Advertisement
E-Paper

প্রেসক্রিপশনে পর পর চারটি দাগ! রোগীর অভিযোগ, ‘বিশেষ কারণ’ রয়েছে, চিকিৎসক মানলেন ভুল

চিকিৎসক জানিয়েছেন, হাসপাতালে রোগী দেখার চাপ থাকায় এ ভাবে লেখা হয়ে গিয়েছে। হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, চিকিৎসক ভুল স্বীকার করেছেন।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২৫ ২২:২২
কান্দি মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকের লেখা সেই প্রেসক্রিপশন।

কান্দি মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকের লেখা সেই প্রেসক্রিপশন। — নিজস্ব চিত্র।

পরপর ‘চারটি রেখা’! আদতে তা চারটি রেখা নয়, প্রেসক্রিপশনে চিকিৎসকের পরামর্শের চারটি ওষুধের নাম। অভিযোগ, কান্দি মহকুমা হাসপাতালের এক চিকিৎসকের লেখা ওই প্রেসক্রিপশন দেখে ওষুধের নাম চিহ্নিত করতে পারেননি কেউ। প্রেসক্রিপশনের একটি ছবি সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। রোগীর অভিযোগ, এ ভাবে প্রেসক্রিপশন লেখান নেপথ্যে ‘বিশেষ’ উদ্দেশ্য রয়েছে। চিকিৎসক জানিয়েছেন, হাসপাতালে রোগী দেখার চাপ থাকায় এ ভাবে লেখা হয়ে গিয়েছে। হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, চিকিৎসক ভুল স্বীকার করেছেন।

গত ১৭ অক্টোবর ওই হাসপাতালের ওপিডি বিভাগের ১৮ নম্বর ঘরে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ হিসেবে হাজির ছিলেন চিকিৎসক সুমিত মণ্ডল এবং অভীক দাস। রোগীদের একাংশের অভিযোগ, নির্দিষ্ট দোকান থেকে তাঁদের ওষুধ কিনতে বাধ্য করার জন্যই ‘বিশেষ ভাবে’ লেখা হয়েছে প্রেসক্রিপশন। চিকিৎসক যদিও জানিয়েছে, অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে গিয়ে এই বিপত্তি।

সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে কান্দি মহাকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকের লেখা ওই প্রেসক্রিপশন প্রকাশিত হয়েছে। যাঁর প্রেসক্রিপশন, সেই রোগী নিজের নাম প্রকাশ করতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘একটি নির্দিষ্ট দোকান ছাড়া আর কোথাও এই প্রেসক্রিপশন পড়াতে পারিনি। কোনও অসাধু উদ্দেশ্য না থাকলে কেউ এ ভাবে প্রেসক্রিপশন লেখেন না। এর পিছনে লুকিয়ে রয়েছে চিকিৎসকের বৃহত্তর স্বার্থ।’’

পরিচয় গোপন রেখে ওই হাসপাতালে এক কর্মী বলেন, ‘‘শুধু কোড ল্যাঙ্গুয়েজে প্রেসক্রিপশন করা নয়, অনামী ও ভুয়ো কোম্পানির ওষুধ প্রেসক্রিপশন করে মোটা অঙ্কের কমিশন নেন চিকিৎসকেরা।’’

চিকিৎসক অভীক বলেন, ‘‘ওই দিন রোগীকে বাইরে থেকে কোনও ওষুধ কিনতে হয়নি। হাসপাতাল থেকেই দেওয়া হয়েছে। আমার পাশেই ফার্মাসিস্ট ছিলেন। তাই কোনও পরিষেবা ব্যাহত হয়নি। আসলে রোগী দেখার চাপ থাকে তো। তাই সব সময় হাতের লেখা ভাল হয় না।’’ হাসপাতাল সুপার রাজেশনাথ সাহা বলেন, ‘‘ওই চিকিৎসককে বিষয়টি নিয়ে আগে কয়েক বার সতর্ক করা হয়েছিল। এমনকি, লিখিত নোটিসও দেওয়া হয়েছিল। তবে এ দিন তিনি ভুল স্বীকার করে বলেছেন, ভবিষ্যতে এমন আর হবে না। এ বার থেকে ক্যাপিট্যাল লেটারে ওষুধের নাম লিখবেন।’’ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকার বলেন, ‘‘চিকিৎসকদের বলব, আপনারা প্রেসক্রিপশন লেখার সময় আরও সতর্ক ও আন্তরিক হন।’’

এর আগে পঞ্জাব হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়ে জানিয়েছিল, চিকিৎসকদের এমন ভাবে প্রেসক্রিপশন লিখতে হবে, যাতে রোগীরা তা বুঝতে পারেন। স্পষ্ট হাতের লেখায় রোগীকে প্রেসক্রিপশন দেওয়া বাধ্যতামূলক। হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, প্রয়োজনে ইংরেজিতে বড় হাতের অক্ষরে (ক্যাপিটাল) লেখা হোক বা টাইপ করে দেওয়া হোক প্রেসক্রিপশন। কারণ, তাঁর কী চিকিৎসা হচ্ছে, তা জানার অধিকার রয়েছে রোগীরও। হাতের লেখা নিয়ে চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য জাতীয় মেডিক্যাল কমিশনকে (এনএমসি) নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট।

Prescription Handwritng
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy