Advertisement
E-Paper

কতটা পথ পেরোলে তবে...

গত বুধবার মহারাষ্ট্রের নাগপুরের জয়ন্তীনগর থেকে বাড়ি ফেরার জন্য যাত্রা শুরু করেছিলেন নদিয়ার ১০ শ্রমিক।

সাগর হালদার

শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২০ ০৪:৫২
নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব চিত্র

বাড়ি ফেরার মরিয়া চেষ্টায় টানা পাঁচ দিন প্রায় এক হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে আসা। অধিকাংশটাই পায়ে হেঁটে, কিছুটা লরি বা ভ্যানে চেপে। এক বস্ত্রে এবং প্রায় অনাহারে।

গত বুধবার মহারাষ্ট্রের নাগপুরের জয়ন্তীনগর থেকে বাড়ি ফেরার জন্য যাত্রা শুরু করেছিলেন নদিয়ার ১০ শ্রমিক। গত রবিবার ধ্বস্ত, আশঙ্কিত অবস্থায় তাঁরা এসে পৌঁছোন ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গ সীমানায় হাতিবাড়ি রাধাবল্লভপুরে। সঙ্গে ব্যাগে কয়েক প্যাকেট করে বিস্কুট। সেই বিস্কুট আর রাস্তার কলের জল খেয়েই গত এক সপ্তাহ মাইলের পর মাইল হেঁটেছেন।

এঁরা হলেন তেহট্টের বেতাই জিতপুরের বাসিন্দা ধ্রুব রায়, মুরুটিয়া থানার খানপুরের ভাস্কর মণ্ডল, দিব্যেন্দু মণ্ডল, প্রকাশ মণ্ডল, তপন ঘোষ, সঞ্জয় সরকার। এ ছাড়াও চাকদহ, বাদকুল্লা এলাকার চার জন রয়েছেন। নাগপুরে তাঁরা রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। লকডাউনে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। কোনও পারিশ্রমিক পাননি তাঁরা।

হাত খরচের টাকায় চাল-ডাল কিনে কিছু দিন চালানো সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এ ভাবে আর কতদিন চলে? নিরুপায় হয়ে তাঁরা স্থানীয় পঞ্চায়েতে যোগাযোগ করেন। কিন্তু কেউ তাঁদের আবেদনে আমল দেয়নি বলে অভিযোগ। তাঁদের অভিযোগ, প্রথম দিকে পঞ্চায়েত জানায়, ট্রেনের টিকিট কিংবা বাসের টিকিটের ব্যবস্থা করবে। পরে সেটাও করেনি। অগত্যা শ্রমিকেরা পায়ে হেঁটে বাড়ি ফেরার পরিকল্পনা করেন।

ওড়িষ্যা সীমানায় পৌঁছনোর পর শুরু ঝড়-বৃষ্টি। মাথা গোঁজার ছোট একটি আস্তানা পেয়ে রাত কাটান তাঁরা। শ্রমিকেরা টেলিফোনে জানিয়েছেন, সোমবার সকালে ওই জায়গায় রাজ্যের অন্য কয়েকটি জেলার অনেক শ্রমিক পায়ে হেঁটে উপস্থিত হন। তার মধ্যে মুর্শিদাবাদের বেশকিছু শ্রমিককে সেই জেলার কর্তৃপক্ষ চারটি বাস পাঠিয়ে নিয়ে যায়। নদিয়ার শ্রমিকেরা এখন জেলা প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে অপেক্ষায় রয়েছেন।

ধ্রুব রায় নামে এক শ্রমিক বলেন, ‘‘নাগপুর থেকে পায়ে হেঁটে, কখনও ট্রাকে রাতের পর রাত জেগে আমরা রবিবার বিকেলে পশ্চিমবঙ্গ সীমানায় এসে পৌঁছোই। এ ক’দিন আমাদের মুখে ভাত জোটেনি। ঘুম হয়নি।’’

নদিয়া জেলা শ্রম দফতরের ডেপুটি লেবার কমিশনার শ্যামল দত্ত বলেন, ‘‘ওই শ্রমিকদের কথা জেনে রাজ্য সরকার তাঁদের জন্য বাসের ব্যবস্থা করেছে। দ্রুত তাঁদের বাসে জেলায় ফেরানোর ব্যবস্থা করা হবে।’’ জেলাশাসক বিভু গোয়েলকে ফোন করলে ও হোয়াটসঅ্যাপ করলে উত্তর মেলেনি।

Migrant Labourer Coronavirus Lockdown Nagpur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy