Advertisement
E-Paper

মিড-ডে মিল বিতরণে বিধি মেনে প্রস্তুতি স্কুলে

এ বার শুধু মিড-ডে মিলের সামগ্রীই নয়, প্রাক্ প্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের জুতো এবং পঞ্চম-ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়াদের স্কুলব্যাগ দেওয়া হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ মে ২০২১ ০৬:২৭
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের আবহে আজ, সোমবার থেকে কলকাতার বেশির ভাগ স্কুলে শুরু হচ্ছে মিড-ডে মিলের সামগ্রী দেওয়ার কাজ। তিন দিন ধরে চলবে এই প্রক্রিয়া। তবে এ বার শুধু মিড-ডে মিলের সামগ্রীই নয়, প্রাক্ প্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের জুতো এবং পঞ্চম-ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়াদের স্কুলব্যাগ দেওয়া হবে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে কী ভাবে কোভিড-বিধি মেনে এই মিড-ডে মিলের সামগ্রী দেওয়া হবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে স্কুলগুলি। তবে যে সব স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা হাজারেরও বেশি, সেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে তিন দিনের মধ্যে মিড-ডে মিলের সামগ্রী বিতরণ করা কতটা সম্ভব, সেই প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষকদের একাংশ।

শিক্ষা দফতরের এক কর্তা অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে দূরত্ব-বিধি মেনে মিড-ডে মিলের সামগ্রী দিতে গিয়ে যদি অতিরিক্ত দিনের প্রয়োজন হয়, তবে সেই অতিরিক্ত দিন ধার্য করতে হবে। কিন্তু কোনও ভাবেই স্কুলে অভিভাবকদের ভিড় হতে দেওয়া যাবে না। সেই সঙ্গে অভিভাবকেরা যেন কোনও পড়ুয়াকে সঙ্গে করে স্কুল নিয়ে না আসেন, তা-ও দেখার জন্য শিক্ষকদের বলা হয়েছে। মিড-ডে মিল দেওয়ার আগে স্কুল চত্বর যাতে ভাল ভাবে জীবাণুমুক্ত করা হয়, সে বিষয়েও খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষদের।

গভর্নমেন্ট স্পনসর্ড মাল্টিপারপাস স্কুল ফর বয়েজ, টাকি হাউসের প্রধান শিক্ষিকা স্বাগতা বসাক জানিয়েছেন, তাঁদের স্কুলে দেড় হাজারেরও বেশি পড়ুয়া। তাই তিন দিন ধরে দূরত্ব-বিধি মেনে মিড-ডে মিল বিতরণ করা একটা চ্যালেঞ্জ। তাই তাঁরা বেশ কিছু পরিকল্পনা করেছেন। স্বাগতাদেবী বলেন, “এ বার হয়তো এমন অনেক পড়ুয়া থাকবে, যাদের অভিভাবকদের মধ্যে কেউ কেউ করোনা আক্রান্ত। সে ক্ষেত্রে ওই পরিবারের কোনও পরিজন যদি সঙ্গে করে কোনও প্রমাণপত্র আনতে পারেন, তা হলে তাঁর হাতে মিড-ডে মিলের সামগ্রী দিয়ে দেওয়া হবে। কেউ আসতে না পারলে সেই পড়ুয়ার মিড-ডে মিলের সামগ্রী রেখে দেওয়া হবে।” স্বাগতাদেবী জানান, মিড-ডে মিলের সামগ্রীর সঙ্গে যেহেতু জুতো ও স্কুলব্যাগও বিতরণ করা হবে, তাই এ বার এই কাজের জন্য বেশি সংখ্যায় শিক্ষকদের প্রয়োজন। তবে সংক্রমণ এড়াতে স্কুলের শিক্ষকদের গণপরিবহণের বদলে নিজেদের গাড়ি বা কোনও ভাড়াগাড়িতে স্কুলে আসার পরামর্শ দিয়েছেন ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ।

অন্য দিকে, বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শাশ্বতী অধিকারী জানিয়েছেন, পরিবহণের অসুবিধার কথা মাথায় রেখে যে সব শিক্ষিকারা কাছাকাছি থাকেন শুধু তাঁদেরই মিড-ডে মিল বিতরণের জন্য স্কুলে আসতে বলা হয়েছে। শাশ্বতীদেবী বলেন, “যে সব শিক্ষিকারা দূর থেকে ট্রেনে বা বাসে করে আসেন, তাঁদের আসতে বারণ করা হয়েছে।” শাশ্বতীদেবী আরও জানান, তাঁদের স্কুলের ভবন অনেকটাই বড় বলে মিড-ডে মিল বিতরণের সময় এক জায়গায় অনেকের জড়ো হওয়ার আশঙ্কা প্রায় নেই বললেই চলে।

বেলতলা গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা অজন্তা মুখোপাধ্যায় আবার জানাচ্ছেন, তাঁদের মিড-ডে মিলের সামগ্রী বিতরণ করা হবে মঙ্গলবার থেকে। দূরত্ব-বিধি মানতে গিয়ে প্রয়োজনে বিতরণের দিনও বাড়াতে পারেন তাঁরা। অজন্তাদেবী বলেন, “সাধারণত মিড-ডে মিল যখন কোনও অভিভাবক নেন, তখন কোনও শিক্ষিকা ওই পড়ুয়ার নাম একটা খাতায় লিখে নেন এবং অভিভাবককে সেখানে সই করতে বলেন। কিন্তু এ বার দূরত্ব-বিধি মেনে চলার জন্য শিক্ষিকারা সেই খাতা একটু দূরে রেখে দেবেন। মিড-ডে মিলের সামগ্রী নিয়ে অভিভাবক ওই খাতায় সই করে চলে যাবেন।” তবে ওই স্কুলে এই বিতরণ কাজের জন্য কোন শিক্ষিকা কোন দিন স্কুলে আসবেন, সেই সংক্রান্ত রুটিন এখনও তৈরি করা হয়নি বলেই জানাচ্ছেন অজন্তাদেবী। কারণ স্কুলের কয়ের জন শিক্ষিকা অসুস্থ। তাই যে সব কর্মীরা মিড-ডে মিলের সামগ্রী স্কুলে পৌঁছে দেন, তাঁদেরও ওই বিতরণের কাজে সাহায্য করার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে অনুরোধ করা হয়েছে।

এ বার মিড-ডে মিলের সামগ্রী হিসেবে মার্চ ও এপ্রিলের মতোই চাল, আলু, ছোলা, সাবানের সঙ্গে ডাল, চিনি ও সয়াবিন দেওয়া হচ্ছে। প্রাক্ প্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত সব পড়ুয়াকে জুতো দেওয়ার জন্য কিছু দিন আগে অভিভাবকদের কাছ থেকে তাদের পায়ের মাপও জেনে নেওয়া হয়েছে। শিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, “অসুস্থতার জন্য বা যানবাহন না থাকার কারণে কোনও অভিভাবক না আসতে পারলে সেই সামগ্রী রেখে দেওয়া হবে। পরে তিনি সেই সামগ্রী স্কুল থেকে সংগ্রহ করে নিতে পারবেন।”

COVID-19
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy