মাঝে শুধু চারটি থাম। তার এক পাশে শাসক তৃণমূলের বিধায়কেরা। অন্য পাশে বিজেপি বিধায়কেরা। একে অপরকে চোর বলে অভিহিত করে চলছে স্লোগান-যুদ্ধ। বুধবার বিকেলে এমনই নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী রইল বিধানসভা চত্বর।
১০০ দিনের কাজ-সহ একাধিক প্রকল্পে টাকা বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ তুলে, কেন্দ্রীয় ‘বঞ্চনা’র বিরুদ্ধে শুক্রবার বিধানসভা চত্বরে অম্বেডকর মূর্তির পাদদেশে বিক্ষোভ দেখানোর কর্মসূচি নিয়েছিলেন তৃণমূল বিধায়কেরা। সেই মতোই অবস্থানে বসে দীর্ঘ সময় ধরেই তাঁরা কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের উদ্দেশে স্লোগান দিচ্ছিলেন। ছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বিধায়কদের প্রত্যেকের পরনে ছিল কালো রঙের পোশাক।
ধর্মতলায় অমিত শাহের সভা শেষ হওয়ার পর বিজেপি বিধায়কদের নিয়ে হঠাৎই বিধানসভা চত্বরে আসেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পাল্টা স্লোগান দেওয়া শুরু করেন বিজেপি বিধায়কেরা। তৃণমূল যখন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের নাম করে ‘বিজেপির সবাই চোর’ বলে স্লোগান দিচ্ছে, সেই সময় পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নাম করে ‘তৃণমূলের সবাই চোর’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন বিজেপি বিধায়কেরা। তৃণমূল ‘চাকরি চোর, ডিএ চোর’ বলেও বিজেপির তরফে স্লোগান তোলা হয়। শাসক শিবির থেকেও ক্রমশ বাড়তে থাকে স্লোগানোর ঝাঁজ।
আরও পড়ুন:
দু’পক্ষের স্লোগান-যুদ্ধে কার্যত কান পাতা দায় হয়ে দাঁড়ায় বিধানসভা চত্বরে। শুভেন্দু অবশ্য বিধানসভায় এলেও দলীয় বিধায়কদের ধর্না কর্মসূচিতে যোগ দেননি। তিনি বিধানসভায় নিজের ঘরেই ছিলেন। বিধানসভার অভ্যন্তরে শাসক এবং বিরোধী দলের মধ্যে তর্কবিতর্ক চললেও, বিধানসভা চত্বরে এই ধরনের ঘটনা প্রায় নজিরবিহীন বলেই মনে করা হচ্ছে।
বিজেপি বিধায়কদের আচরণে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ওরা শুধু অসভ্যতা করতে জানে।” জাতীয় সঙ্গীত দিয়ে তৃণমূলের অবস্থান কর্মসূচি শেষ হয়। তৃণমূল বিধায়কেরা যখন বিধানসভা থেকে বেরোচ্ছেন, তখনও তাঁদের উদ্দেশে ‘চোর-চোর’ স্লোগান দেন বিজেপি বিধায়কেরা। তার পর বিজেপির অবস্থান কর্মসূচিও শেষ হয়।