E-Paper

এসআইআর বয়কট নয়, বিপন্নের পাশে লড়াইয়ের ডাক দীপঙ্কর-সেলিমদের

উৎসবের মরসুমের পরেই বাংলায় শুরু হতে চলেছে এসআইআর প্রক্রিয়া। বাম নেতৃত্বের বক্তব্য, বিহারে গত ২৫ জুন যখন ওই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, হাতের কাছে কোনও দৃষ্টান্ত ছিল না। বাংলার ক্ষেত্রে বিহারের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর সুযোগ থাকবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:৩৩
ভোটার তালিকার বিশেষ আমূল সংশোধন (এসআইআর) নিয়ে গন-কনভেনশনে বাম নেতৃত্ব। মৌলালি যুব কেন্দ্রে।

ভোটার তালিকার বিশেষ আমূল সংশোধন (এসআইআর) নিয়ে গন-কনভেনশনে বাম নেতৃত্ব। মৌলালি যুব কেন্দ্রে। —নিজস্ব চিত্র।

বয়কটের ডাক দিয়ে দূরে সরে গেলে হবে না। ভোটার তালিকার বিশেষ আমূল সংশোধনের (এসআইআর) সময়ে বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। বিহারের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সংবিধানে স্বীকৃত ভোটের অধিকার রক্ষা করতে ‘বড় লড়াই’য়ে নামতে হবে বাংলায়। এসআইআর প্রসঙ্গে গণ-কনভেনশন থেকে এই আহ্বানই উঠে এল বাম নেতৃত্বের তরফে।

সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের উদ্যোগে ‘এসআইআর: ভোটাধিকার, নাগরিকত্ব ও সংবিধানের উপরে আঘাত’ শীর্ষক কনভেনশনের আয়োজন হয়েছিল মৌলালি যুব কেন্দ্রে। সেখানেই বুধবার বিহারের এসআইআর এবং সে রাজ্যে ‘ভোটার অধিকার যাত্রা’র অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। সুপ্রিম কোর্টে এবং রাস্তায় কী ভাবে বিরোধীদের লড়াই চালাতে হয়েছে, সেই কাহিনি সামনে রেখে তাঁর বক্তব্য, ‘‘অনেকে মনে করছেন, এসআইআর বর্জন করা হচ্ছে না কেন? বর্জন বা বয়কট করে এসআইআর-এর ফর্‌ম জমা দেব না যদি বলি, তা হলে প্রথমেই ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ চলে যাবে। বিজেপি তো সেটাই চায়! এই দেশে দীর্ঘ দিন গণতন্ত্র আছে, সংবিধানটাও বেঁচে আছে। সংবিধানে স্বীকৃত, কোনও বৈষম্য ছাড়া ভোটের অধিকার আমাদের রক্ষা করতে হবে।’’

ভোটার তালিকার বিশেষ আমূল সংশোধন (এসআইআর) নিয়ে গন-কনভেনশনে বাম নেতৃত্ব। মৌলালি যুব কেন্দ্রে।

ভোটার তালিকার বিশেষ আমূল সংশোধন (এসআইআর) নিয়ে গন-কনভেনশনে বাম নেতৃত্ব। মৌলালি যুব কেন্দ্রে। —নিজস্ব চিত্র।

উৎসবের মরসুমের পরেই বাংলায় শুরু হতে চলেছে এসআইআর প্রক্রিয়া। বাম নেতৃত্বের বক্তব্য, বিহারে গত ২৫ জুন যখন ওই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, হাতের কাছে কোনও দৃষ্টান্ত ছিল না। বাংলার ক্ষেত্রে বিহারের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর সুযোগ থাকবে। বাম দলগুলিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যথাসম্ভব বুথে প্রতিনিধি (বিএলএ) রাখতে হবে। প্রান্তিক ও বিশেষত, পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য সহায়তার কাজ করতে হবে। দীপঙ্করের কথায়, ‘‘বাংলার আগামী নির্বাচন নিছক একটা নির্বাচন নয়। বড় লড়াই হবে। এসআইআর-এর বিপদ বুঝে প্রতিটা বিপন্ন মানুষের দাঁড়ান আপনারা।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘যদি ভাবেন ওর ভোট যাচ্ছে যাক, আমার ভোটটা তো ঠিক আছে, তা হলে কিছু দিন পরে আপনার ভোটটাও থাকবে না! ফ্যাসিবাদী শক্তি এ ভাবেই মানুষকে ভাগ করে নিজেরা এগোয়। সকলের ভোটাধিকারের দাবিতে আমাদের লড়াই।’’

একই সুরে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমও এসআইআর প্রক্রিয়ার সময়ে বাম কর্মী-সমর্থকদের সক্রিয় হওয়ার বার্তা দিয়েছেন। তাঁর মতে, ‘‘বিজেপি দ্বিতীয় বার কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সাংবিধানিক সব প্রতিষ্ঠানকে কুক্ষিগত করেছে। এখন নির্বাচন কমিশনকে ‘হাইজ়্যাক’ করেছে। ভোটাধিকারের সঙ্গে নাগরিকত্বের বিষয়টাকে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) মাধ্যমে যেটা করতে চেয়েছিল, সেটাই এসআইআর-এ করতে চাইছে।’’ সেলিমের আরও মন্তব্য, ‘‘বাংলায় একটা কথা আছে, ভিখ চাই না, কুকুর সামলাও! বিজেপির সরকার নানা রকম নথিপত্র জোগাড় করতে বলে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে ডালকুত্তা ছেড়ে দিয়েছে! যাতে আসল সব প্রশ্ন ছেড়ে মানুষ এটা নিয়েই ব্যতিব্যস্ত থাকে। শুধু আদালতের ভরসায় নয়, রাস্তায় নেমে আমাদের এই কুকুরকে বাঁধতে হবে!’’

কনভেনশনে বক্তা ছিলেন আরএসপি-র মনোজ ভট্টাচার্য, সিপিআইয়ের স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়, এসইউসি-র চণ্ডীদাস ভট্টাচার্য এবং লিবারেশনের ইন্দ্রাণী দত্তও। সভাপতিত্ব করেছেন লিবারেশনের রাজ্য সম্পাদক অভিজিৎ মজুমদার। এসআইআর সংক্রান্ত একটি পুস্তিকা প্রকাশের পাশাপাশি উৎসবের মরসুমেও ভোটাধিকার রক্ষা নিয়ে সর্বত্র প্রচার চালানো এবং সাংগঠনিক প্রস্তুতির ডাক দেওয়া হয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Special Intensive Revision CPM

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy