Advertisement
১৯ মে ২০২৪
Communal harmony

Mahram: কড়া বিধিনিষেধের মধ্যে সম্প্রীতির স্পর্শ ইমামবাড়ায়

দশদিন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ তো বটেই প্রচুর হিন্দুধর্মের মানুষও মোমবাতি ধূপকাঠি ফুল হাতে ইমামবাড়ায় আসেন মানত রাখতে ও প্রার্থনা করতে।

মহরমে সেজে উঠেছে লালবাগের ইমামবাড়া। বৃহস্পতিবার সেখানে প্রণাম করছেন পুণ্যার্থীরা।

মহরমে সেজে উঠেছে লালবাগের ইমামবাড়া। বৃহস্পতিবার সেখানে প্রণাম করছেন পুণ্যার্থীরা। ছবি: মৃন্ময় সরকার

নিজস্ব সংবাদদাতা 
লালবাগ শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০২১ ০৬:৩৮
Share: Save:

প্রতি বছরই মহরমে একই নিয়ম লালবাগের বাসিন্দা সুমিতা সরকারের। সারা দিন নিরামিষ খেয়ে সন্ধ্যা বেলা ভাল কাপড় পড়ে ইমামবাড়াতে গিয়ে মোমবাতি ও ধূপকাঠি দেখিয়ে প্রণাম করে আসা। সুমিতা যতক্ষণে মোমবাতি ধুপকাঠি দেখান ততক্ষণে সুমিতার প্রতিবেশী জেসমিন বিবি মামবাড়ার দালানের সাদাকালো মেঝেয় ইবাদত করে নেন। তারপর সুমিতা জেসমিন দুজনেই ইমামবাড়ায় প্রণাম সেরে বাড়ি ফেরেন।

প্রার্থনা সেরে ইমামবাড়ায় দাঁড়িয়ে সুমিতা বলছেন, ‘‘আমি বিয়ে হয়ে এসে থেকে দেখছি আমার শ্বাশুড়ি এখানে মহররমের দশটা দিন আসতেন। তাঁর সঙ্গেই শুরু আমারও আসা এখন শাশুড়ি নেই। আমি পাশের বাড়ির বান্ধবীর সঙ্গে আসি এখানে মানত করেছিলাম সেটা পূর্ণও হয়েছে।’’

এই ভাবেই বছরের পর বছর ধরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মধ্যে দিয়ে পালিত হয়ে আসছে লালবাগের ইমামবাড়ার মহরম। স্থানীয় সূত্রে খবর, লালবাগের হাজারদুয়ারির সামনের ইমামবাড়া বর্তমানে ভারতীয় পুরাতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণের সম্পত্তি। রাজ্য সরকারের বিচার বিভাগের অধীনে মুর্শিদাবাদ এস্টেটের তত্ত্বাবধানে বছরে মোট ২৩ টি ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করা হয় ইমামবাড়ায়। তবে, সারা বছর ইমামবাড়া খোলা না থাকলেও মহরমের সময় প্রথম মহরম থেকে দশম মহরম পর্যন্ত সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয় ইমামবাড়া। এই দশদিন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ তো বটেই প্রচুর হিন্দুধর্মের মানুষও মোমবাতি ধূপকাঠি ফুল হাতে ইমামবাড়ায় আসেন মানত রাখতে ও প্রার্থনা করতে।

যদিও এ বছর করোনা আবহে স্থানীয় বাসিন্দারা ছাড়া বাইরের মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ রয়েছে। এখনও মহরমের ধর্মীয় যা নিয়ম পালন হয়েছে তা করোনা নিয়ম মেনেই পালন করা হয়েছে বলেই দাবি। ইমামবাড়ার গেটে ব্যবস্থা করা হয়েছে স্যানিটাইজারের। থার্মালগান দিয়ে দেখা হচ্ছে তাপমাত্রাও। এবছর এখনও পর্যন্ত যা জুলুস বের হয়েছে তা কেল্লা নিজামতের মধ্যেই করা হয়েছে। জুলুস অল্প সংখ্যক মানুষ নিয়েই করা হয়েছে বলেই দাবি।

স্থানীয় বাসিন্দা তথা মুর্শিদাবাদ জেলা চেম্বার অব কমার্সের সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরা ছোট থেকেই দেখে আসছি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মধ্যেই মহরম পালিত হয়ে আসছে। সত্যি বলতে আমরা বলি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি দেখতে হলে মুর্শিদাবাদ শহরে আসতে হবে। যেমন মহরমে ইমামবাড়ায় প্রচুর হিন্দুধর্মের মানুষ আসেন প্রার্থনা, মানত করতে। তেমনই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ও দুর্গাপুজোয় মেতে ওঠেন।’’
এদিন মুর্শিদাবাদ এস্টেট ম্যানেজার জয়ন্ত মণ্ডল বলেন, ‘‘প্রতি বছরই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মধ্যেই মহরম পালিত হয়ে আসছে। এই বছর করোনা বিধি মেনেই সমস্তটা করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Communal harmony
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE