হাজারদুয়ারির সামনে পর্যটকদের লম্বা লাইন। ছবি: মৃন্ময় সরকার
গত শনিবারেরই কথা। পরিবারকে নিয়ে লালবাগের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ঘুরতে এসেছিলেন বর্ধমানের বাসিন্দা স্বপ্নদীপ মুখোপাধ্যায়। শহরের অন্য পর্যটনকেন্দ্রগুলো ঘুরে তিনি যখন হাজারদুয়ারি পৌঁছলেন তখন দুপুর গড়িয়েছে। হাজারদুয়ারি প্যালেস ও মিউজিয়ামের ভিআইপি গেটের সামনে থাকা টিকিট স্ক্যান করার বারকোড স্ক্যান করতেই অবাক তিনি। টিকিট নেই। কাজেই হতাশ হয়েই পরিবার নিয়ে হাজারদুয়ারি কে বাইরে থেকে দেখেই ঘুরে যেতে হয়েছে তাকে। যা নিয়ে তিনি বলছেন, ‘‘এমন একটা সৌধ যার কারণে মুর্শিদাবাদে আসা, আর সেটাই দেখতে পেলাম না। এত খরচ করে এসে কী লাভ হল? টিকিট সংখ্যা বারানো উচিত। আমার মত কত পর্যটক এই ভাবে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছে।’’
হাজারদুয়ারি দেখতে এসে প্রায় দিনই এমন অভিজ্ঞতা হচ্ছে পর্যটকদের। মিলছে না টিকিট। আর যার জেরে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে পর্যটকদের মধ্যে।
সূত্রের খবর, করোনা ভাইরাসকে ছড়িয়ে পড়া রুখতে লকডাউন ঘোষণার আগেই ভারতীয় পুরাতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণ তাদের অধীনে থাকা সমস্ত পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেই মত বন্ধ করে দেওয়া হয় হাজারদুয়ারিও।
তারপর লকডাউনের পরে হাজারদুয়ারি খোলা হলেও নিয়ম করা হয় অনলাইনে টিকিট কাটতে হবে পর্যটকদের এবং দিনে দু'হাজারের বেশি টিকিট মিলবে না। যদিও, সারা দেশ জুড়ে ভারতীয় পুরাতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণের অধীনে থাকা সমস্ত পর্যটন কেন্দ্র গুলোরই টিকিট কাটার জন্য একই নিয়ম রয়েছে এই মুহূর্তে। কোভিড বিধি মানতেই এমন বলে, দাবি হাজারদুয়ারি কর্তৃপক্ষের।
তবে পর্যটক মরসুমে লালবাগে ভিড় বাড়ছে পর্যটকদের। কিন্তু টিকিট সংখ্যা এখনও বাড়েনি হাজারদুয়ারি মিউজিয়ামের কাজেই টিকিট না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরতে হচ্ছে পর্যটকদের যা নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে সকলের মধ্যে। আবার অনেকে প্রশ্ন করছেন।
সামনে ২৫ ডিসেম্বর, ১ জানুয়ারির মত বিশেষ দিন গুলি রয়েছে। ওই দিনগুলোতে পর্যটকদের ভিড়ে তিল ধারনের জায়গা থাকে না। ওই দিন গুলোয় কি হবে ওই দিন গুলোয়ও কি পর্যটকদের হতাশ হয়ে ফিরতে হবে।
এদিন মুর্শিদাবাদ সিটি ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক তথা মুর্শিদাবাদ হেরিটেজ অ্যান্ড কালচারাল সোসাইটির সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘হাজারদুয়ারি টিকিট সংখ্যা বাড়ানোর বিষয় নিয়ে আমরা লড়ছি। কারণ এইভাবে প্রায় দিন পর্যটক হতাশ হয়ে ঘুরে যাচ্ছে এমনকি অনলাইন টিকিট হওয়ায় অনেক পর্যটক টিকিট কাটতে না পেরে হতাশ হয়ে ঘুরে যাচ্ছেন।’’ এদিন মুর্শিদাবাদ টাঙ্গা ইউনিয়নের সম্পাদক মনু শেখ বলেন, "আমাদের দাবি হাজারদুয়ারি টিকিট সংখ্যা আরও বাড়ানো হোক এই ভাবে প্রতিদিন পর্যটকরা হতাশ হয়ে ঘুরে যাচ্ছে। আমরা এই নিয়ে হাজারদুয়ারি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েওছি।"
এবিষয়ে এদিন হাজারদুয়ারি প্যালেস ও মিউজিয়ামের আধিকারিক গৌতম হালদার বলেন, ‘‘মিউজিয়ামের ভেতর সামাজিক দুরত্ব মানতেই টিকিট সংখ্যা এখনও দু'হাজার রয়েছে। টিকিট সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy