E-Paper

শহরে পর পর খুন ও লুটের ঘটনায় প্রশ্নে নিরাপত্তা ব্যবস্থা

লালবাজারের দাবি, শহরের আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়া কিংবা নিরাপত্তা ব্যবস্থা বেআব্রু হওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়। পর পর যত অপরাধ ঘটেছে, সবেতেই পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৭:৪৮
প্রশ্ন উঠছে, শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে।

প্রশ্ন উঠছে, শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। —প্রতীকী চিত্র।

পার্ক স্ট্রিটের একটি বেসরকারি অফিসে ঢুকে মারধর করে কয়েক লক্ষ টাকা ডাকাতির ঘটনা ঘটেছিল মঙ্গলবার রাতে। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই বৃহস্পতিবার রাতে ইএম বাইপাসের ধারে ধাবার কাছে এক তরুণীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করার ঘটনা ঘটল। তার আগে গল্ফ গ্রিন থানা এলাকায় দু’টি খুনের ঘটনা ঘটে। যার মধ্যে একটিতে দেহ তিন টুকরো করে বিভিন্ন জায়গায় ফেলে যায় অপরাধী। মাসখানেকের ব্যবধানে শহরে পর পর খুন এবং ডাকাতির ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, শহরের নিরাপত্তা
ব্যবস্থা নিয়ে।

এর আগে নারকেলডাঙায় দিনে গুলি চালিয়ে কয়েক লক্ষ টাকা নিয়ে চম্পট দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। তার ঠিক কয়েক দিন আগে ওই একই কায়দায় কড়েয়ার একটি শপিং মলের কাছে কয়েক লক্ষ টাকা লুট হয়। মাস কয়েক আগে কসবায় শাসক দলের স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি সুশান্ত ঘোষের উপরে দুষ্কৃতী হামলা প্রশ্ন তুলেছিল শহরের নিরাপত্তার। এর পরেও তরুণীকে কুপিয়ে খুন ও পর পর লুট বা ডাকাতির ঘটনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা বেআব্রু হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ। এ সবের পাশাপাশি শহর থেকে উদ্ধার হল অস্ত্র। গ্রেফতার করা হয়েছে ভিন‌্ রাজ্যের দুষ্কতীদের।

তবে লালবাজারের দাবি, শহরের আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়া কিংবা নিরাপত্তা ব্যবস্থা বেআব্রু হওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়। পর পর যত অপরাধ ঘটেছে, সবেতেই পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছে। যাতে তাদের সাজা হয়, সে জন্য তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা পুলিশ করছে।

কিন্তু পুলিশের নিচুতলার একাংশের মতে, ভিন‌্ রাজ্য থেকে শহরে এসে আস্তানা গড়ে তুলছে দুষ্কৃতীরা। অনেক সময়ই দেখা যাচ্ছে, এই সব দুষ্কৃতীদের সম্পর্কে খবর পাচ্ছেন না পুলিশকর্মীরা। তাঁদের দাবি, বর্তমানে কর্মী সঙ্কটে ভুগছে কলকাতা পুলিশ। এক দিকে, গত কয়েক বছরে কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে কলকাতা পুলিশ এলাকা। অন্য দিকে, বাহিনী থেকে অনেকে অবসর নিলেও সেই জায়গা পূরণ করতে নতুন নিয়োগ হচ্ছে না। ফলে নিচুতলার পুলিশকর্মীদের মধ্যে এলাকায় ঘুরে তথ্য সংগ্রহে এবং নজরদারিতে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে বলে পুলিশের একাংশের দাবি।

পুলিশের অন্য অংশের অভিযোগ, কর্মীর অপ্রতুলতার জন্যে থানা বা গোয়েন্দা বাহিনী অপরাধ ঠেকানোর বদলে অপরাধীদের ধরতেই স্বাচ্ছন্দ্য। আগে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পুলিশ কিয়স্ক থাকত। যেখান থেকে ২৪ ঘণ্টা, বিশেষ করে রাতে পুলিশ নজরদারি চালাত। এখন সে সব উঠে গেছে। বদলে পুলিশকর্মীরা থানা থেকে গাড়ি কিংবা মোটরবাইক নিয়ে এলাকায় টহল দেন। সেই ফাঁকে দুষ্কৃতীরা ডাকাতি করে পালাচ্ছে, কখনও বা গুলি চালিয়ে চম্পট দিচ্ছে।

বৃহস্পতিবার রাতে তরুণীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করার ঘটনায় তাঁকে ধাওয়া করে প্রগতি ময়দান থানা এলাকায় আসে আততায়ী। সেখানে পুলিশ না থাকলেও প্রচুর মানুষ ছিলেন। পুলিশের অবশ্য দাবি, তারা খবর পাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। অভিযুক্ত তিন জনকে আটক করে। জখম তরুণীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এক পুলিশকর্তার কথায়, এটি পারিবারিক ঝামেলা। কয়েক মিনিটের মধ্যে ঘটনাটি ঘটেছে। ফলে কেউ বুঝে ওঠার সুযোগ পাননি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Safety Security Murder Loot

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy