Advertisement
E-Paper

গুদামের তালা ভেঙে চুরি ৬০ হাজার টাকার আলু

সোমবার রাত পর্যন্ত আলু উদ্ধার হয়নি। চোরেরা আলু-পেঁয়াজের বস্তা সরালেও গুদামে রাখা অন্য জিনিসে সে ভাবে হাত দেয়নি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:০১
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

দাম বাড়তেই সাবধান হয়েছিলেন শাসনের মহম্মদ আসানুর ইসলাম। কিন্তু তাতেই বা শেষরক্ষা হল কই! গুদামের তালা ভেঙে আলু নিয়ে পালিয়ে গেল চোরেরা। তা-ও আবার একটু-আধটু নয়, পাক্কা ৩০ বস্তা! সঙ্গে এক বস্তা পেঁয়াজ।

বাজারে দু’টিই এখন মহার্ঘ। এই দুই পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতেও মিম-এর ছড়াছড়ি। চলছে রাজনৈতিক তরজাও। এই অবস্থায় চুরি যাওয়া আলু নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে এলাকায়।

আসানুরের দোকান ও গুদাম শাসন থানা থেকে মেরেকেটে ৫০০ মিটার দূরে। এত টাকার আলু চুরি যাওয়ায় মুষড়ে পড়েছেন তিনি। নালিশ ঠুকেছেন থানাতেও। তবে সোমবার রাত পর্যন্ত আলু উদ্ধার হয়নি। চোরেরা আলু-পেঁয়াজের বস্তা সরালেও গুদামে রাখা অন্য জিনিসে সে ভাবে হাত দেয়নি।

শাসনের আমিনপুর বাজারে পাইকারি মুদির দোকান আসানুরের। সঙ্গে আলু-পেঁয়াজেরও কারবার রয়েছে তাঁর। অন্য সময়ে দোকানের বাইরে আলু-পেঁয়াজের বস্তা রাখেন। রাতে তার উপরে ত্রিপল চড়িয়ে বাড়ি যান। আসানুর জানান, সে বস্তা কেউ কখনও ছুঁয়েও দেখেনি। তার উপরে সামনেই থানা। তা ছাড়া, বাজারেও নৈশ প্রহরীরা থাকেন। সুরক্ষার এত রকম ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও আলু চুরি যাওয়ায় হতভম্ব অন্য দোকানিরা। আতঙ্কে তাঁরাও। নৈশ প্রহরী নাকি রবিবার রাতে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। তাঁর সেই দাবি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

খোলা বাজারে জ্যোতি আলু এখন ৪৫ টাকা কেজি দরে বিকোচ্ছে। পেঁয়াজ ৬০-৬৫। আলু হাফ সেঞ্চুরি হাঁকাতে পারে ভেবেই কিছুটা সাবধান হয়েছিলেন আসানুর। রবিবার রাতে প্রায় ৩০ বস্তা আলু মজুত ছিল তাঁর কাছে। সে সব তিনি দোকানের পাশে গ্রিল দেওয়া গুদামে ভরে দেন। সঙ্গে অন্যান্য জিনিসপত্রও সেই গুদামে ছিল। গুদাম তালাবন্ধ করে বাড়ি চলে যান আসানুর।

আসানুরের কর্মচারী মহম্মদ জামাল ইসলাম জানান, ওই দোকানে সব সময়ে ৬০-৬৫ বস্তা আলু থাকে। ৮-১০ বস্তা পেঁয়াজও থাকে। গত কয়েক দিন ধরে আলু-পেঁয়াজের দাম নাগাড়ে বাড়তে থাকায় বিক্রি কিছুটা কমেছিল। সেই জন্য আলু-পেঁয়াজ কিছুটা কম ছিল রবিবার। আলুর দাম বাড়ছে দেখে গত কয়েক দিন ধরে সেগুলি গুদামে ভরে রাখছিলেন আসানুর। সেই মতো ৩০ বস্তা আলু ও এক বস্তা পেঁয়াজ ওই গুদামে ভরে তালা দিয়ে রাখেন তিনি।

সকালে দোকানে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায় আসানুরের! দেখেন, গুদামের গ্রিলের গেটের তালা ভাঙা। দরজা হাট খোলা। বুঝতে পারেন, যা আশঙ্কা ছিল, তা-ই হয়েছে। গুদামে ঢুকে দেখেন, আলুর সব ক’টি বস্তাই উধাও। নেই পেঁয়াজের বস্তাটিও। লোকমুখে খবর ছড়াতে হাজির হন অন্য ব্যবসায়ীরাও। খবর দেওয়া হয় থানায়। পুলিশ এসে আসানুরের সঙ্গে কথা বলে। থানাতেও অভিযোগ দায়ের হয়।

এক-একটি বস্তায় ৫০ কেজি আলু থাকে। বর্তমানে এক বস্তা আলুর পাইকারি দাম দু’হাজার টাকা। সব মিলিয়ে ৬০ হাজার টাকার আলু চুরি গিয়েছে আসানুরের। সঙ্গে আড়াই হাজার টাকার পেঁয়াজও। চোরেরা যে এমন কাণ্ড ঘটাতে পারে, তা ভাবতেই পারছেন না এলাকার ব্যবসায়ীরা। কেউ কেউ বলছেন, “বেশ রসিক এবং ভদ্র চোর বলতে হবে! শুধু আলু আর পেঁয়াজই সরিয়েছে। সুযোগ থাকলেও অন্য জিনিসে হাত দেয়নি।” পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে, কাছাকাছি কোনও বাজারে চোরাই আলু-পেঁয়াজ হাতবদল হয়েছে কি না।

Crime Theft Potato
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy