নিজের দেহরক্ষীকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা তথা প্রাক্তন মাওবাদী ‘স্কোয়াড লিডার’ সেজাজুল হক শাহ মিঠুর জামিনের আবেদন খারিজ করে দিল আদালত। মিঠু বর্তমানে করিমপুর ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি। শনিবার তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে। আপাতত জেলেই থাকতে হবে তাঁকে।
নিজের দেহরক্ষীর উপর গুলি চালানোর অভিযোগে গত ১৯ মে মিঠুকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ঘটনায় তৃণমূল নেতার পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই মেয়াদ শেষ হয়েছে শনিবার। শনিবারই তাঁকে তেহট্ট মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। সেখানে ধৃত নেতার আরও ন’দিনের হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। আগামী ২ জুন ওই মামলায় পরবর্তী শুনানি।
তবে এখনও নিজের দাবিতেই অনড় মিঠু। তাঁর মতে, দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় তাঁকে পরিকল্পিত ভাবে ফাঁসানো হয়েছে। শনিবারও আদালতে ঢোকার আগে মিঠু বলেন, ‘‘থানারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিকের সরকারকে রাজস্ব না দিয়ে মাটি মাফিয়াদের মাটি কাটার ছাড়পত্র দেওয়ার বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলাম। তাই আমার সঙ্গে থাকা দেহরক্ষীকে দিয়ে আমাকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তবে বিচারব্যবস্থার প্রতি আমার আস্থা রয়েছে, সরকারের উপরেও আস্থা আছে। আমি নিশ্চিত যে, ন্যায়বিচার পাবই।’’
আরও পড়ুন:
ঘটনার সূত্রপাত গত ১৮ মে। সে দিন রাত্রে নদিয়ার থানার পাড়া এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। গভীর রাতে ঘুমোতে যাওয়া নিয়ে নিরাপত্তারক্ষী তথা রাজ্য পুলিশের কনস্টেবল জাহাঙ্গির আলমের সঙ্গে বচসা বেধে যায় মিঠু শাহের। তার জেরে সটান নিরাপত্তারক্ষীকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে বসেন তিনি! তবে অল্পের জন্য গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় প্রাণে বেঁচে যান জাহাঙ্গির। এর পরেই একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র-সহ ওই নেতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে খবর, কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন মিঠু। তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহার ছায়াসঙ্গীও ছিলেন। বিধায়কের মৃত্যুর পর থেকেই মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। গত ১৮ মে বিধায়কের স্মরণসভা শেষে মিঠু একা একাই অস্বাভাবিক পরিমাণে মদ্যপান করেছিলেন। তার পর মত্ত অবস্থায় আচমকা একটি এক নলা দেশি পিস্তল বার করে নিরাপত্তারক্ষীকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে দেন তিনি। খবর পেয়ে এলাকায় পৌঁছে একটি এক নলা পিস্তল, দু’টি সেভেন ও নাইন এমএম পিস্তল এবং ৮ রাউন্ড কার্তুজ-সহ নেতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। খুনের চেষ্টা এবং অস্ত্র আইন-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়। ঘটনায় এখনও তদন্ত চলছে।