Advertisement
E-Paper

ট্যাবের টাকা ঢুকছে না ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে, চলে যাচ্ছে ‘অন্যত্র’! বর্ধমান-বনগাঁয় স্কুলের ঘটনায় তদন্ত শুরু

রাজ্য সরকারের ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা এককালীন টাকা পান ট্যাব কেনার জন্য। সেই টাকার জন্য পুজোর ছুটির আগেই রাজ্যের স্কুলগুলি নির্দিষ্ট পোর্টালে আবেদন জানিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:৩০
Many students of bangaon and bardhaman allegation that they did not get oney for buying tab

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

পড়ুয়াদের জন্য পাঠানো ট্যাবের টাকা তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকছে না! উত্তর ২৪ পরগনা হোক বা পূর্ব বর্ধমান, অভিযোগ সর্বত্র প্রায় একই। কোনও কোনও ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের টাকা ঢুকছে অন্য অ্যাকাউন্টে। কী ভাবে এমন ঘটনা ঘটছে, তা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। অভিযোগ দায়ের হয়েছে থানাতেও। সব মিলিয়ে ট্যাবের টাকা নিয়ে চাপানউতর চলছে প্রশাসনের অন্দরে।

রাজ্য সরকারের ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা এককালীন ১০ হাজার টাকা পান ট্যাব কেনার জন্য। পুজোর ছুটির আগেই রাজ্যের স্কুলগুলি নির্দিষ্ট পোর্টালে আবেদন জানিয়েছে ওই টাকার জন্য। কিন্তু অভিযোগ, অনেক পড়ুয়ার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেই বরাদ্দ টাকা ঢোকেনি। উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর কবি কেশবলাল বিদ্যাপীঠের একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির ২২ জন পড়ুয়া ট্যাবের টাকা থেকে ‘বঞ্চিত’ হয়েছে বলে জানাচ্ছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। শুধু কবি কেশবলাল বিদ্যাপীঠ নয়, বনগাঁর অন্য একটি স্কুলেও একই অভিযোগ উঠেছে। বনগাঁরই শক্তিগড় হাই স্কুলের একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির ছয় পড়ুয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।

অন্য দিকে, পূর্ব বর্ধমানের সিএমএস হাই স্কুলে একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির মোট ৪১২ জন পড়ুয়া ট্যাব কেনার জন্য টাকার আবেদন করেছিল সংশ্লিষ্ট পোর্টালে। ওই স্কুলের প্রধানশিক্ষক মিন্টু রায় জানান, আবেদনকারীদের মধ্যে ২৮ জন পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে ট্যাবের টাকা ঢোকেনি। তিনি বলেন, ‘‘গত ২১ ও ২২ অক্টোবর ফোন করে স্কুলের বেশ কয়েক জন পড়ুয়া জানায়, তারা ট্যাবের জন্য দেওয়া ১০ হাজার টাকা পায়নি।’’ প্রধানশিক্ষক আরও জানান, স্কুলের পক্ষ থেকে ২৮ জন পড়ুয়াকে ব্যাঙ্কে গিয়ে খোঁজখবর নিতে বলা হয়েছিল। ব্যাঙ্কে গিয়ে পড়ুয়ারা জানতে পারে তাদের অ্যাকাউন্টের টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে। ওই প্রধানশিক্ষক দাবি করেন, স্কুলের তরফে কোনও গন্ডগোল নেই। প্রত্যেক পড়ুয়ার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ‘কেওয়াইসি’ আপডেট করা আছে। স্কুলের পক্ষ থেকে গোটা বিষয়টি জানানো হয় জেলার স্কুল পরিদর্শক (ডিআই), অতিরিক্ত জেলাশাসক (শিক্ষা), ডিপিওকে। পাশাপাশি, স্কুল পরিদর্শকের পরামর্শ মতো সাইবার থানাতেও অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

অন্য পড়ুয়ারা টাকা পেলেও তারা না পাওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই হতাশ হয়ে পড়েছে ২৮ জন পড়ুয়া। একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া জুনেদ চৌধুরী, সুদীপ্ত ধীবরেরা বলে, ‘‘এখন জানি না টাকা পাব কি না। টাকা না মেলায় আমরা ট্যাব কিনতে পারছি না। পড়াশোনায় ক্ষতি হচ্ছে।’’

বনগাঁর দুই স্কুলেও বেশ কয়েক জন পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে ট্যাবের টাকা না ঢোকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এ বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি অ্যাকাউন্ট নম্বর পরিবর্তন হওয়ার কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে। দ্রুত সমাধানের জন্য ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে ইমেল করে সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। স্কুল পরিদর্শক অফিস এবং থানাতেও ঘটনাটি লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে বলে দাবি স্কুল কর্তৃপক্ষের।

টাকা না পাওয়ায় পড়াশোনায় সমস্যা হচ্ছে বলে জানায় পড়ুয়ারা। তাদের দাবি, এখনও অনেক ক্লাসই অনলাইনে হয়। সেই ক্লাস করার জন্য স্মার্ট ফোন বা ট্যাব কেনার সামর্থ্য নেই তাদের। তাই সরকারের কাছ থেকে টাকা পেলে সমস্যার সমাধান হবে।

পূর্ব মেদিনীপুর থেকে বর্ধমান, উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়ারা ট্যাবের টাকা না পাওয়ায় অস্বস্তিতে প্রশাসন। প্রশ্ন উঠেছে শিক্ষা দফতরের ভূমিকা নিয়েও। বিতর্কের মধ্যেই শিক্ষা দফতর ট্যাবের টাকা সম্পর্কিত সমস্যা নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে। কেন আবেদনকারীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঠিকমতো টাকা ঢুকছে না, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে শিক্ষা দফতর।

Tab Taruner Swapna Student Crime
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy