আলো, জল, নিকাশি এবং পাকা রাস্তার নিশ্চয়তা।

KMC FirhadHakim
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy