Advertisement
E-Paper

বিদ্রোহীরা নির্দলের প্রার্থী, বিব্রত জঙ্গিপুরের সিপিএম

পুরভোটের আগে একের পর বিদ্রোহ। আর তার জেরে রীতিমতো বিব্রত জঙ্গিপুরের সিপিএম নেতৃত্ব। দিনকয়েক আগে সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্যের নিজের ওয়ার্ড (১২ নম্বর) থেকেই ঘটনার শুরু। দল মনোনয়ন না দেওয়ায় জঙ্গিপুর ২ শাখা সম্পাদক তথা সিপিএমের জোনাল কমিটির সদস্য মোহন মাহাতো কংগ্রেসের প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৫ ০০:৩১
জোরকদমে চলছে দেওয়াল লিখন। —নিজস্ব চিত্র।

জোরকদমে চলছে দেওয়াল লিখন। —নিজস্ব চিত্র।

পুরভোটের আগে একের পর বিদ্রোহ। আর তার জেরে রীতিমতো বিব্রত জঙ্গিপুরের সিপিএম নেতৃত্ব।

দিনকয়েক আগে সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্যের নিজের ওয়ার্ড (১২ নম্বর) থেকেই ঘটনার শুরু। দল মনোনয়ন না দেওয়ায় জঙ্গিপুর ২ শাখা সম্পাদক তথা সিপিএমের জোনাল কমিটির সদস্য মোহন মাহাতো কংগ্রেসের প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। এরপরেই ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএমের শাখা সম্পাদক ইন্তেকাব আলম একই কারণে নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। এ বার সেই একই পথে হাঁটলেন দলের আরও দুই শাখা সম্পাদক।

দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ৫ নম্বর ওয়ার্ডটি এ বার মহিলা সংরক্ষিত। এবং সেখানে বামফ্রন্টের শরিক দল আরএসপি-র এক প্রার্থী নির্বাচনে লড়ছেন। কিন্তু জঙ্গিপুরের ফুলবাড়ি এলাকার শাখা সম্পাদক সইফুল্লা শেখ ওই ওয়ার্ডেই দলীয় নেতৃত্বের কথা অমান্য করে তাঁর স্ত্রীকে নির্দল প্রার্থী করেছেন। পাশের ৭ নম্বর ওয়ার্ডেও আর এক শাখা সম্পাদক অলিপ শেখ নিজেই সিপিএম প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্দল হয়ে মনোনয়ন জমা দেন। ২৮ মার্চ, শনিবার মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। এ দিকে শুক্রবার পর্যন্ত দলের তরফে বার বার সইফুল্লা ও অলিপকে মনোনয়ন প্রত্যাহারের কথা বলা হলেও তাঁরা নিজেদের সিদ্ধান্তেই অনড় থাকেন।

জঙ্গিপুর পুরসভায় তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় রয়েছে বামফ্রন্ট। এমনিতেই কংগ্রেসের পাশাপাশি বিজেপি ও তৃণমূল মাথা চাড়া দিয়েছে শহরে। তার উপরে পুরভোটের আগে এই নিয়ে জঙ্গিপুর শহরের একই এলাকার সিপিএমের চার শাখা সম্পাদকের বিদ্রোহে দলীয় নেতারা যেমন অস্বস্তিতে, তেমনি স্থানীয় আরএসপি নেতারাও আবার এর পিছনে ‘গোঁজ’ প্রার্থীর গন্ধ পাচ্ছেন! ৫ ও ১০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে এ বার আরএসপি-র দুই প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। আরএসপির জেলা কমিটির সদস্য জাগ্রত রায় বলেন, “এই বিষয়ে আমরা জেলার সিপিএম নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা আশ্বাস দিয়েছেন, যে সব দলীয় নেতা বামফ্রন্ট প্রার্থীদের বিরোধিতা করবেন, তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সিপিএমের ওই সব নেতাদের বহিষ্কার করা হয়নি। অথচ তাঁরা দিব্বি ওয়ার্ডে ঘুরে ঘুরে প্রচারে নেমে পড়েছেন।”

সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, “বামফ্রন্টের প্রার্থীর বিরুদ্ধে সিপিএমের যে নেতারা নির্দল প্রার্থী হয়েছেন তাঁদের সকলকেই দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” কি বলছেন বিদ্রোহী ওই সিপিএম নেতারা? সইফুল্লা বলছেন, “৫ নম্বর ওয়ার্ডে শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তুলেছি আমরা। শরিক দলের সেখানে কোনও অস্তিত্বই নেই। দলকে তা জানানো সত্ত্বেও শরিক দলকে এ ভাবে আসন ছেড়ে দেওয়ার ঘটনা এলাকার সিপিএম কর্মীরা মেনে নিতে পারেননি বলেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” আর এক শাখা সম্পাদক অলিপ বলছেন, “দলীয় কাউন্সিলার থাকা সত্ত্বেও এই ওয়ার্ডে কোনও উন্নয়ন হয়নি। সেই কারণে এলাকার মানুষের ক্ষোভ রয়েছে। তারপরেও সেই কাউন্সিলরের পরিবার থেকে এ বারও একজনকে প্রার্থী করা হয়েছে। দলের নেতাদের কাছে সব কথা জানিয়েও কোনও ফল হয়নি। তাই এলাকার উন্নয়নের কথা ভেবেই মানুষ আমাকে প্রার্থী করেছেন।”

বহিষ্কারের প্রসঙ্গে ওই দুই নেতার প্রতিক্রিয়া, “দল দলের কাজ করবে। আমরা আমাদের কাজ করব। তাই বলে সাধারণ কর্মীদের প্রতি দলের অবিচার মানতে পারব না।” তাঁরা জানান, দল চালাতে হবে বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে। কর্মীরা সারা বছর লড়াই করবে, পুলিশের হাতে মার খাবে, মিটিং-মিছিল করবে। অথচ দল তাঁদের মর্যাদা দেবে না। এটা চলতে পারে না।

municipal election Raghunathganj CPM CPIM Election Bikas Nanda Mriganka Bhattacharya
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy