সমর গয়ালি ও তাঁর ছেলে ব্রজগোপাল গয়ালি। —নিজস্ব চিত্র।
যেমন বাবা তেমনই না কি তাঁর ছেলে! নদিয়ার হাঁসখালি ১নম্বর ব্লকের গাজনা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য সমর গয়ালি এবং তাঁর ছেলে ব্রজগোপালকে নিয়ে এমনই মন্তব্য করছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের কেউ কেউ। অধিকাংশই অবশ্য মুখে কুলুপ এঁটেছেন।
গাজনা গ্রাম পঞ্চায়েতের গ্যাঁড়াপোতা পূর্বপাড়ার বাসিন্দা সমর। পঞ্চায়েতের সদস্য হওয়ায় এলাকায় তাঁর প্রভাব-প্রতিপত্তি যথেষ্ট। এমনটাই বলছেন শ্যামনগর এলাকার কেউ কেউ। ছেলের ‘কীর্তি’ প্রকাশ্যে আসতেই আপাতত গা ঢাকা দিয়েছেন সেই সমর। রবিবার হাঁসখালিতে ওই তৃণমূল নেতার বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল দরজা বন্ধ বাইরে থেকে। অ্যাজবেস্টস এবং টিন দিয়ে তৈরি বাড়ি। সামনে উঠোন। সমরের প্রতিবেশীদের এক জন বললেন, ‘‘ওরা দিন কয়েক হল বাড়িতে নেই। হয়তো জামাইয়ের বাড়িতে গিয়েছে।’’ সমরের আরও এক প্রতিবেশী অবশ্য কিছু জানাতেই নারাজ।
গ্যাঁড়াপোতা পূর্বপাড়ার বাসিন্দা এক প্রৌঢ়ার বক্তব্য, ‘‘সোমবার আমি বাড়িতে রান্না করছিলাম। ওদের বাড়িতে পার্টি হচ্ছিল। জানলা দিয়ে দেখতে পেয়েছিলাম। মেয়েটা যখন যায়, আমি তখন দেখতে পেয়েছিলাম। পার্টিতে পাঁচ-সাত জন ছিল। ওরা সকলেই ব্রজগোপালের বন্ধু। মেয়েটা আগে অনেকবার এসেছে এই বাড়িতে। ব্রজগোপাল আর ওই মেয়েটির মধ্যে ভালবাসা ছিল। ছেলের বাবা তো ‘ডন’। আমার ছেলেকে মেরেছে। এই পাড়ায় কেউ মুখ খুলবে না সমরের ভয়ে। কত জন পিস্তলের গুলি খেয়েছে। ছেলের কাছেও পিস্তল থাকে। বাবার কাছেও থাকে।”
স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্রজগোপাল বগুলা শ্রীকৃষ্ণ কলেজের কলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যুবকের কথায়, ‘‘ব্রজগোপাল পড়াশোনা করে বটে। তবে ও মাদকাসক্ত। ওই মেয়েটির সঙ্গে সম্প্রতি ওর সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। ব্রজগোপাল এলাকায় একটি শোরুমে কাজ করত। আর বাইক নিয়ে দাপিয়ে বেড়াত। সবসময় ওকে ঘিরে থাকত ওর সঙ্গীরা। ওর বাবা এলাকায় প্রভাবশালী।’’
যার বিরুদ্ধে এত কিছু অভিযোগ সেই সমর পলাতক। তার ছেলে ব্রজগোপাল গ্রেফতার হয়ে আপাতত পুলিশের হেফাজতে। বাবা-ছেলের ‘কীর্তি’ প্রসঙ্গে প্রতিবেশীদের অভিযোগ নিয়ে পুলিশ কোনও মন্তব্য করতে নারাজ। ‘তদন্ত চলছে’, এই মন্তব্যের বাইরে পুলিশের কেউই কোনও কথা বলছেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy