বাস থামার বোর্ড রয়েছে। কিন্তু নেই যাত্রী প্রতীক্ষালয়। —নিজস্ব চিত্র।
স্বর্ণ ব্যবসায়ী খুনের ঘটনার এক সপ্তাহ পরে গ্রেফতার হয়েছে এক অভিযুক্ত। বাকি দুষ্কৃতীদের খোঁজ নেই। স্বাভাবিক ভাবেই মানসিক শান্তি নেই নিহত ব্যবসায়ীর গ্রাম উত্তর জিঞাদা-সহ পাশাপাশি কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে। অনেকেই সন্ধ্যা নামলেই কার্যত গৃহবন্দি হয়ে পড়ছেন। এলাকার নিরাপত্তায় পুলিশ শিবিরের দাবি করছেন তাঁরা।
১৬ নম্বর জাতীয় সড়কের হাওড়াগামী লেনে কোলাঘাটের দেউলবাড় থেকে বা’দিকে ঢালাই রাস্তা ধরে এক কিলোমিটার এগোলেই নিহত ব্যবসায়ী সমীর পড়িয়ার গ্রাম উত্তর জিঞাদা (লোয়ার)। কোলাঘাট, পাঁশকুড়া এবং ভোগপুর রেল স্টেশনে যাওয়ার জন্য শ্রীধরবসান, দেউলবাড় এবং উত্তর জিঞাদা (লোয়ার) গ্রামের মানুষজনকে ওই রাস্তা ধরেই নিয়মিত যাতায়াত করতে হয়। কয়েক বছর আগে পরিবহণ দফতর জাতীয় সড়কের উপরে দেউলবাড়ে একটি বাস স্টপেজের অনুমোদন দিয়েছিল। তবে অনুমোদন থাকলেও ওই জায়গায় কোনও বাস থামে না। ফলে ওই জায়গায় মানুষজনের আনাগোনা কম। এছাড়া, কাছেপিঠে কোনও বড় বাজার না থাকায় জাতীয় সড়কের পাশে দেউলবাড় জায়গাটি কার্যত শুনশান।
স্থানীয় সূত্রের খবর, দেউলবাড়ে যে জায়গায় সমীরকে খুন করা হয়েছিল, সেখানে পথবাতি নেই। সন্ধ্যায় এলাকা অন্ধকারে ডুবে যায়। অন্ধকার এবং ওই নির্জনতাকে কাজে লাগিয়েই গত ২০ নভেম্বর দুষ্কৃতীরা সমীরকে গুলি করে টাকা এবং গয়না লুট করে পালিয়ে যায়। এলাকাবাসীর একাংশ জানাচ্ছে, ওই ঘটনার পর থেকে রাতে রাস্তাটি এড়িয়ে চলছেন তাঁরা। তবে আতঙ্কিত কলেজ এবং বিশ্ব বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। কারণ, অনেকেরই ক্লাস ও টিউশনি সেরে বাড়ি ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। এলাকায় খুনের মতো ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর পড়ুয়াদের অনেকেই এখন ক্লাস অসম্পূর্ণ রেখে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে আসছেন।
এলাকাবাসীর দাবি, দেউলবাড়ে জাতীয় সড়কে হাইমাস্ট আলো, গ্রামে ঢোকার রাস্তায় সিসি ক্যামেরা এবং পথবাতি বসানো হোক। পুলিশ শিবিরের দাবিতেও সরব তাঁরা। এলাকার বাসিন্দা তথা শিক্ষিকা দিপালী পড়িয়া বলেন, ‘‘ওই খুনের পর আমরা আতঙ্কে রয়েছি। সন্ধ্যের পর অনেকে ঘর থেকে বেরোতে চাইছেন না। পুলিশ শিবির হলে মানুষজন ভয় মুক্ত হবেন।’’
সমীর খুনে বাকি দুষ্কৃতীদের অবিলম্বে গ্রেফতারি-সহ একাধিক দাবিতে জেলার পুলিশ সুপার এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের সঙ্গে মঙ্গলবার দেখা করেন এলাকার নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। ওই দলে ছিলেন সমীরের বাবা সুকুমার পড়িয়াও। নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক নারায়ণচন্দ্র নায়ক বলেন, ‘‘১৬ নম্বর জাতীয় সড়কের মেচগ্রাম থেকে কোলাঘাট পর্যন্ত সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পথবাতি ও সিসিক্যামেরা বসানোর দাবি আমরা জানিয়েছি। খুনের এলাকায় পুলিশ শিবির চালু করতে হবে।’’ জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, তাঁরা সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy