Advertisement
E-Paper

গেছো ‘দাদা’ না ‘ভূত’! বাঁশদ্রোণীর বৃদ্ধার নালিশে বিপাকে পুলিশ

বাঁশদ্রোণী থানা এলাকার বিবেকানন্দ পার্কের বাসিন্দা তনুশ্রী দে অভিযোগ করছিলেন, কেউ মুখোশ পরে তাঁর বাড়ির সামনের নারকেল গাছে বসে থাকছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২০:৩৮
গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

গেছো ‘দাদা’ না ‘ভূত’, এ নিয়ে বড়ই বিপদে বাঁশদ্রোণী থানার পুলিশ! বার বার হানা দিয়েও হদিশ পাওয়া যাচ্ছে না ‘কালপ্রিট’-এর। কিন্তু থানার মান-সম্মান রাখতে হেস্তনেস্ত চাইছেন মরিয়া পুলিশকর্মীরা।

বেশ কয়েক দিন ধরেই বাঁশদ্রোণী থানা এলাকার বিবেকানন্দ পার্কের বাসিন্দা তনুশ্রী দে অভিযোগ করছিলেন, কেউ মুখোশ পরে তাঁর বাড়ির সামনের নারকেল গাছে বসে থাকছে। সুযোগ বুঝে রাতের অন্ধকারে উৎপাত করছে বাড়িতে। কখনও বাড়িতে ঢিল মারছে। কখনও বাড়ির জলের পাইপ বা অন্য কোনও জিনিসপত্র ভেঙে নষ্ট করছে!

বছর দুয়েক আগে তনুশ্রীদেবী একটি স্কুলের অশিক্ষক কর্মচারীর চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন। সেই সময়েই মারা যান তাঁর স্বামী। সন্তান-সন্ততি কেউ নেই। প্রায় আড়াই কাঠা জমির ওপর দোতলা বাড়িতে একাই থাকেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, গত তিন মাস ধরে চলছে ওই উৎপাত। কখনও কুকুর, কখনও বেড়ালের মুখোশ পরে কেউ এক জন বসে থাকছে বাড়ির সামনের গাছে। আর ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে ক্রমাগত। তনুশ্রী দেবীর কথায়, ‘‘পাড়া-পড়শিদের বলেছিলাম। তাঁরা কোনও বিহিত করতে পারেননি। তার পর থানায় যাই।” বছর বাষট্টির তনুশ্রীদেবী জানান, গত শনিবার ১৯ সেপ্টেম্বর পুলিশ এসেছিল তাঁর বাড়িতে তদন্ত করতে। বৃদ্ধার অভিযোগ, ‘‘পুলিশ সব দেখে বলে, ভুতুড়ে কারবারের তদন্ত করতে পারবে না তারা। ভূত ধরা তাদের কাজ নয়।”

আরও পড়ুন: কৃষক ইস্যুতে তপ্ত টুইট-যুদ্ধ, সাংবাদিক বৈঠক ডেকে তোপ ধনখড়ের

বৃদ্ধার অভিযোগ, ভূত-প্রেত নয়, এলাকার কেউ পরিকল্পনা করেই তাঁকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। তিনি ওই বাড়িতে একা থাকেন। তাঁ কথায়, ‘‘নিকট আত্মীয় বলতে এক ভাই এবং ভাইয়ের ছেলে। আমার বাড়িটা হাতাতেই এই সব উৎপাত।”

আরও পড়ুন: গত তিন বছরে ভারত সীমান্তে দ্বিগুণ শক্তি বাড়িয়েছে চিন, বলছে রিপোর্ট

পুলিশ ‘ভূত’ বলে প্রথমে উড়িয়ে দিলেও, হাল ছাড়তে নারাজ বৃদ্ধা। গত কয়েক দিন ধরে এলাকার ক্লাব থেকে শুরু করে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের কাছে গিয়েছেন তিনি। প্রাক্তন কাউন্সিলর এবং ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটর চয়ন ভট্টাচার্যের কাছেও যান। সকলেই বিষয়টি নিয়ে থানার সঙ্গে কথা বলেন। চয়নবাবু এ দিন বলেন, ‘‘সকালে কাঁদতে কাঁদতে বৃদ্ধা আসেন আমার কাছে। আমি সব শুনে থানাকে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করি।”

সূত্রের খবর, বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন পেয়ে ফের নড়েচড়ে বসে বাঁশদ্রোণী থানার পুলিশ। এ দিন ফের আধিকারিকরা ওই বৃদ্ধার বাড়িতে যান। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রায় এক বছর ধরে একটি পরিবার ভাড়া ছিল ওই বৃদ্ধার বাড়িতে। সেই পরিবারটি চলে যাওয়ার পর থেকেই এই উৎপাত শুরু হয়েছে বলে পুলিশকে বৃদ্ধা জানিয়েছেন। ওই পরিবার ভাড়া থাকাকালীন বৃদ্ধার অভিযোগ ছিল যে, বাইরের লোকজন এসে নেশার আসর বসাত বাড়িতে। সে জন্যই ওই পরিবারকে উঠে যেতে বলেন তিনি।

এ দিন পুলিশ গোটা বাড়ির ভিডিয়োগ্রাফি করে। কথা বলে বৃদ্ধার আত্মীয়দের সঙ্গেও। বৃদ্ধা বলেন, ‘‘পুলিশ অফিসার আজ নিশ্চিত করেছেন যে, এমন উৎপাত আর হবে না।” বৃদ্ধাকে আশ্বস্ত করে এলেও পুলিশ নিজেই এখনও অন্ধকারে। কড়া নজরদারি রাখা হয়েছে বৃদ্ধার বাড়িতে। এক পুলিশ আধিকারিকের কথায়, ‘‘যেই হোক, ভূত বা গেছো দাদা, এর একটা বিহিত করেই ছাড়ব।”

Police Woman Kolkata Police Ghost
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy