E-Paper

ওষুধে শুল্ক ছাড়ে সুবিধাই, মত চিকিৎসকদের

অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন বাজেটি ক্যানসার সহ ৩৬টি জীবনদায়ী ওষুধের উপরে আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেছেন।

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৮:২০
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

ক্যানসারের ওষুধের উপরে আমদানি শুল্ক পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নিলেও সাধারণ মানুষের উপর খুব বেশি সরাসরি প্রভাব পড়বে না মনে করছেন রোগী থেকে চিকিৎসকদের অনেকে। কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ক্যানসার রোগীরা সরকারি হাসপাতালে বিনা পয়সায় অথবা বিমা সংস্থার মাধ্যমে চিকিৎসা করিয়ে থাকেন। এর বাইরে কিছু মানুষ নিজের খরচে চিকিৎসা করান। এঁদের ক্ষেত্রে কিছুটা সুবিধা হবে বলে মনে করছেন চিকিৎসক থেকে ওষুধ ব্যবসায়ীরা।

তবে জীবনদায়ী ওষুধের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের কিছুটা হলেও সুরাহা হবে বলে তাদের দাবি। কারণ এক্ষেত্রে ওষুধের দাম বেশ কিছুটা কমবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন বাজেটি ক্যানসার সহ ৩৬টি জীবনদায়ী ওষুধের উপরে আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেছেন। যা নিয়ে সাধারণ মানুষ থেকে ওষুধ ব্যবসায়ী ও চিকিৎসক মহলে রীতিমত আলাপ আলোচনা শুরু হয়েছে। কারণ এতদিন ওষুধের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। এই পরিস্থতিতে এমন ঘোষণায় খুশি অনেকেই। যদিও অনেকের মনে নানা সংশয়ও তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে ক্যানসারের ক্ষেত্রে একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন বহু চিকিৎসক।

ক্যানসার আক্রান্তদের নিয়ে কাজ করা একটি সংস্থার কর্মকর্তা অনুপ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করায় সাধারণ মানুষের উপর তেমন প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা দেখছি না। কারণ দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির একটা অংশ সাধারণত সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে চিকিৎসা করান। এক্ষেত্রে তাঁদের ওষুধের খরচ বহন করতে হয় না। আবার উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের বেশিরভাগেরই ব্যক্তিগত বা কর্মক্ষেত্রের বিমা করানো থাকে। ফলে তাঁদেরও ওযুধের জন্য খরচা হওয়ার কথা নয়। এর বাইরে উচ্চবিত্তদের একটা অংশ নিজেদের খরচে ওষুধ কিনে চিকিৎসা করান। সেই সংখ্যাটা বেশি নয়।”

তবে তাঁর মতে, ওষুধের দাম কমলে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সরকারি খরচ কমবে। এতে সরকারের লাভ হবে।

তবে বিষয়টিকে একেবারে সরলীকরণের পক্ষে নয় সব ক্যানসার রোগীর পরিবার। কারণ সরকারি হাসপাতালে বা বিমা সংস্থার মাধ্যমে চিকিৎসা করালেও অনেক ক্ষেত্রেই রোগীর বাড়ির লোককে বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে হয়। অনেক সময়ই সরকারি হাসপাতালে ওষুধ মেলে না। সে ক্ষেত্রে বাইরে থেকে কিনতে হয়। আবার এমন অনেক ওষুধ রয়েছে যা স্বাস্থসাথী কার্ডের মাধ্যমে পাওয়া যায় না। সেই সমস্ত ওষুধও বাজারে কিনতে হয়।

অঙ্কোলজিস্ট ধীমান দাস বলেন, “এটা ঠিক যে বেশিরভাগ ক্যানসার রোগীকে নিজেদের খরচে ওষুধ কিনে চিকিৎসা করাতে হয় না। কিন্তু বেশ কিছু ওষুধ বিশেষ করে ইমিউনোথেরাপির ক্ষেত্রে মোনোক্লোনাল (monoclonal) জাতীয় অ্যান্টিবায়োটিক বাইরে থেকে কিনতে হয়। এই ধরনের ওষুধের দাম অনেক। এ সব ক্ষেত্রে কিন্তু সুবিধাই হবে।” কেমোথেরাপি থেকে শুরু করে নোডোসিন, নেরোফেনাম জাতীয় ওষুধের ক্ষেত্রেও সুবিধা হবে বলে দাবি করছেন চিকিৎসক থেকে ওষুধ ব্যবসায়ীরা। এক ক্যানসার রোগীর স্ত্রী মলিনা ভট্টাচার্য বলেন, “ক্যানসারের চিকিৎসা খুবই ব্যায় সাপেক্ষ। বিমা সংস্থার মাধ্যমে চিকিৎসা শুরুর আগে আমাদের সমস্ত খরচ বহন করতে হয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বুঝেছি আমদানি শুল্ক কমলে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের লাভই হবে।”

কৃষ্ণনগরে একাধিক সংস্থার ওষুধের স্টকিস্ট গোপীনাথ দে অবশ্য মনে করেন, “আমদানি শুল্কে ছাড় না দিয়ে একেবারে ম্যানুফ্যাকচারং ইউনিট থেকে বা শুধু মাত্র উৎপাদন কর নিলে মানুষের প্রকৃত সুবিধা হবে।” মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক বিনোদকুমার দাস বলেন, “হৃদরোগ, সুগার, প্রেসার, কোলেস্টরল ও থাইরয়েডের মতো ক্রনিক ড্রাগের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের এতে উপকার হল বলেই মনে হচ্ছে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Krishnanagar Central Budget Session 2025

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy