ফাইল চিত্র।
শুধু বাংলার জন্য নয়, সব রাজ্যের হয়েই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে কোভিড প্যাকেজের আবেদন জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, কেন্দ্র যদি অন্তত ৫০ শতাংশ মানুষেরও দায়িত্ব নেয়, তা হলে রাজ্যগুলির পক্ষে সেটা অনেক বেশি সুবিধাজনক হবে।
কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার মমতা-সহ মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠক করেন মোদী। বৈঠকের দ্বিতীয় বক্তা ছিলেন মমতা। ছ’মিনিটের সময়সীমায় মমতা তাঁর বক্তব্যে বলেন, কোভিড মোকাবিলায় সব রাজ্যকেই বিপুল খরচ করতে হয়েছে। বাংলাও খরচ করেছে বেশ কয়েক হাজার কোটি টাকা। কারণ, ২০২০ সালে কোভিডের প্রথম তরঙ্গ থেকেই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে। স্বাস্থ্য পরিকাঠামো তৈরি থেকে মানুষের জীবন-জীবিকা সুরক্ষিত রাখা, সব কিছুরই বন্দোবস্ত করতে হয়েছে। কোভিডের দ্বিতীয় তরঙ্গে পরিকাঠামো আরও বাড়ানোর দায়িত্ব চলে আসে রাজ্যের উপরে। কিন্তু কেন্দ্রের কাছ থেকে পাওয়া গিয়েছে মাত্র কয়েকশো কোটি টাকা। পরিস্থিতি যা, তাতে আগামী দিনেও কোভিড মোকাবিলার কাজ চালিয়ে যেতে হবে। সেই সূত্রেই মমতার আবেদন, বাংলা-সহ প্রতিটি রাজ্যের জন্যই কোভিড প্যাকেজের কথা বিবেচনা করুন প্রধানমন্ত্রী।
বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, গত দুই-আড়াই বছরে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বিপুল পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে বাংলায়। এখন প্রস্তুত রয়েছে ৬৫ হাজার নতুন শয্যা। তবে এই তৃতীয় তরঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি আছেন কমবেশি তিন হাজার রোগী। ফলে প্রচুর শয্যা খালি রয়েছে। বেশির ভাগ রোগী নিভৃতবাসে থেকে টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে চিকিৎসা চালিয়ে সুস্থ হয়ে উঠছেন। এখন রাজ্যে মৃত্যুহার ০.১৩ শতাংশের আশেপাশে। এখনও পর্যন্ত কোভিডের ধাক্কা মারাত্মক পর্যায়ে না-পৌঁছলেও রাজ্য সরকার সব রকম পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
অতিমারির ধাক্কায় শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, গোটা দেশেরই অর্থনীতি নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় তরঙ্গে বহু মানুষের জীবন-জীবিকা সঙ্কটে পড়েছে। এখন লকডাউন না-থাকায় আর্থিক গতিবিধি চালু আছে ঠিকই। তবে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন, অর্থনীতি এবং মানুষের জীবন-জীবিকার স্বার্থে রাজ্য সরকার ফের এমন কোনও নিয়ন্ত্রণ বিধি চাপাতে চাইছে না, যা মানুষকে নতুন করে বিপদে ফেলতে পারে। মমতা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, বাংলার অন্তত ১০ কোটি মানুষকে নিখরচায় রেশনসামগ্রী দিচ্ছে তাঁর সরকার।
গঙ্গাসাগর মেলার প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী জানান, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থানের মতো রাজ্য থেকে বহু পুণ্যার্থী এ রাজ্যে আসেন। তাই সরকারের পক্ষে সরাসরি মেলা বাতিল করে দেওয়া সম্ভব হয়নি। প্রতি বছর সাগরমেলার প্রস্তুতিতে বিপুল টাকা খরচ করে রাজ্য। এ বার আদালতের নির্দেশ মেনে সেই মেলা পরিচালনা করতে হচ্ছে। ইতিমধ্যে বিপুল সংখ্যক মানুষ এসে গিয়েছেন। ওই জনস্রোতের মধ্যে কোভিড বিধি কতটা মানা যাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও মমতার আশ্বাস, আদালতের নির্দেশ যত দূর সম্ভব পালনের চেষ্টা করবে প্রশাসন। তিনি একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, কুম্ভ মেলাও আসন্ন। সেখানেও লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম হয়। চলতি পরিস্থিতিতে সেই মেলা নিয়েও প্রত্যেকের সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy