আগামী ২৯ ডিসেম্বর গঙ্গাসাগরে যাওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগে সাগর মেলায় পুণ্যার্থীদের অস্থায়ী তাঁবু তৈরির কাজ শেষ করতে উদ্যোগী স্থানীয় প্রশাসন। জোর কদমে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। গঙ্গাসাগর মেলায় তাঁবু তৈরির অধিকাংশ হোগলা যায় কোলাঘাট থেকে। তাই পৌষ সংক্রান্তির আগে ব্যস্ত কোলাঘাটের নগুরিয়া গ্রামের হোগলাশিল্পীরা।
কোলাঘাটের নগুরিয়া গ্রাম থেকে গঙ্গাসাগরের অস্থায়ী শিবিরের জন্য হোগলার চাদর সরবরাহের রীতি চলে আসছে বহু বছর ধরে। প্রতি বছর কার্তিক মাস থেকে নগুরিয়ার মানুষ ব্যস্ত হয়ে পড়েন হোগলার চাদর তৈরি করতে। স্থানীয় সূত্রে খবর, মূলত তমলুক, শহিদ মাতঙ্গিনী, কোলাঘাট ও গেঁওখালি এলাকায় রূপনারায়ণের চরে জন্মায় হোগলা ঘাস। কার্তিক মাসের প্রথম দিকে সেগুলি কাটা হয়। স্থানীয়দের থেকে প্রয়োজন মতো পাতা কিনে নেন নগুরিয়ার হোগলা ব্যবসায়ীরা। তা থেকেই তৈরি হয় দু’টি আকারের হোগলার চাদর। মকর সংক্রান্তির বেশ কিছুদিন আগেই সেগুলি নৌকোয় করে পাঠানো হয় গঙ্গাসাগরে।
নগুরিয়া গ্রামের প্রায় ৩০০ গ্রামবাসী হোগলার চাদর তৈরির কাজ করেন। বিশ্বজিৎ আদক, গোপাল কারক, প্রদীপ আদকেরা পৈতৃক সূত্রে এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। এঁদের বাবা-কাকারা ৪০ বছর আগেও গঙ্গাসাগরে হোগলা পাতার চাদর সরবরাহের কাজ করতেন। বিশ্বজিৎ জানান, প্রতি বান্ডিল হোগলা কিনতে খরচ হয় ৪০০ টাকা। এক বান্ডিল হোগলা থেকে সাতটি বড় এবং তিনটি ছোট চাদর তৈরি করা যায়। চাদর বানানোর জন্য কাঁচা হোগলাকে রোদে শুকিয়ে নিতে হয়। এরপর প্রয়োজন মতো আকারে সেগুলি কেটে ফেলা হয়। তারপর সুতোর সাহায্যে এক একটি হোগলা ঘাসকে জুড়ে তৈরি করা হয় চাদর। সাড়ে ৮ ফুট বাই ৬ ফুট এবং সাড়ে ৭ ফুট বাই ৫ ফুট—এই দু’টি আকৃতির চাদর তৈরি করা হয়।