Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
BJP

BJP: নিহত নেতার দেহ আটকে পথে বিজেপি

দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার দাবিতে রবিবার রাত থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত বাড়িতে মৃতদেহ ফেলে রাখা হয়। সোমবার সকালে দেড়েদিঘি গ্রামীণ সড়ক অবরোধ করে বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা।

বন্‌ধে ফাঁকা ভগবানপুর বাজার। এগরা-বাজকুল সড়কে ধারে।

বন্‌ধে ফাঁকা ভগবানপুর বাজার। এগরা-বাজকুল সড়কে ধারে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভগবানপুর শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২১ ০৯:০৬
Share: Save:

পুলিশের কাছ থেকে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের আশ্বাসের পাওয়ার পর শেষ পর্যন্ত নিহত বিজেপি নেতা চন্দন মাইতির শেষকৃত্য সম্পন্ন হল।

শনিবার রাতে মহম্মদপুরে কেলেঘাই নদীর ধারে ক্ষতবিক্ষত চন্দনের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবারের তরফে তৃণমূলের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার দাবিতে রাতে পুলিশের সামনে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। মৃতদেহ সৎকারে অস্বীকার করে পরিবার। রবিবার রাত থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত বাড়িতে মৃত দেহ ফেলে রাখা হয়। একই সঙ্গে সোমবার এলাকায় বন্‌ধ ডেকেছিল বিজেপি। খুনে অভিযুক্ত সাঁইত্রিশ জন তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের মধ্যে পুলিশ এখনও একজনকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এ দিন অভিযুক্তদের যত দ্রুত সম্ভব গ্রেফতার করা হবে বলে পুলিশের আশ্বাস পেয়ে প্রায় চল্লিশ ঘণ্টা পরে নিহত বিজেপি নেতার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়ল। ঘটনার পরে অভিযুক্ত সকলেই গা-ঢাকা দিয়েছে বলে পুলিশের দাবি। এদিন কার্যত মৃতদেহের সৎকার ওবনধ সামাল দিতে দিনভর নাজেহাল হতে হয়েছে পুলিশকে।

খুনের পর রবিবার রতে নিহত চন্দনের স্ত্রী ভেড়ি-কাণ্ডে নিহত নান্টু প্রধানের ভাই পিন্টু প্রধান ও তার অনুগামী মিলিয়ে মোট ৩৭ জনের বিরুদ্ধে ভগবানপুর থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ তালিকায় মহম্মদপুর-১ পঞ্চায়েতের তৃণমূলের এক সদস্যার স্বামী তথা সিভিক ভলান্টিয়ার রাজীব হাজার নাম রয়েছে। তমলুক মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পরে মহম্মদপুর গ্রামের বাড়িতে চন্দনের দেহ আনা হয়। গ্রামে এসে মৃত বিজেপি নেতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো। দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার দাবিতে রবিবার রাত থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত বাড়িতে মৃতদেহ ফেলে রাখা হয়। সোমবার সকালে দেড়েদিঘি গ্রামীণ সড়ক অবরোধ করে বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা। সোমবার বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের নিহত নেতার বাড়িতে আসার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে আসতে পারেনি বলে বিজেপি সূত্রে খবর। স্থানীয় বিজেপি নেতা ও মৃতের পরিবারকে পুলিশ দ্রুত দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে সোমবার দুপুর তিনটে নাগাদ মৃতদেহের শেষকৃত্য হয়।

বিজেপি নেতার মৃত্যুর প্রতিবাদে ভগবানপুরে সোমবার সকাল থেকে বন্‌ধ ডেকেছিল তমলুক সাংগঠনিক জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। দু-এক জায়গায় মিছিল ছাড়া এ দিন শান্তিপূর্ণ ভাবে বনধ পালিত হয়। সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে ভগবানপুরে এগরা ও বাজকুল সড়কে গণপরিবহণকে বনধের আওতা থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছিল। সরকারি অফিস ও ব্যাঙ্ক পরিষেবা স্বাভাবিক ছিল। বন্‌ধে গোলমাল এড়াতে গোয়ালাপুকুর বাজার, শিলাখালি বাজার, দেড়েদিঘি বাজার সহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পুলিশ মোতায়েন ছিল। ভগবানপুর বাজারে সকালের দিকে দু-একটি দোকান খোলা হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে তা বন্ধ হয়ে যায়।সকাল থেকে রাস্তাঘাটে খুব একটা মানুষ দেখা যায়নি।

বিজেপি নেতাকে খুনের অভিযোগে পিন্টু প্রধান সহ তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামী তথা সিভিক ভলান্টিয়ার রাজীব হাজরার নাম থাকা নিয়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। রাজীবের বিরুদ্ধে আগেও ভগবানপুর থানায় বিজেপি কর্মীদের মারধর ও খুনের চেষ্টা-সহ একাধিক মামলা রয়েছে। ঘটনার পর শনিবার রাত থেকেই অভিযুক্ত তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা অনেকে বাড়ি ছাড়া। বিজেপি নেতাকে অপহরণ করে দেড়েদিঘি বাজার ও নান্টুর কলেজের সামনে দিয়ে কেলেঘাই নদীর পাড়ে নিয়ে আসা হয়েছিল বলে পুলিশ সূত্রে খবর। ওই সব এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছে বিজেপি।

বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি নবারুণ নায়েক বলেন, ‘‘তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা এলাকায় ঘুরলেও পুলিশ এখনও অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেনি। উল্টে এলাকায় খুনের হুমকি দিচ্ছে তৃণমূল। পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে হাইকোর্টে ভোট পরবর্তী হিংসার মামলা করে সিবিআই তদন্তের দাবি জানাব।’’

তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সম্পাদক অভিজিৎ দাস বলেন, ‘‘বিজেপি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে মিথ্যা অভিযোগে আমাদের কর্মীদের নাম জড়িয়েছে। রাজনৈতিক ভাবে দেউলিয়া হয়ে এখন প্রতিহিংসার আশ্রয় নিয়েছে। আইন আইনের পথে চলবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP BJP Leader Death Unrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE