Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ধর্নায় বসা প্রেমিকাকে বিয়ে জিন্নাতের

মঙ্গলবার সকালে সংবাদপত্রে মাফুজা খাতুনের প্রেমিক জিন্নাত আলির বাড়ির সামনে ধর্নায় বসার খবর প্রকাশিত হয়। এর পরেই এলাকায় মানুষ নড়েচড়ে বসেন।

বিয়ের পরে জিন্নাত আলি ও মাফিজা খাতুন। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

বিয়ের পরে জিন্নাত আলি ও মাফিজা খাতুন। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

সন্দীপ পাল
কালীগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৯ ০২:৩৫
Share: Save:

প্রেমিককে ফিরে পেতে তাঁর বাড়ির দরজায় ধর্না দিয়েছিলেন তরুণী। পণ করেছিলেন, বিয়ে না হওয়া অবধি উঠবেন না। রাতভর বসেছিলেন প্রেমিকের বাড়ির দরজায়। শেষে গ্রামের লোকেরাই দায়িত্ব নিয়ে ছেলেটিকে বুঝিয়ে বিয়েতে রাজি করান। মঙ্গলবার মাফুজা এবং জিন্নাতের চার হাত এক হল।

ঘটনাটি কালীগঞ্জ ব্লকের রাধাকান্তপুরের পূর্বপাড়ার। মঙ্গলবার সকালে সংবাদপত্রে মাফুজা খাতুনের প্রেমিক জিন্নাত আলির বাড়ির সামনে ধর্নায় বসার খবর প্রকাশিত হয়। এর পরেই এলাকায় মানুষ নড়েচড়ে বসেন। মাফুজাকে দেখার জন্য গ্রামে মানুষের ভিড় জমে যায়। একটা সময়ে গ্রামের মানুষই একজোট হয়ে জিন্নাতের বাড়ির বন্ধ দরজার তালা ভাঙেন। এবং মাফুজাকে জিন্নাতের বাড়ির ভিতরে নিয়ে যান। ছেলেটি অবশ্য সোমবার সকাল থেকেই বেপাত্তা ছিলেন।

এই ঘটনার পরে মাফুজার এলাকার লোকজন-সহ মিরা ২ নম্বর পঞ্চায়েত প্রধান সুবীর হালদার মাফুজার সঙ্গে দেখা করতে রাধাকান্তপুরে আসেন। মাফুজাকে অনেক বোঝানোর পরেও তাঁর অবস্থানে অনড় ছিলেন। মাফুজার একটাই দাবি ছিল— তিনি জিন্নাতকে বিয়ে করবেন। এর পর পঞ্চায়েত প্রধান সুবীর হালদার গ্রামের লোকজনের সঙ্গে আলোচনা করে ছেলেটিকে বাড়িতে হাজির করান।

এ দিন সর্বসমক্ষে কথা বলার সময়ে জিন্নাত তাঁদের সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন। এবং মাফুজাকে বিয়ে করতেও রাজি হন। এর পরেই দুই বাড়ির সম্মতিতে পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়িতে মাফুজা ও জিন্নাতকে হাজির করানো হয়। ইসলাম রীতি মেনে ও সরকারি ভাবে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে দু’জনের বিয়ে সম্পন্ন হয়। জিন্নাতের বাড়ি থেকে উপস্থিত ছিলেন তাঁর নানা।

এ দিন বিয়ের পরে মাফুজা বলেন, ‘‘আমি খুব খুশি। অনেক কষ্ট করে ওকে পেয়েছি। আর হারাতে চাই না।’’ এই ঘটনায় মাফুজার মতোই খুশি এলাকার মানুষজন। বিয়ের পর দু’জনে আপাতত মাফুজার বাড়িতেই রয়েছেন।

মিরা ২ নম্বর পঞ্চায়েতের প্রধান সুবীর হালদার বলেন, ‘‘এই ভাবে একটি মেয়ে সারা রাত ধরে বাড়ির বাইরে বসেছিল শুনে খারাপ লেগেছিল। মানবিকতার খাতিরেই ওঁদের বিয়ের ব্যবস্থা করি।’’

কিন্তু এই ভাবে ধর্না দিয়ে বিয়েতে রাজি করানো সম্পর্কের পরিণতি কি শেষ অবধি ভাল হবে? এর উত্তরে পঞ্চায়েত প্রধানের জবাব, ‘‘দু’জনের মত ছিল বলেই তো বিয়েটা হয়েছে। কেউ তো আর জোর করেনি।’’

জিন্নাত যদিও এই বিয়ে নিয়ে একটি কথাও বলতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kaliganj
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE