আহত: মহম্মদ আসাদুজ্জামান। নিজস্ব চিত্র
ফের আক্রান্ত সাগরদিঘি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের এক ঠিকাদারি সংস্থার প্রজেক্ট ম্যানেজার। তাঁর নাম মহম্মদ আসাদুজ্জামান। তাঁর দাবি, বুধবার সন্ধেয় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২ নম্বর গেট দিয়ে বেরোনোর সময় একটি ছোট গাড়ি দিয়ে তাঁর মোটরবাইককে ধাক্কা দেওয়া হয়। তিনি রাস্তায় ছিটকে পড়েন। তখন তাঁকে পিস্তল দেখিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। তিনি বলেন, ‘‘ওরা চলে যেতে সাগরদিঘি থানায় যাই অভিযোগ করতে। সেখান থেকে ফেরার পথে রাত দশটা নাগাদ আবার ওই গাড়িটি নিয়ে এসে পথরোধ করে গুলি ছোড়া হয়।’’ আসাদুজ্জামানের গাড়ির সামনের কাচ ভেঙে গিয়েছে। চালক কোনও মতে অন্য রাস্তা দিয়ে তাঁদের নিয়ে বেরিয়ে যান। তবে তার মধ্যেই আহত হন সংস্থার কর্মী পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। আহত হয়েছেন আসাদুজ্জামানও।
অভিযোগের তির সাগরদিঘি পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূলের মেহেবুব আলম ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে। মেহবুবের দাবি, ‘‘এই ঘটনায় আমাকে জড়িয়ে মিথ্যে অভিযোগ তোলা হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ পদে আসার পর সাগরদিঘি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কোনও সংস্থার সঙ্গে জড়িত নই আমি। চক্রান্ত করে আমাকে অপদস্থ করতেই এই সব অভিযোগে জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। কারা এই হামলায় জড়িত, পুলিশ তা তদন্ত করে দেখুক।’’ এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে গুলি চলেছে তেমন কোনও প্রমাণ বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত মেলেনি।’’ পুলিশ এই ঘটনায় অভিযুক্তদের মধ্যে সাকিম শেখ নামে এক জনকে গ্রেফতার করলেও মূল অভিযুক্ত তৃণমূলের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ এখনও অধরা।
মেহবুবের বিরুদ্ধে এর আগে ২০১৭ সালে ১২ জুলাই আসাদুজ্জামানের উপরেই হামলার অভিযোগ উঠেছিল। সে মামলায় আপাতত জামিনে মুক্ত রয়েছেন তৃণমূল নেতা মেহবুব। মেহেবুবের বাড়ি তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র লাগোয়া চাঁদপাড়া গ্রামে। মেহবুব বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ পদে আসার পর সাগরদিঘি তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কোনও সংস্থার সঙ্গে জড়িত নই আমি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে।’’
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মেকানিক্যাল মেনটেন্যান্সের দায়িত্বে রয়েছে ইন্ডিয়ান কনস্ট্রাকশন নামে এই ঠিকাদারি সংস্থা। ২০০৯ সাল থেকে তারা কাজ করছে সাগরদিঘি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে। ২৪০ জন কর্মী কাজ করেন সেখানে। আসাদুজ্জামানের দাবি, মেহবুব ও তাঁর দলবল কথায় কথায় তোলাবাজি করে, লোক নিয়োগের দাবি জানায়। তাঁর কথায়, ‘‘কিন্তু নতুন লোক নিয়োগ কখনওই সম্ভব নয়। আর মোটা অঙ্কের তোলাবাজির দাবিও মানা যায় না। আমরা সংস্থার কর্মী মাত্র। তবু কিছু দিন থেকে আমাদের ভয় দেখানো হচ্ছিল।’’
জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান সাগরদিঘির বিধায়ক সুব্রত সাহার অবশ্য দাবি, ‘‘মেহবুব এমন কাজ করতেই পারে না। ওকে ফাঁসানো হচ্ছে। তবে অভিযোগ যখন হয়েছে, পুলিশ নিরপেক্ষ ভাবে সব খতিয়ে দেখুক।’’ পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, ‘‘পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy