Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Dead body recovered

অতিথিশালায় দেহ উদ্ধারের ঘটনায় ধৃত এক, আটক বান্ধবী

বুধবার মাঝরাতে সল্টলেকের ওই অতিথিশালা থেকে রনি দত্ত নামে পুরুলিয়ার ঝালদার বাসিন্দা এক যুবকের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘর থেকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তাঁর বান্ধবীকেও।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২২ ০৬:৪৫
Share: Save:

সল্টলেকের এফই ব্লকের একটি অতিথিশালা থেকে এক যুবকের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় রহস্য দানা বেঁধেছিল। তদন্তে নেমে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করছে, ঘটনার পিছনে মৃতের বান্ধবী এবং আর এক যুবকের প্রচ্ছন্ন মদত রয়েছে। ওই যুবককে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পরে শুক্রবার রাতে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতের নাম অরিজিৎ পাত্র। তাঁর বাড়ি কোন্নগরে। পাশাপাশি, হাসপাতালে ভর্তি মৃতের বান্ধবীকেও আটক করা হয়েছে। তাঁর বয়ান রেকর্ড করেছে পুলিশ। ওই তরুণী এবং ধৃত অরিজিতের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করারই ইঙ্গিত মিলেছে তদন্তকারীদের তরফে।

বুধবার মাঝরাতে সল্টলেকের ওই অতিথিশালা থেকে রনি দত্ত নামে পুরুলিয়ার ঝালদার বাসিন্দা এক যুবকের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘর থেকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তাঁর বান্ধবীকেও। তাঁর একটি হাত ভেঙেছিল। পরে পুলিশ জানতে পারে, ওই সন্ধ্যায় রনি এবং তাঁর বান্ধবীর মধ্যে গোলমাল হয়। সেই সময়ে ধাক্কাধাক্কিতে মাটিতে পড়ে হাতের হাড় ভাঙে ওই তরুণীর। রনির পরিবারের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর বান্ধবী এবং ধৃত অরিজিতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলা রুজু করেছে পুলিশ।

তবে ঠিক কী নিয়ে রনি এবং তাঁর বান্ধবীর মধ্যে গোলমাল, তা তদন্তকারীরা খোলসা করতে না চাইলেও তাঁদের প্রাথমিক দাবি, ঘটনার পিছনে ত্রিকোণ প্রেমের গল্প রয়েছে। দু’মাস ধরে রনির সঙ্গে তাঁর বান্ধবী লিভ-ইন করলেও সম্প্রতি তাঁর সঙ্গে ফেসবুকে আলাপ হয় অরিজিতের। দু’জনের মধ্যে সম্পর্কও তৈরি হয়। তরুণীর জন্ম ও বেড়ে ওঠা কানাডায় হলেও তাঁর পৈতৃক বাড়ি কোন্নগরে। তাঁরা সেখানকার আদি বাসিন্দা। তবে তরুণীর পরিবার বহু বছর কানাডায় রয়েছে। তাঁর বয়ান নথিভুক্ত করার সময়ে পুলিশ জেনেছে, মা-বাবার আশ্রয় ছেড়ে স্বাধীন জীবন বেছে নিতে তরুণী কলকাতায় চলে আসেন। এখানে থাকেন তাঁর দাদা। যাঁর মাধ্যমে সল্টলেকের এফই ব্লকের অতিথিশালায় ঘর ভাড়া নিয়েছিলেন তরুণী এবং রনি। ইন্টারনেটে গেম খেলার সুবাদে রনির সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল তরুণীর। সম্পর্ক প্রেমের দিকে গড়ায়। সম্প্রতি অরিজিৎ আসেন ওই তরুণীর জীবনে।

বৃহস্পতিবার পুলিশ জানিয়েছিল, বুধবার রাতে অরিজিৎ ওই অতিথিশালায় এসেছিলেন। সেখানে তিন জন মিলে মদ্যপান করেন। তরুণীকে উদ্ধার করার সময়ে তিনিও মত্ত অবস্থায় ছিলেন। তদন্তকারীরা আরও জানিয়েছেন, ঘর থেকে প্রচুর মদের বোতল ও খাবারের প্যাকেট মিলেছে। এ-ও জানা গিয়েছে, যে দু’টি ঘরে রনি এবং তাঁর বান্ধবী থাকতেন, সেগুলি অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় ছিল।

তদন্তকারীরা জানান, জেরায় অরিজিৎ দাবি করেছেন, তিনি মাত্র দশ মিনিট ওই অতিথিশালায় ছিলেন। তাঁর আরও দাবি, সেখানে যে রনি রয়েছেন, তা তিনি জানতেন না। অতিথিশালার কেয়ারটেকারের থেকে পুলিশ জেনেছে, ওই যুবক পৌঁছনোর আগে থেকে রনি এবং তাঁর বান্ধবীর মধ্যে গোলমাল চলছিল। অরিজিৎ পৌঁছনোর পরে তা আরও বাড়ে। এর পরেই অতিথিশালা থেকে ওই তরুণীর দাদাকে ফোন করে ঘটনার খবর দেওয়া হয়। তরুণীর দাদা তাঁর গাড়ির চালককে অতিথিশালায় পাঠালে তিনি গিয়ে রনির ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। এর পরে সকলে রনির দেহ নামিয়ে পুলিশে খবর দেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dead body recovered Salt Lake
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE