কলকাতা ও তার আশপাশের এলাকায় বেআইনি কল সেন্টার খুলে সহায়তা দেওয়ার নাম করে দেশি ও বিদেশি নাগরিকদের কাছ থেকে হাতানো হয়েছে কোটি কোটি টাকা— এমন অভিযোগ নতুন নয়। বিশেষত, করোনার পর থেকে এমন প্রতারণার ঘটনা বেড়েছে। পুলিশ মাঝেমধ্যে তল্লাশি চালিয়ে এমন বেআইনি কল সেন্টার বন্ধ করলেও শহরের আনাচকানাচে সেগুলি চলছে বলে অভিযোগ। গত পাঁচ বছরে কলকাতা পুলিশ এলাকার কোথায় কোথায় বেআইনি কল সেন্টার খুলে বিদেশি নাগরিকদের প্রতারণা করা হয়েছে, এ বার থানাগুলির কাছে সেই হিসাব চাইল লালবাজার।
গত সপ্তাহে লালবাজারের তরফে থানাগুলির কাছে ওই হিসাব চাওয়ার পাশাপাশি মামলার বিবরণ পাঠাতেও বলা হয়েছে। কোনও বেআইনি কল সেন্টারের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়ে থাকলে তদন্ত বর্তমানে কোন পর্যায়ে আছে, জানাতে বলা হয়েছে তা-ও। সূত্রের দাবি, চলতি সপ্তাহেই থানাগুলি এই হিসাব পাঠিয়েছে লালবাজারে।
অভিযোগ উঠেছিল, রীতিমতো অফিস খুলে বসে সেখান থেকে বিদেশি নাগরিকদের ফোন করে প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিত জালিয়াতেরা। এ ভাবে তাঁদের কম্পিউটারের দখল নিয়ে সর্বস্বান্ত করত। বিদেশ ঘুরে সেই টাকা এসে পৌঁছত শহরের প্রতারকদের হাতে। আমেরিকান গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত কয়েক বছরে এমন একাধিক কল সেন্টারে হানা দিয়েছে কলকাতা পুলিশ। গ্রেফতারও করা হয় কয়েক জনকে।
লালবাজার জানিয়েছে, শহরের বুকে থাকা বেআইনি কল সেন্টারের বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযান চলে। কিন্তু অভিযোগ, পুলিশ ব্যবস্থা নিলেও বেশ কিছু এলাকা বেআইনি কল সেন্টারের ‘হাব’-এ পরিণত হয়েছে। এক পুলিশকর্তার অভিযোগ, এর পিছনে রয়েছে স্থানীয় থানার একাংশের মদত। মাঝেমধ্যে অভিযান চললেও তা যথেষ্ট নয় বলে দাবি পুলিশেরই একটি অংশের। পুলিশের এক আধিকারিক জানান, কোথাও বেআইনি কল সেন্টার চলার খবর পেলেই সংশ্লিষ্ট থানাকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। কারণ, এর জন্য বিদেশের মাটিতে দেশের এবং কলকাতার সুনাম নষ্ট হচ্ছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)