ফাইল চিত্র।
বিধানসভায় যাদের কোনও মুখ নেই, তারা এখন ‘পুনরুত্থানে’র কথা বলছে। খাতায়-কলমে তথা বিধায়ক-সংখ্যার বিচারে যারা রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল, তারা বিদ্রোহের আগুনে জল ঢেলে ঘর সামলাতে ব্যস্ত! এক কথায় সিপিএম ও বিজেপি শিবিরের ছবি এই মুহূর্তে এমনই। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য দু’পক্ষকেই কটাক্ষে বিঁধছে।
সদ্য অনুষ্ঠিত জোড়া উপনির্বাচনে আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে ভোটের ভাগ যৎসামান্য বেড়েছে বামেদের। বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে অবশ্য সেই ভাগ এক লাফে বেড়েছে ২৫%। এই ফলের পরে কি তাঁদের আত্মবিশ্বাস বেড়ে গিয়েছে? আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সোমবার সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘নিজের মুখেই আত্মবিশ্বাসী বললে কী এসে গেল? বাম কর্মী-সমর্থকদের আত্মবিশ্বাস আছে কি না, আমাদের আন্দোলন, কর্মসূচি দেখলেই বোঝা যাবে।’’ গুড ফ্রাইডে-র পরে ইস্টারের সময়ে উপনির্বাচনের ফল বেরিযেছে। সেই সূত্রে সেলিমের মন্তব্য, ‘‘ইস্টার মানে পুনরুত্থানের বার্তা। এই পুনরুত্থানেই আমরা নজর দিচ্ছি। বিজেপির সাম্প্রদায়িকতা এবং তৃণমূলের অপশাসনের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াই চলবে।’’ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন, বিজেপিই একমাত্র বিরোধী দল। বিধানসভায় সব লড়াই তাঁরাই করছেন। সেলিমের মতে, ‘‘কারা কোথায় কেমন লড়াই করছে, সবই জনসমক্ষে আছে। মানুষ সবই দেখছেন।’’
প্রায় একই সময়ে মুরলীধর সেন লেনে রাজ্য বিজেপির সদর দফতরে রাজ্য দলের মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য ‘সঙ্ঘবদ্ধ’ বিজেপির চেহারা ফিরিয়ে আনার কথা বলেছেন। উপনির্বাচনে বিজেপির বিপর্যয়ের পরে নানা জেলায় পদত্যাগের হিড়িক লেগেছে, সাংসদ বা রাজ্য নেতাদেরও কেউ কেউ ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন। শমীক এ দিন বলেন, ‘‘পদত্যাগের সংখ্যাটা যা বলা হচ্ছে, তার সঙ্গে একমত নই। তবে যা হচ্ছে, আমাদের মতো দলে নিশ্চয়ই অভিপ্রেত নয়। যারা এত দিন নানা প্রতিকূলতার মধ্যে দলের পতাকা নিয়ে কঠিন লড়াইয়ে থাকলেন, তাঁদের কেউ কেউ আবেগের বশে কণ্ঠস্বর উঁচু করে ফেললে তাকে বিদ্রোহ বলা ঠিক নয়। দল নিশ্চয়ই তাঁদের ক্ষোভের কারণ খুঁজবে। আত্মবিচ্যুতি শুধরে তাঁরা আবার দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত হবেন আশা করি, দলও তাঁদের সঙ্গে নিয়েই এগোবে।’’ গত লোকসভা ভোটে রাজ্য সাফল্য এবং বিধানসভা ভোটে ধাক্কা খাওয়ার পরে বিজেপি শিবিরের ছবি যে বদলে গিয়েছে, সেই সূত্রে শমীকের মন্তব্য, ‘‘সাকসেস হ্যাজ় মেনি ফাদার্স বাট ফেলিওর ইজ় অরফ্যান!’’
দুই বিরোধী পক্ষের উদ্দেশেই রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের কটাক্ষ, ‘‘শুভেন্দু অধিকারীর মুখ নিয়ে বিজেপি যত ঘুরবে, তত তাদের ভোট কমবে! নানা কারণে সিপিএমের ভোট একটু বেড়েছে ঠিকই। তবে এত হইচইয়ের কিছু নেই। পরবর্তী নির্বাচনগুলোয় দেখা যাবে, বামেরা আছে সেই তলানিতেই!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy