নিজস্ব চিত্র।
কলকাতার দু’টি বেসরকারি এবং একটি সরকারি হাসপাতালে তিন খুদের জটিল অস্ত্রোপচার হল। এর ফলে দু’জন ফিরে পেল তাদের জীবন। অন্য এক নবজাতক পেল দৃষ্টিশক্তি।
বৃহস্পতিবার এসএসকেএম হাসপাতালে পাঁচ বছরের রাইজুল মোল্লার পিঠে অস্ত্রোপচার করে বার করা হল সূচ। বেশ কিছু দিন আগে বাড়িতেই খেলতে খেলতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়পুরের রাইজুলের পিঠে সূচ ঢুকে যায়। প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসার পর তাকে রেফার করা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। চিকিৎসকরা এক্স-রে করে দেখেন সূচটি শিরদাঁড়া এবং ফুসফুসের কাছে রয়েছে। চিকিৎসকদের মতে অস্ত্রোপচারের সময় ফুসফুস এবং শিরদাঁড়ার স্নায়ুর ক্ষতির আশঙ্কা ছিল। ওই সূচ শরীর থেকে বার করার সময় অতিরিক্ত রক্তপাতেরও আশঙ্কা ছিল। চিকিৎসক রিষভদেব পাত্রের কথায়, ‘‘সূচ বুকের আরও ভিতরে ঢুকে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। ঝুঁকিপূর্ণ অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে।’’
অন্য দিকে, মেদিনীপুরের ১১ মাসের অঞ্জলি দাস হৃদযন্ত্রের একাধিক সমস্যায় ভুগছিল। মেডিকা হাসপাতালে ওই খুদের অস্ত্রোপচার করেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, হার্ট বিশেষজ্ঞ এবং সিটিসিএসের চিকিৎসকরা। পরিবার সূত্রে খবর, জন্মের পাঁচ মাসের মধ্যেই অঞ্জলির সর্দি-কাশির সমস্যা বাড়ে। একাধিক চিকিৎসককে দেখানো হলেও কোনও ফল না পেয়ে অঞ্জলির পরিবার কলকাতায় চিকিৎসার জন্য আসেন। মেডিকা হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু হয়। পরীক্ষা করে দেখা যায় অঞ্জলি জটিল কনজেনিটাল হৃদরোগে আক্রান্ত। মহাধমনীর অবস্থান এবং দুই অলিন্দের মাঝে সমস্যা ছাড়াও আরও দু’টি সমস্যা ছিল তার। শিশুসাথী প্রকল্পের আওতায় তার অস্ত্রোপচার করা হয়। বৃহস্পতিবার চিকিৎসকেরা জানান ওই শিশু আপাতত সুস্থ রয়েছে।
জন্ম থেকেই দু’চোখে ছানি দু’মাসের এক শিশুর। পাশাপাশি হৃদযন্ত্র, মলদ্বার এবং মূত্রনালির সমস্যাতেও ভুগছিল শিশুটি। চলতি মাসের প্রথম দিকে প্রায় দৃষ্টিহীন ওই শিশুকে চিকিৎসার জন্য আনা হয় অ্যাপোলো হাসপাতালে। পরীক্ষা করে জানা যায়, ওই শিশু কনজেনিটাল টোটাল ক্যাটারাক্টে আক্রান্ত। চিকিৎসক দেবব্রত হালদার বলেন, ‘‘জন্ম থেকেই দু’চোখের ছানি শিশুটির দৃষ্টির বিকাশে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল।’’ অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। অন্যান্য শারীরিক সমস্যা অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে সাময়িক বাধা হয়ে দাঁড়ালেও পরে চোখের অস্ত্রোপচার করা হয়। চিকিৎসকের মতে, এত ছোট বয়সে চোখের বিকাশ ঠিক মতো হয় না। ফলে অস্ত্রোপচারেও কিছু জটিলতা থাকে। তবে অস্ত্রোপচারে দেরি হলে ‘ভিজুয়াল ফিক্সেশন’ অর্থাৎ নির্দিষ্ট দিকে দু’টি চোখের তাকানো বা দেখার ক্ষেত্রে সমস্যা হত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy