Advertisement
E-Paper

নাবালিকা-বিয়ে আটকাতে প্রচারের মুখ সিতারা

প্রশাসনের তৎপরতায় তার বিয়ে রোখা গিয়েছিল কয়েক দিন আগে। এবার সে নিজেই হতে চলেছে ব্লকের নাবালিকা বিবাহ রোধ সম্পর্কিত প্রচারের মুখ।    

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:০৭
সিতারার পরিবারের হাতে আর্থিক সাহায্য তুলে দেওয়া হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র

সিতারার পরিবারের হাতে আর্থিক সাহায্য তুলে দেওয়া হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র

প্রশাসনের তৎপরতায় তার বিয়ে রোখা গিয়েছিল কয়েক দিন আগে। এবার সে নিজেই হতে চলেছে ব্লকের নাবালিকা বিবাহ রোধ সম্পর্কিত প্রচারের মুখ।

স্থানীয় সূত্রের খবর, নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের দাউদপুরের হাবিববাড়ের বাসিন্দা সিতারা খাতুনের গত ১৭ নভেম্বর আমগেছিয়া গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয়েছিল। কিন্তু সিতারা বয়স আঠারো হয়নি জানতে পেরে তাকে এবং তার বাবাকে ডেকে পাঠান বিডিও। নাবালিকা বিয়ের অসুবিধা সম্পর্কে বোঝানোর পরে তারা বাবা মুছলেকা দিয়ে বিয়ে বন্ধের প্রতিশ্রুতি দেন। সিতারার প়ড়াশোনা জন্য সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছিল প্রশাসন।

মঙ্গলবার সিতারাকে নাবালিকা বিবাহ রোধ সম্পর্কিত প্রচারের মুখ করার প্রস্তাব দেয় ব্লক প্রশাসন। তাতে সায় দেয় সিতারা এবং তার পরিবার। এর পরেই এ দিন হাবিববাড় গ্রামে যান নন্দীগ্রাম- ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মুক্তিরানি মাইতি-সহ ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকেরা। ওই নাবালিকার হাতে নগদ পাঁচ হাজার টাকা তুলে দেন নন্দীগ্রাম-১ এর বিডিও সুব্রত মল্লিক। পরবর্তী সময়ে পড়াশুনো-সহ জীবনে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সব রকমের সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয় ব্লক প্রশাসনের তরফে।

বিডিও সুব্রত মল্লিক বলেন, ‘‘ওই নাবালিকাকে গোটা ব্লকের নাবালিকা বিবাহ রোধে প্রচারের মুখ করে সকলকে সচেতন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’’ প্রশাসনের ওই প্রস্তাবে খুশি সিতারা-ও। তার কথায়, ‘‘কম বয়সে বিয়ের কুফল সম্পর্কে অনেক কিছু জেনেছি। তাই অন্যেরা যাতে এমন সিদ্ধান্ত না নেয়, তার জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে আমাকে প্রচার করার সুযোগ হবে। এতে ভালই লাগছে।’’

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ওই নাবালিকার পরিবার অত্যন্ত গরীব। বাবা মাছ হকারি করেন। ছয় বোনের মধ্যে বড় বছর সতেরোর সিতারা। তার মা সালেমা বিবি বলেন, ‘‘অভাবের সংসারে ভাল ছেলে দেখে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’’ সরকারি নিয়মে মেয়ের বিয়ে আটকালেও এখন অবশ্য তা নিয়ে চিন্তিত নয় সিতারার পরিবার। কারণ তাদের অভাবের কথা মাথায় রেখে সিতারাকে ‘পিঙ্ক ক্যাবে’র (মহিলা চালকের ট্যাক্সি) সুবিধা দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বলে নন্দীগ্রাম-১ ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর। পাশাপাশি, অনেকে ব্যক্তিগত ভাবেই সিতারাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন

ব্লকের সমাজ কল্যাণ আধিকারিক কামালউদ্দিন বলেন, ‘‘স্থানীয় একজন পাঁচ হাজার টাকা সাহায্য করতে চেয়েছিলেন। এ দিন সেই টাকা সিতারার হাতে তুলে দিয়েছি।’’

গত এক বছরে নন্দীগ্রাম-১ ব্লকে প্রায় ১০০ জন নাবালিকার বিয়ে আটকানো গিয়েছে বলে ব্লক সূত্রে খবর। আর সে সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতেই প্রচারের মুখ করা হচ্ছে সিতারাকে।

Child Marriage Administration
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy