মিছিল যত এগিয়েছে ততই বেড়েছে কলেবর। প্রাথমিক জড়তা কাটিয়ে সেই মিছিলে পা মিলিয়েছেন শহরের মানুষ। বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম। এনআরসি, সিএএ এবং এনপিআর বিরোধী মিছিল থেকে স্লোগান উঠল, “তোমার বুকে নাথুরাম, আমার বুকে ক্ষুদিরাম।” সেই স্লোগানে গলা মেলালেন সাতাশ থেকে সত্তর, সুজয় থেকে সাহাদাত।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা জাতীয় নাগরিক পঞ্জি নিয়ে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বিচ্ছিন্ন ভাবে প্রতিবাদ সংঘটিত হচ্ছিল। কখনও নাকাশিপাড়া তো কখনও চাপড়া। আবার কখনও ধুবুলিয়ায়। রাজনৈতিক দলের পতাকা ছাড়াই। কোথাও তৈরি হয়েছে ‘নো-এনআরসি মঞ্চ’। কোথাও ‘ভারত বাঁচাও মঞ্চ’। কৃষ্ণনগর শহরেও তৈরি হয়েছে এনআরসি বিরোধী কৃষ্ণনগর নাগরিক মঞ্চ। তারাই কনভেনশন করে ঠিক করেছিল জেলার বিভিন্ন প্রান্তের গড়ে ওঠা সংগঠনগুলিকে এক ছাতার চলায় নিয়ে এসে জেলা সদরের ‘মহামিছিল’-এর আয়োজন করা হবে। সেই মতো গত কয়েক দিন ধরে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বৈঠক চলছিল। আর সেই উদ্যোগের ফসল হল এ দিনের মিছিল। শহরের বিভিন্ন রাস্তায় মিছিলে একে একে শামিল হল জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ। মিছিলে মিলেমিশে একাকার হয়ে গেল সকল জাতি, ধর্ম, বর্ণ। মিলেমিশে একাকার হয়ে গেল নারী-পুরুষের মিলিত প্রতিবাদের কণ্ঠ।
রবিবার দুপুরে কৃষ্ণনগরের কারবালার মাঠে একে একে জড়ো হতে থাকেন মানুষ। তাঁদের হাতে ছিল এনআরসি, সিএএ বিরোধী প্লাকার্ড। প্রথমে কৃষ্ণনাগরিকদের উপস্থিতি তেমন না থাকলেও মিছিল যত এগিয়েছে ততই বেড়েছে দৈর্ঘ্য। প্রাথমিক জড়তা কাটিয়ে শহরের মানুষ পা মেলাতে শুরু করেছেন মিছিলে। দলীয় পতাকা ছাড়া মিছিল হলেও মূলত শহরের মানবাধিকার কর্মীদেরকেই নেতৃত্ব দিতে দেখা যায়। মিছিলের অগ্রভাগে দেখা যায় এক সময়কার নকশাল আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা পরিচিত মুখকে। তবে মিছিলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের উপস্থিতি ছিল বেশি।
উদ্যোক্তাদের এক জন এপিডিআর-এর রাজ্যের সহ-সভাপতি তাপস চক্রবর্তী বলছেন, “বিজেপির এই সংবিধান বিরোধী আইনের বিরুদ্ধে সকল স্তরের মানুষ যে রাস্তায় নামছেন আজকের মিছিল সেটাই আবার প্রমাণ করে দিল।”