Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Snacks

ফুলুরি বিক্রি করে সংসার টানছে রিপন

হরিহরপাড়ার প্রতাপপুর গ্রামের রিপন রুকুনপুর হাইস্কুলে পড়ে। দাদার সবুজসাথী প্রকল্পে পাওয়া সাইকেলে চড়ে দিন ভর ভবানীপুর, পিরতলা, শীপুর, রুকুনপুর এলাকার ঘুরে ঘুরে সাত-আট কেজি ফুলুরি, জিলিপি বিক্রি করছে রিপন।

সাইকেলে রিপন। নিজস্ব চিত্র

সাইকেলে রিপন। নিজস্ব চিত্র

মফিদুল ইসলাম
হরিহরপাড়া শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২০ ০২:৩৮
Share: Save:

যা খাবার জন্য তারই বায়না করার কথা, তাই বিক্রি করতে রোদে-বৃষ্টিতে গ্রামে গ্রামে ঘুরছে বছর তেরোর রিপন শাহ। করোনা আবহে বন্ধ স্কুল। স্মার্টফোন দূর অস্ত্, দু’বেলা খাবারের সংস্থানই নেই। বাবার কাজ নেই। ফলে সংসারের জন্য দু’বেলা ডাল ভাতের জোগাড় করতে গ্রামে গ্রামে ফুলুরি, ঝুরিভাজা, ঝালবড়া, জিলিপি বিক্রি করছে ক্লাস সিক্সের পড়ুয়া রিপন।

হরিহরপাড়ার প্রতাপপুর গ্রামের রিপন রুকুনপুর হাইস্কুলে পড়ে। বাবা মোজাম্মেল শাহ কেরলে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। লকডাউনের সময় কাজ হারিয়ে মাস পাঁচেক আগে তিনি বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু এলাকায় তেমন কাজ নেই। ফলে পাঁচ জনের সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছিলেন মোজাম্মেল। টানা কয়েক মাস বসে খাওয়ায় মাথার উপর চড়ছিল ঋণের বোঝা। মাস দুয়েক আগে বাড়িতেই ফুলুরি, ঝুরি, জিলিপি ভাজা শুরু করেন মোজাম্মেল। কিন্তু বিক্রিবাটা তেমন ছিল না। রিপন তখন এগিয়ে আসে। দাদার সবুজসাথী প্রকল্পে পাওয়া সাইকেলে চড়ে দিন ভর ভবানীপুর, পিরতলা, শীপুর, রুকুনপুর এলাকার ঘুরে ঘুরে সাত-আট কেজি ফুলুরি, জিলিপি বিক্রি করছে রিপন। পাটের বিনিময়েও চলছে বিকিকিনি। দিন শেষে গড়ে দু - আড়াইশো টাকা রোজগার করছে সে। সংসার চলার পাশাপাশি পরিশোধ হচ্ছে ঋণও।

মোজাম্মেল বলেন, ‘‘ছেলে এগিয়ে আসায় স্বস্তি পেয়েছি।’’ মা দোলন জানান, ‘‘ঋণের বোঝাও কমছে।’’ রিপনও বলছে, ‘‘এই তো ক'মাস, আব্বা কেরলে গেলে আর ফেরির কাজ করব না। পড়াশোনাটাই করব।’’ রিপনের স্কুলের প্রধান শিক্ষক উত্তম দাস বলেন, ‘‘ও যাতে স্কুল ছুট না হয়ে পড়ে, সেদিকে আমরাও নজর রাখব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

School Student Snacks
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE