E-Paper

পুর-নিয়োগ দুর্নীতি, নজরে মেদিনীপুরও

পুরসভা সূত্রে খবর, ২০১৪ সালের এক বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে মেদিনীপুরে বেশ কয়েকজন পুরকর্মী নিযুক্ত হয়েছিলেন। সেই সময়ে পুরপ্রধান ছিলেন তৃণমূলের প্রণব বসু।

বরুণ দে

শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০২৩ ০৭:৪৫
Representation image of Corruption

পুরসভায় নিয়োগে দুর্নীতি তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই’ও । ইডি- র পাশাপাশি।

পুরসভায় নিয়োগে দুর্নীতি। ইডি- র পাশাপাশি তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই’ও। নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে মঙ্গলবারই ইডি- র হাতে গ্রেফতার হয়েছেন ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। পুরসভা সূত্রের খবর, এই আবহে চিঠি এসেছে মেদিনীপুর পুরসভাতেও। পুরকর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জানতে চেয়েই ওই চিঠি। চিঠিটি পাঠিয়েছে পুর- দফতরের ডাইরেক্টরেট অফ লোকাল বডিজ। ইডি- র তদন্তের প্রেক্ষিতেই এই চিঠি।

ওই চিঠিতে যে সময়কার নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য সবিস্তারে জানাতে বলা হয়েছে, সেই সময়ে মেদিনীপুরেও ১৭ জন পুরকর্মী নিয়োগ করা হয়েছিল। এক সংস্থার মাধ্যমেই। সূত্রের খবর, চিঠিটি আসার পরে জরুরি ভিত্তিতে আলোচনা সেরেছেন পুরপ্রধান সৌমেন খান, পুরসভার এগজিকিউটিভ অফিসার (ইও) সুভেশ বেরা প্রমুখ। পুর- কর্তৃপক্ষ ঠিক করেছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নিয়োগ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য পাঠিয়ে দেওয়া হবে। যদিও এ নিয়ে অবশ্য কিছু বলতে চাননি পুরপ্রধান সৌমেন খান। ডাইরেক্টরেট অফ লোকাল বডিজ- এর তরফে চিঠি এসেছে তো? পুরসভায় নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য জানতে চেয়ে? পুরসভার এগজিকিউটিভ অফিসার (ইও) সুভেশ বেরা মানছেন, ‘‘চিঠি এসেছে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ ওই ১৭ জন পুরকর্মীর নিয়োগ সংক্রান্ত সব নথিপত্র জোগাড় করতে না কি হিমশিম খাচ্ছেন পুর- কর্তৃপক্ষ। এক পুর- আধিকারিকের মন্তব্য, ‘‘সব নথিপত্র তো আর এক জায়গায় গচ্ছিত নেই!’’

পুরসভার এক সূত্রের দাবি, ২০১২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত পুরসভায় কী পদ্ধতিতে কর্মী নিয়োগ হয়েছে, কত কর্মী নিয়োগ হয়েছে, সে সব বিষয়ে সবিস্তার তথ্য জানাতে হবে। বস্তুত, রাজ্যে বিভিন্ন পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে তৎপর এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। সম্প্রতি, পুর- দফতরে চিঠি দিয়েছে এই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ইডি- র চিঠি গিয়েছে মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশন এবং পুর নগরোন্নয়ন দফতরে। একাধিক মহল মনে করাচ্ছে, শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার করা হয়েছে হুগলির প্রোমোটার অয়ন শীলকে। অয়নের সল্টলেকের অফিসে তল্লাশি চালিয়ে বিভিন্ন পুরসভায় নিয়োগ সংক্রান্ত নথি উদ্ধার করেছিল ইডি। ওই অফিস থেকে বিভিন্ন পুরসভার বিভিন্ন পদে চাকরিপ্রার্থীদের ওএমআর শিট (উত্তরপত্র) পাওয়া গিয়েছিল বলেও দাবি করেছিলেন তদন্তকারী সংস্থা। ইডি মনে করছে, অয়নের সংস্থা যে সব উত্তরপত্রের মূল্যায়ন করেছে, সে সব ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়ে থাকতে পারে। বস্তুত, নিয়োগ দুর্নীতিতে প্রায় ১ হাজার জন চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে অয়ন ৪৫ কোটি টাকা তুলেছেন বলে মামলার চার্জশিটে দাবি করেছে ইডি। পুর- নিয়োগের জন্য চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে অয়ন ৩৫- ৪০ কোটি টাকা তুলেছেন বলে ইডি সূত্রে খবর। বিভিন্ন পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়ে থাকতে পারে বলেই সন্দেহ তদন্তকারীদের। ইডি- র পাশাপাশি এই তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই’ও।

পুরসভা সূত্রে খবর, ২০১৪ সালের এক বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে মেদিনীপুরে বেশ কয়েকজন পুরকর্মী নিযুক্ত হয়েছিলেন। সেই সময়ে পুরপ্রধান ছিলেন তৃণমূলের প্রণব বসু। প্রণব প্রয়াত হয়েছেন। সূত্রের খবর, গত ৯ বছরে যাঁরা যাঁরা পুরপ্রধান হয়েছেন, তাঁদের নাম। যে যে এগজিকিউটিভ অফিসার (ইও) হয়েছেন, তাঁদের নামও জানতে চেয়েছে পুর- দফতর। জানাতে হবে কে, কবে থেকে কবে পর্যন্ত পুরপ্রধান ছিলেন। কে, কবে থেকে কবে পর্যন্ত এগজিকিউটিভ অফিসার (ইও) ছিলেন। পাশাপাশি, জানাতে হবে কত নিয়োগ হয়েছে, কী প্রক্রিয়ায় নিয়োগ হয়েছে, পরীক্ষা কোথায় হয়েছিল, কোনও সংস্থার (এজেন্সির) মাধ্যমে নিয়োগ হয়ে থাকলে, সেই সংস্থার নাম- ঠিকানা, এ সবও। পুরসভার এক সূত্রের দাবি, এ ক্ষেত্রে তথ্য জানানোয় এতটুকু গড়িমসি করা হবে না। এক পুর- আধিকারিকও বলেন, ‘‘বেশ কিছু তথ্য জানতে চেয়ে ওই চিঠি। আমাদের কাছে ওই সময়ের নিয়োগ সংক্রান্ত যে সব তথ্য রয়েছে, সে সবই জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

midnapore Enforcement Directorate CBI

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy