Advertisement
E-Paper

‘জোর করে জরিমানা, লিখিত চিঠি ছাড়া চালকের লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত নয়’, পুলিশকে নির্দেশ হাই কোর্টের

বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের বেঞ্চ রায় দিয়েছে, ট্রাফিক পুলিশ কারও ড্রাইভিং লাইসেন্স সাসপেন্ড বা বাতিল করতে পারবে না। সেই অধিকার রয়েছে শুধুমাত্র লাইসেন্স কর্তৃপক্ষের।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২৫ ১৯:৩৪

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

কোনও গাড়ির চালককে জোর করে জরিমানা দিতে বাধ্য করা যাবে না। শুধুমাত্র সন্দেহের ভিত্তিতে ড্রাইভিং লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করতে পারবে না পুলিশ। ড্রাইভিং লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করলে লিখিত প্রমাণ বা কারণ জানাতে হবে। এমনকি ঘটনাস্থলে কোনও ব্যক্তির লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করলে অস্থায়ী অনুমোদনপত্র (অ্যাকনলেজমেন্ট স্লিপ) দিতে হবে পুলিশকে। এক পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে টাকা নেওয়ার অভিযোগের মামলার রায়ে বৃহস্পতিবার এ কথা জানাল কলকাতা হাই কোর্ট।

বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের বেঞ্চ রায় দিয়েছে, ট্রাফিক পুলিশ কারও ড্রাইভিং লাইসেন্স সাসপেন্ড বা বাতিল করতে পারবে না। সেই অধিকার রয়েছে শুধুমাত্র লাইসেন্স কর্তৃপক্ষের। ওই মামলায় বিচারপতি চট্টোপাধ্যায়ের রায়— ওই ট্রাফিক সার্জেন্ট আইন মেনে কাজ করেননি। তিনি আইনজীবীর লাইসেন্স ফেরত দিয়েছেন। তাই আদালত তাঁকে কড়া শাস্তি দিচ্ছে না। আপাতত তাঁকে সতর্ক করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে ওই পুলিশ অফিসারকে আইন মেনে কাজ করতে হবে। গাড়িচালকদের সঙ্গে ভদ্র ভাবে এবং পেশাদারিত্বের আচরণ করতে হবে।

আদালত আরও জানিয়েছে, লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করলে অবশ্যই স্লিপ দিতে হবে। একতরফা ভাবে গাড়ির চালকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা যাবে না। জোর করে জরিমানা আদায় করা যাবে না। চালককে বক্তব্য জানানোর সুযোগ দিতে হবে। ওই মামলায় রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর এবং রাজ্য পুলিশের ডিজিকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। হাই কোর্ট জানায়, এই রায়ের প্রতিলিপি ওই দুই আধিকারিককে পাঠাতে হবে। তাঁর যেন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেন। রাজ্যকে আদালত জানিয়েছে, সব ট্রাফিক অফিসারদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। বলতে হবে তাঁরা যেন আইন সঠিক ভাবে জানেন এবং তা মেনে চলেন।

বিচারপতি চট্টোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, মোটর ভেহিকেল আইন (১৯৮৮) অনুযায়ী সন্দেহের বশে কারও লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করা যাবে না। এমনকি ট্রাফিক পুলিশ কারও লাইসেন্স সাসপেন্ড বা বাতিল করতে পারে না। ওই আইনের ধারা ২০৬(৪) অনুয়ায়ী, যদি পুলিশ অফিসার নিশ্চিত হন যে চালক আইন ভেঙেছেন, তখনই লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করতে পারেন। প্রসঙ্গত, গত বছর ২৬ মার্চ গ্রাম থেকে কলকাতার উদ্দেশে যাচ্ছিলেন হাই কোর্টের আইনজীবী শুভ্রাংশু পান্ডা। তাঁর বক্তব্য, খিদিরপুর রোড এবং এজেসি বসু রোডের সংযোগস্থলে তাঁর গাড়ি থামিয়ে দেন ট্রাফিক সার্জেন্ট পলাশ হালদার। আইনজীবীর দাবি, ওই পুলিশ অফিসার তাঁকে ১০০০ টাকা জরিমানা নগদে দিতে বলেন।

শুভ্রাংশু নগদের বদলে অনলাইনে জরিমানা দিতে চান। এর পরেই ওই পুলিশ অফিসার তাঁর ড্রাইভিং লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করেন। এবং কোনও অস্থায়ী স্লিপ বা রসিদও দেননি। ওই পুলিশের অফিসারের বক্তব্য ছিল, আইনজীবী ঘণ্টায় ৭৭ কিমি গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। ওই জায়গার সর্বোচ্চ সীমা ছিল ৬০ কিমি। ওই ঘটনায় পুলিশ অফিসারের আইন না মানার অভিযোগ তোলেন আইনজীবী। পরে অনলাইনে তাঁকে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে বার্তা পাঠানো হয়। অভিযোগ, ওই একই দিনে আরেক আইনজীবীকে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়। প্রথমে জরিমানা দিতে অস্বীকার করায় গাড়ির চাবি ওই পুলিশ অফিসার তুলে নিয়েছিলেন। পরে টাকা দিয়ে গাড়ির চাবি ফেরত পান ওই আইনজীবী।

Calcutta High Court Kolkata Police Kolkata Traffic Police Driving License Traffic Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy